আফগানিস্তানের সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বাকি থাকা বেতন-ভাতা পরিশোধ করতে শুরু করেছে তালেবানশাসিত সরকার।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, শনিবার থেকে বেতন-ভাতা পরিশোধের কাজ শুরু করার কথা জানিয়েছেন স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তারা।
তালেবানের মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ গতকাল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটারে লিখেছেন, ‘অর্থ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে যে গত তিন মাস ধরে বেতন না পাওয়া সব সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীকে পূর্ণ বেতন পরিশোধের কাজ শুরু হচ্ছে আজই।’
লাখো আফগান সরকারি কর্মীর কমপক্ষে তিন মাসের বেতন এখনও বাকি। তিন মাস আগে বেসামরিক সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে কট্টরপন্থি তালেবান আফগানিস্তানের শাসনব্যবস্থার নিয়ন্ত্রণ নেয়। তখন থেকেই নৈরাজ্য চলছে দেশটিতে; প্রবল অর্থনৈতিক সংকটে রয়েছে পুরো দেশ।
এমন পরিস্থিতিতে বেতনের বিপুল পরিমাণ অর্থ কোথা থেকে আসবে, সে বিষয়টি স্পষ্ট নয়।
চলতি বছরের আগস্টে তালেবান দেশের নিয়ন্ত্রণ নেয়। তার আগে থেকেই সরকারি বিভিন্ন খাতে বেতন পরিশোধ অনিয়মিত হয়ে পড়েছিল বলে জানিয়েছেন অনেক কর্মী।
তালেবান আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নেয়ায় যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপে গচ্ছিত শতকোটি ডলার অর্থ জব্দ করেছে আমেরিকান ও ইউরোপিয়ান প্রশাসন। বিদেশি সহায়তানির্ভর আফগানিস্তানের জন্য বরাদ্দ বিপুল অঙ্কের অনুদান বাতিল করেছে পশ্চিমা বিশ্ব।
আফগানিস্তানের সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন পরিশোধে তালেবানশাসিত সরকারকে সরাসরি অর্থ সহায়তা দিতেও অস্বীকৃতি জানিয়েছে বিভিন্ন দেশ। তহবিল স্থগিত করেছে আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোও।
গত বৃহস্পতিবার কাবুলে তালেবান কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন জার্মানি ও নেদারল্যান্ডসের বিশেষ দূতরা। তারা আফগানিস্তানের স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতে কর্মরতদের বেতন পরিশোধে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন।
এর সঙ্গে তালেবানের শনিবারের ঘোষণার কোনো সম্পর্ক আছে কি না, তাও স্পষ্ট নয়।
তালেবানের আরেক মুখপাত্র ইনামুল্লাহ সামানগনি টুইটারে জানিয়েছেন, তালেবানশাসিত প্রশাসনের দৈনিক রাজস্ব সংগ্রহের পরিমাণ দিনে দিনে বাড়ছে।
তিনি বলেন, ‘গত তিন মাসে কর্মদিবস ছিল ৭৮টি। অর্থ মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, এই ৭৮ দিনে আমরা প্রায় দুই হাজার ৭০০ কোটি আফগান মুদ্রা (২৯ কোটি ডলার) আয় করেছি।
‘শুধু গত বুধবারই আমরা ৫৫ কোটি ৭০ লাখ আফগান মুদ্রা (৫৯ লাখ ডলার) আয় করেছি।’
অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মীদের পেনশন প্রদানের কাজও শিগগিরই শুরু হতে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি।