আফ্রিকা, ইউরোপ ও লাতিন আমেরিকার পর এবার যুক্তরাষ্ট্রে শনাক্ত হলো করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রন।
আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, সাউথ আফ্রিকা ফেরত ক্যালিফোর্নিয়ার এক ব্যক্তির শরীরে করোনার নতুন ধরনটি শনাক্ত হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা (সিডিসি)।
হোয়াইট হাউসের সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ বিভাগের প্রধান এন্থোনি ফাউসি জানান, ওমিক্রনে সংক্রমিত হওয়া ব্যক্তি বর্তমানে কোয়ারেন্টিনে রয়েছেন। তার সংস্পর্শে আসা সবার করোনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত আর কারোর দেহে ওমিক্রন শনাক্ত হয়নি।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) করোনাভাইরাসের নতুন এই ধরনকে খুবই উদ্বেগজনক হিসেবে উল্লেখ করেছে। এই ধরন এরই মধ্যে বিশ্বের ২৪টি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে।
ফাউসি শুরু থেকেই আমেরিকানদের করোনাভাইরাসের নতুন ধরনের ভয়াবহতা সম্পর্কে সচেতন করে আসছেন। সবাইকে টিকা নেয়ার পাশাপাশি মাস্ক পরা এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে চলাফেরা করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
হোয়াইট হাউসের সংবাদ সম্মেলনে ফাউসি বলেন, ‘আমরা আগে থেকেই জানতাম যেকোনো সময় যুক্তরাষ্ট্রে ওমিক্রন শনাক্ত হবে।’
বতসোয়ানায় প্রথম শনাক্ত হওয়া এই ভ্যারিয়েন্টের শুরুতে নাম ছিল ‘বি.১.১.৫২৯’ তবে আলোচনায় সুবিধার জন্য ২৬ নভেম্বর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এর নাম দেয় ‘ওমিক্রন’।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, স্পাইক প্রোটিনে ৩০ বারের বেশি মিউটেশনের মধ্য দিয়ে সার্স কভ টু ভাইরাসের নতুন ধরনটি তৈরি হয়েছে। সামগ্রিকভাবে এই ধরনটির মিউটেশন হয়েছে ৫০ বারের বেশি।
অত্যন্ত সংক্রামক ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের চেয়েও ওমিক্রনের মিউটেশন হয়েছে চার গুণ বেশি। ফলে এটি দ্রুত মানুষকে আক্রান্ত করতে সক্ষম বলে আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের।
ওমিক্রন নিয়ে শুরু থেকেই সতর্ক অবস্থানে যায় পশ্চিমা বিশ্বের দেশগুলো। তারা আফ্রিকান দেশগুলোর ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। তাতে খুব একটা লাভ হচ্ছে না। ইতিমধ্যে ইউরোপের বেশ কয়েকটি দেশে ওমিক্রন শনাক্ত হয়েছে। করোনার নতুন ধরনটি পাওয়া গেছে ইসরায়েল ও ব্রাজিলেও।
তবে ওমিক্রন আতঙ্কে ঢালাওভাবে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারির সমালোচনা করেছেন সাউথ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা ও জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্থোনিও গুতেরেস।
যদিও হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র জেন সাকি বলেছেন, সাউথ আফ্রিকাকে শাস্তি দেয়ার জন্য নয়। আমেরিকার জনগণকে রক্ষা করার জন্যই এই ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে।