বাতাসে ২০ মিনিট ভেসে থাকলে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ক্ষমতা ৯০ শতাংশ কমে যায়। আর এটি সিংহভাগ ক্ষমতা হারায় প্রথম ৫ মিনিটে।
ইংল্যান্ডের ইউনিভার্সিটি অব ব্রিস্টল-এর অ্যারোসল রিসার্চ সেন্টার সম্প্রতি এমনটা দাবি করেছে। সংক্রমণ থেকে বাঁচতে তাই সামাজিক দূরত্ব ও মাস্ক ব্যবহারে জোর দিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাতাসে সংক্রমণ ক্ষমতা কমে গেলেও, এ অবস্থায় ভাইরাসটি বেঁচে থাকে অন্তত ৩ ঘণ্টা।
গবেষক দলের প্রধান ও ইউনিভার্সিটি অব ব্রিস্টলের অ্যারোসল রিসার্চ সেন্টারের পরিচালক অধ্যাপক জোনাথন রিড বলেন, ‘করোনা প্রশ্নে বায়ু চলাচল আছে এমন বাসস্থানের দিকে জোর দিচ্ছেন অনেকে। তাদের বিশ্বাস, করোনা বায়ুবাহিত; আলো-বাতাস চলাচল কম এমন জায়গায় ভাইরাসটি বেশি ছড়ায়।
বিষয়টি যে একেবারে ভুল তা কিন্তু নয়। তবে সংক্রমণের ঝুঁকি তখনই বেশি থাকবে, যখন আপনি আক্রান্ত ব্যক্তির কাছাকাছি থাকবেন। আপনি যত দূরে থাকবেন তত নিরাপদ থাকবেন।’
গবেষণা প্রক্রিয়া
বাতাসে ভাইরাসটি কতক্ষণ বাঁচে, তা জানতে বিশেষ একটি পরীক্ষা চালিয়েছেন গবেষকরা। গোল্ডবার্ড নামে একটি পরিত্যক্ত জাহাজে বদ্ধ পরিবেশে করোনার ভাইরাস স্প্রে করেন তারা। তারপর জাহাজটিকে দোলানো হয়, যেন ড্রপলেটের ভাইরাস ভালো করে ছড়িয়ে পড়তে পারে।
এই পরীক্ষায় গবেষকরা দেখেন, ক্ষমতা হারাতে হারাতে তিন ঘণ্টা পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে করোনার এই নতুন ভাইরাসটি। যদিও হাঁচি-কাশির সঙ্গে বের হওয়া ড্রপলেটে এই ভাইরাসের কী অবস্থা হয় তা জানা যায়নি।
পরবর্তীতে গবেষকরা একটি যন্ত্রের সাহায্যে অতিক্ষুদ্র ও ভাইরাসবাহী কণা সংগ্রহ করে তা দুটি বৈদ্যুতিক বৃত্তের ভেতর ৫ সেকেন্ড থেকে ২০ মিনিট পর্যন্ত ভাসতে দেন। এ সময় তাপমাত্রা, আর্দ্রতা এবং আল্ট্রা ভায়োলেট রশ্মির পরিমাণ একই রাখা হয়।
জোনাথন রিড বলেন, ‘এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আমরা এটা বুঝতে সক্ষম হয়েছি যে হাঁচির সঙ্গে বের হওয়া ড্রপলেট কীভাবে ভাইরাস ছড়াতে সাহায্য করে।’
এই পরীক্ষায় থেকে এটা বোঝা যায়, ভাইরাসের কণাগুলো ফুসফুসের তুলনামূলক আর্দ্র ও কার্বন-ডাই অক্সাইডসমৃদ্ধ এলাকা থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করে। এক পর্যায়ে ভাইরাসগুলোতে থাকা পানি দ্রুত শুকিয়ে যেতে থাকে। কার্বন-ডাই-অক্সাইডের নিম্নস্তরে চলে আসে। আর এই সময়ে দ্রুত বেড়ে যায় হাইড্রোজেনের মাত্রা। আর এসব ঘটনার মধ্য দিয়ে ক্ষমতা হারায় করোনাভাইরাস।