আফগানিস্তানের আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেটের (আইএস) প্রায় ৬০০ সদস্যকে আটকের দাবি করেছে শাসকদল তালেবান। গত আগস্টে আফগানিস্তানের ক্ষমতায় ফেরার পর থেকে ব্যাপক ধরপাকড় হয়েছে।
টাইমস অফ ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে জানানো হয়, আটককৃতদের মধ্যে আইএসের স্থানীয় শাখা আইএস-কের (খোরাসান) ‘শীর্ষ পদধারী’ কয়েকজন কমান্ডারও আছেন।
তালেবানশাসিত আফগান সরকারের গোয়েন্দা সংস্থা জেনারেল ডিরেক্টরেট অফ ইন্টেলিজেন্সের মুখপাত্র কাহলিল হামরাজ রাজধানী কাবুলে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন কারাগারে কঠোর নিরাপত্তায় বন্দি আছে আইএসের সঙ্গে সম্পৃক্ত সন্ত্রাসীরা।’
আফগানিস্তানে চলমান নিরাপত্তা অভিযানে আইএস-কের প্রায় ৪০ সদস্যকে হত্যার তথ্যও জানান হামরাজ।
আফগানিস্তানের ক্ষমতাচ্যুত বেসামরিক সরকারের প্রতি অভিযোগ করে হামরাজ বলেন, তালেবান কাবুলের নিয়ন্ত্রণ নেয়ার আগে দেশের বিভিন্ন কারাগার থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০ আইএস-কে জঙ্গির মুক্তি নিশ্চিত করেছিল সাবেক সরকার। মুক্তি পাওয়া ওই জঙ্গিরা বর্তমানে আফগানিস্তানের বিভিন্ন অঞ্চলে সহিংস কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এর মধ্যে অন্যতম হলো কাবুলের সামরিক হাসপাতালে সাম্প্রতিক গাড়িবোমা হামলা।
আফগানিস্তানজুড়ে অনেক হামলার দায় স্বীকার করেছে আইএস-কে, যার মধ্যে কিছু আত্মঘাতী হামলাও আছে। এসব হামলায় বেসামরিক আফগান ও তালেবান সদস্যসহ কয়েক শ মানুষ নিহত হয়েছে।
তালেবানশাসিত আফগানিস্তান আঞ্চলিক নিরাপত্তা ঝুঁকির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে উদ্বিগ্ন বিশ্বসম্প্রদায়। এ অভিযোগ খণ্ডাতে সম্প্রতি আইএস-কের বিরুদ্ধে বেশ কিছু সফল অভিযান পরিচালনার দাবি করেছে তালেবান।
তবে আইএস জঙ্গিরা নীরব ঘাতক বলে সতর্ক করছে পশ্চিমা বিশ্ব। হঠাৎ করে এত বিপুলসংখ্যক আইএস-কে জঙ্গিকে গ্রেপ্তারের খবর সত্য হওয়ার সম্ভাবনা কম বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরাও।
আফগানিস্তানজুড়ে আইএস-কের কমপক্ষে দুই হাজার কট্টর যোদ্ধা আছে বলে সতর্ক করেছে যুক্তরাষ্ট্র। শঙ্কা- ছয় মাসের মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্র বা পশ্চিমা বিশ্বে বড় ধরনের হামলা চালানোর সক্ষমতা অর্জন করে ফেলতে পারে জঙ্গিরা।
তালেবান ও আইএস- দুটিই কট্টর সুন্নি মুসলিম সশস্ত্র সংগঠন। দুটি দলই নিজেদের ইসলাম ধর্মের প্রকৃত পতাকাবাহী বলে দাবি করে এবং ইসলামের নিজস্ব কট্টর সংস্করণ ও চরম রক্ষণশীল জীবনবিধান আরোপে বিশ্বাসী। ধর্মীয় মতাদর্শ ও রাজনৈতিক কৌশলের দিক থেকেও গোষ্ঠী দুটির পার্থক্য সামান্য। কিন্তু তাও কয়েক বছর ধরেই প্রতিপক্ষের ভূমিকায় রয়েছে গোষ্ঠী দুটি।