রাজ্যপালের ভূমিকা নিয়ে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের বিরোধী দলের মুখ্যমন্ত্রীদের বৈঠকে আহ্বান জানিয়েছিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মমতার এ আহ্বানে সাড়া দিয়ে তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী স্ট্যালিন জানিয়েছেন, দিল্লির বাইরে কোথাও তারা এই বৈঠক করবেন।
মহারাষ্ট্র সরকারের পক্ষ থেকে বুধবার জানানো হয়, মমতার ডাকা বৈঠক হবে ১০ মার্চের পর।
কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের মনোনীত রাজ্যপাল বিরোধী দলের রাজ্য সরকারের কাজে সংবিধান বহির্ভূতভাবে হস্তক্ষেপ করছেন বলে তৃণমূল কংগ্রেস, কংগ্রেস, ডিএমকে ও অন্যদের সংসদে সরব হতে দেখা গেছে।
পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ের ভূমিকা নিয়ে তৃণমূলের পক্ষ থেকে রাজ্যসভায় স্বতন্ত্র প্রস্তাব আনা হয়।
সাংবিধানিক সীমা লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর কাছে ধনকড়ের অপসারণের দাবি জানানো হয়।
তামিলনাড়ু, মহারাষ্ট্র ও তেলেঙ্গানা সরকারও তাদের রাজ্যপালের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।
রাজ্যপালদের ভূমিকা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীদের বৈঠকের আহ্বান জানান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি এ ব্যাপারে ফোনে কথা বলেন তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্ট্যালিনের সঙ্গে। তিনি মমতার আহ্বানে সাড়া দিয়েছেন জানিয়ে টুইটারে লেখেন, ‘খুব শিগগির দিল্লির বাইরে বৈঠক করবেন।’
ভারতে রাজ্যপাল নিয়ে সংঘাত নতুন কিছু নয়। ১৯৬৭ সালের ২১ নভেম্বর অজয় মুখোপাধ্যায়ের যুক্তফ্রন্ট সরকারকে বরখাস্ত করেছিলেন তৎকালীন কেন্দ্রের কংগ্রেস সরকারের মনোনীত রাজ্যপাল ধর্ম বীর। যা নিয়ে দেশজুড়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছিল। পরে ১৯৬৯ সালে পশ্চিমবঙ্গে যুক্তফ্রন্ট সরকার ফিরে এলে রাজ্যপাল ধর্ম বীরের সঙ্গে রাজ্য সরকারের সংঘাত চরমে ওঠে।
তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর কাছে ধর্ম বীরকে সরানোর দাবি ওঠে। তিনি তা মেনে নিয়ে ধবনকে রাজ্যপাল হিসেবে পশ্চিমবঙ্গে পাঠান।
২০১১ সালের এম কে নারায়ণের সঙ্গে রাজ্যের তৃণমূল সরকারের বিবাদ বাধে। রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠীর সঙ্গেও বিভিন্ন সময় সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে তৃণমূল সরকার। আর এখন কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের মনোনীত রাজ্যপাল ধনকড়ের সঙ্গে তৃণমূল সরকারের বিরোধ চরমে উঠেছে।