টালমাটাল অবস্থায় কাবুলের নিয়ন্ত্রণ নেয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত আফগানিস্তানের ৭৫ শতাংশ মেয়ে শিক্ষার্থী স্কুলে ফিরেছে দাবি করেছেন দেশটির ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকি।
ইসলামাবাদে শুক্রবার ইনস্টিটিউট অফ স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজে সেন্টার ফর আফগানিস্তান, মিডল ইস্ট ও আফ্রিকা আয়োজিত এক উন্মুক্ত আলোচনায় এক প্রশ্নের জবাবে এ তথ্য দেন তিনি।
দুই দশক পর গত আগস্টে আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখল করে কট্টর ইসলামপন্থি তালেবান। তাদের ক্ষমতা দখলের পর পরই দেশটির সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়া হয়। পরে খোলা হলেও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয় নারী শিক্ষায়। বিষয়টি নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের তীব্র সমালোচনার মধ্যে পড়ে তালেবান সরকার।
তবে আফগান পররাষ্ট্রমন্ত্রী মুত্তাকি বলছেন ভিন্ন কথা। জানালেন, তার দেশের ৭৫ ভাগ মেয়ে শিক্ষার্থী তাদের পড়াশোনা আবার শুরু করেছে।
মুত্তাকির মতে, শিক্ষা বিষয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অবস্থান ‘স্ববিরোধী’। তারা নারী শিক্ষার কথা বলে, অথচ আফগানিস্তানের শিক্ষকদের বেতন ইস্যুতে নজর দেয় খুব কম। আফগানিস্তানের অনেক সম্পত্তি আটকে রাখায় শিক্ষকদের বেতন নিয়ে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।
আফগান পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, বিদেশি সংবাদমাধ্যমে আফগানিস্তানের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের যেসব নেতিবাচক প্রচার-প্রচারণা হচ্ছে, বাস্তব চিত্র সম্পূর্ণ ভিন্ন।
মুত্তাকি জানান, আফগানিস্তানে বর্তমানে ৫ লাখ সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীকে বেতন দেয়া হচ্ছে। রাজনৈতিক বিবেচনায় কাউকে বরখাস্ত করা হয়নি। এমনকি কোনো নারীকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়নি বা তাদের বেতন কাটা হয়নি।
আফগানিস্তানের স্বাস্থ্য অবকাঠামোর চিত্র তুলে ধরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, দেশটিতে প্রায় ৩ হাজার ক্লিনিক ও হাসপাতাল রয়েছে। সবগুলোতেই কার্যক্রম অব্যাহত আছে।
মুত্তাকি জানান, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চাওয়া অনুযায়ীই, আফগানিস্তানে সংস্কারকাজ চলছে। সে লক্ষ্যেই কাজ করে যাচ্ছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। কাজগুলো করা হচ্ছে শান্তিপূর্ণভাবে, কোনো চাপ প্রয়োগ করে নয়।
তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চাওয়া অনুযায়ী অন্তর্ভুক্তিমূলক সরকার গঠন করতে বর্তমান মন্ত্রিসভায় এরই মধ্যে সব নৃগোষ্ঠীর প্রতিনিধিদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
পরাষ্ট্রমন্ত্রী এটা পরিষ্কার করে জানালেন, তার সরকার চায় আফগানিস্তান আর কখনও যেন পরাশক্তিদের যুদ্ধের ময়দান না হোক।