বাবার জন্মদিনের অনুষ্ঠানের জন্য ফুল সময়মতো না ফোটায় গ্রিনহাউজের এক ব্যবস্থাপককে কঠিন সাজা দিয়েছেন উত্তর কোরিয়ার শাসক কিম জং উন। চাকরিচ্যুত করে তাকে পাঠানো হয়েছে লেবার ক্যাম্পে। সেখানে তাকে থাকতে হবে ছয় মাস।
ডেইলি মেইলের খবরে বলা হয়, কিম জং উনের বাবা কিম জং ইলের জন্মদিন ছিল ১৬ ফেব্রুয়ারি। দেশটির বাসিন্দাদের কাছে এদিন ‘ডে অফ দ্য শাইনিং স্টার’ নামে পরিচিত। প্রতি বছর জাঁকজমকভাবে উদযাপিত হয় দিনটি।
এবারের আয়োজনের মূল আকর্ষণ ছিল বেগোনিয়াস গোত্রের ‘কিমজঙ্গিলিয়া’ নামের এক ধরনের ফুল। কিম জং উনের বাবার নামেই এই ফুলের নামকরণ হয়েছিল।
গ্রিনহাউজে কিমজঙ্গিলিয়া ও কিমিলসুঙ্গিয়া নামের এই দুই ধরনের ফুল ফুটানোর দায়িত্বে ছিলেন সামসু কাউন্টির হান নামে ৫০ বছরের এক ব্যক্তি। কিন্তু এবার সময়মতো ফোটনি কিমজঙ্গিলিয়া ফুল। আর এতেই ভীষণ চটেছেন উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উন। হানকে চাকরিচ্যুত করে লেবার ক্যাম্পে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন কিম উন।
কিমজঙ্গিলিয়া চাষের জন্য গ্রিনহাউজে তাপমাত্রা ও আর্দ্রতার নিয়ন্ত্রণ করতে হয় অতি সতর্কতার সঙ্গে। হানের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি তার দায়িত্ব ঠিকমতো পালন করেননি। তাই সময়মতো ফুল ফোটেনি।
প্রয়াত কিম জং ইল। ছবি: সংগৃহীত
অভিযোগ মানতে নারাজ হান। তার দাবি, মাত্র এক মাস আগে তাকে অর্ডার দেয়া হয়েছিল। তিনি কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছিলেন, এই সময়ে সম্ভব না। এ ছাড়া অর্থনৈতিক মন্দায় ঝুঁকতে থাকা পিয়ংইয়ং গ্রিনহাউজে প্রয়োজনমতো জ্বালানি সরবরাহ করতে পারেনি। উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করতে না পারায় ফুল সময়মতো ফোটেনি।
হানের পাশাপাশি সাজা পেয়েছেন আরও দুজন। চোই নামে ৪০ বছরের একজন ছিলেন গ্রিনহাউজের বয়লারের দায়িত্বে। তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার দায়ে তাকে লেবার ক্যাম্পে থাকতে হবে তিন মাস।
- আরও পড়ুন: উত্তর কোরিয়ায় ১১ দিনের জন্য হাসি নিষিদ্ধ
এ ছাড়া কিম নামে আরেক মালীকে প্রতিদিন পার্টি কমিটির কাছে ফুলের অবস্থা সম্পর্কে জানাতে বলা হয়েছে। সেই সঙ্গে রোজ নিজের নিন্দাও লিখে আনতে হবে তাকে।
জাপানের উদ্ভিদবিজ্ঞানী কামো মোটোতেরু কিমজঙ্গিলিয়া ফুলটি উদ্ভাবন করেছিলেন। তিনি উত্তর কোরিয়ার প্রয়াত নেতাকে সম্মান জানাতে ২০ বছর গবেষণা করে ফুলের নতুন জাতটি উদ্ভাবন করেন। এটি মূলত দক্ষিণ আমেরিকার টিউবারাস বেগোনিয়ার একটি হাইব্রিড জাত।
কিমজঙ্গিলিয়া ফুল। ছবি: সংগৃহীত
এর আগে বাবা কিম জং ইলের দশম মৃত্যুবার্ষিকী ঘিরে নানা বিধিনিষেধ আরোপ করেন নেতা কিম জং উন। টানা ১১ দিন মদপান, কেনাকাটা, এমনকি হাসির ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিলেন তিনি। এ সময়ে উদযাপন করা যায়নি জন্মদিন, শব্দ করে কান্নায়ও ছিল নিষেধ।