বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

অ্যাসিড নিক্ষেপকারীকে বিয়ে করায় তুরস্কে বিতর্ক

  •    
  • ২৫ ডিসেম্বর, ২০২১ ২০:৪৮

স্থানীয় গণমাধ্যমকে বারফিনের ক্ষুব্ধ বাবা বলেছেন, ‘সে আমাদের না জানিয়েই বিয়ে করেছে। বছরের পর বছর ধরে তার জন্য আমরা সংগ্রাম করেছি। এই সবই এখন বৃথা হয়ে গেছে।’

যিনি অ্যাসিড নিক্ষেপ করে মুখ বিকৃত ও চোখ অন্ধ করে দিয়েছেন, তাকেই বিয়ে করে বিতর্কের জন্ম দিলেন এক তুর্কী কন্যা।

শনিবার নিউইয়র্ক পোস্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, চলতি মাসেই ২০ বছর বয়সী তুর্কী নারী বারফিন ওজেক ২৩ বছরের কাসিম ওজাক সেলটিককে বিয়ে করেছেন। দুই বছর আগে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ের এক পর্যায়ে বারফিনের মুখে অ্যাসিড ছুড়ে মেরেছিলেন কাসিম।

অ্যাসিড নিক্ষেপের আগে কাসিম ও বারফিনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। কিন্তু সেই প্রেম একসময় ভেঙে যাওয়ার উপক্রম হয়। তাই তীব্র ক্ষোভে বারফিনের মুখে অ্যাসিড নিক্ষেপের সময় কাসিম চিৎকার করে বলেছিলেন, ‘যদি আমি তোমাকে না পাই, তবে কেউ পাবে না।’

এ ঘটনার পরই প্রায় অন্ধ বারফিন পুলিশের কাছে অভিযোগ করলে গ্রেপ্তার করা হয় কাসিমকে। কিন্তু জেলে থাকা অবস্থায়ই বিভিন্ন বারফিনের কাছে আবেগপূর্ণ চিঠি পাঠাতে থাকেন কাসিম। তিনি অনুশোচনা প্রকাশ করে বারফিনের ক্ষমা প্রার্থনা করেন।

অবশেষে মন নরম হয় বারফিনের। তিনি অভিযোগ তুলে নিতে সম্মত হন।

অ্যাসিড নিক্ষেপের আগে বারফিন

কাসিমের মুক্তির আবেদন জানিয়ে কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো এক চিঠিতে তিনি লিখেন, ‘আমরা একে অপরের সঙ্গে অসংখ্য চিঠি চালাচালি করেছি। তার কাছে আমি নিজেকে সঁপে দিয়েছি। আমি তাকে খুব ভালোবাসি, সেও আমাকে খুব ভালোবাসে।’

অ্যাসিড নিক্ষেপ করে তার মুখ বিকৃত করে দেয়ার অপরাধে সাড়ে ১৩ বছরের জেল হয়েছিল কাসিমের। বারফিনের আবেদন ও মহামারি পরিস্থিতির জন্য পরীক্ষামূলকভাবে সম্প্রতি জেল থেকে কাসিমকে মুক্তি দেয়া হয়েছে।

কিন্তু এ ঘটনায় এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছেন বারফিন। কাসিম মুক্ত হলেও তুরস্কের গণমানুষের কাছে তিনি এখনও দোষী। তাই তার মুক্তির প্রতিবাদে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ক্ষোভ প্রকাশ শুরু করেন অনেকেই।

তুরস্কের মানুষের এই হতাশা আরও বাড়ে যখন জেল থেকে ছাড়া পেয়ে বারফিনকে বিয়ের প্রস্তাব দেন কাসিম এবং এই প্রস্তাবে রাজি হয়ে যান বারফিনও।

চলতি মাসে তারা বিয়েও করেছেন। একটি ছবিতে দেখা যায় বিয়ের চুক্তিপত্রে সই করছেন বিকৃত চেহারার বারফিন আর পাশে বসেই তা দেখছে তার হাস্যেজ্জ্বল স্বামী।

বিয়ের চুক্তিপত্রে সই করছেন বারফিন, পাশেই কাসিম

এ ঘটনায় স্তব্ধ হয়ে গেছেন বারফিনের বাবা। অ্যাসিড নিক্ষেপকারীর সঙ্গে মেয়ের বিয়েকে কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না। মেয়ের বিয়ের অনুষ্ঠানেও যাননি তিনি।

স্থানীয় গণমাধ্যমকে বারফিনের ক্ষুব্ধ বাবা বলেছেন, ‘সে আমাদের না জানিয়েই বিয়ে করেছে। বছরের পর বছর ধরে তার জন্য আমরা সংগ্রাম করেছি। এই সবই এখন বৃথা হয়ে গেছে।’

তবে এক আইনজীবি জানিয়েছেন, এই সময়টি যদি মহামারির না হতো তবে কাসিমকে নিশ্চিতভাবে এখনও জেলেই থাকতে হতো। বলা যায়, সে এখনও জেলেই আছে। এটা তার এক উন্মুক্ত জেল।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও সামাজিকভাবে তীব্র সমালোচনা মুখোমুখি হলেও এসব বিষয়ে নব দম্পতি এখনও নিশ্চুপ।

সামাজিক মাধ্যমে বারফিনের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করে একজন লিখেছেন, ‘যদি কেউ আমার পৃথিবীর সবচেয়ে বেকুব লোকটির কথা জানতে চায়, তবে আমি এই নারীর কথাই বলবো। পরবর্তীতে ওই লোকটি নিশ্চিতভাবেই তার চামড়া তুলে নেবে।’

আরেকজন লিখেছেন, ‘বারফিনের ক্ষমায় কাসিমের দণ্ড মওকুফ করা ঠিক হবে না। তারা যে বিয়েটি করেছে, দুয়েক মাসের মধ্যেই তা ভেঙে যাবে। আর ওই বোকা নারীটি নির্মমতার অভিজ্ঞতা নিয়েই সারাজীবন বাঁচবে।’

এ বিভাগের আরো খবর