‘প্রতিকূল পরিবেশের’ কারণে চীনে কার্যক্রমে আনুষ্ঠানিক ইতি টেনেছে প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ইয়াহু। ১ নভেম্বর, সোমবার, ছিল চীনা ভূখণ্ডে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানটির কাজের শেষ দিন।
চীন থেকে বিদায় নেয়া যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিতীয় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ইয়াহু। গত মাসে চীন ছেড়ে গেছে মাইক্রোসফট মালিকানাধীন লিংকডইন।
বার্তা সংস্থা এপির প্রতিবেদনে বলা হয়, চীনে ব্যবসায়িক ও আইনগত প্রতিকূলতা অব্যাহতভাবে বাড়ছিল বলে এ পদক্ষেপ নেয়ার কথা জানিয়েছে ইয়াহু।
এক বিবৃতিতে প্রতিষ্ঠানটি মঙ্গলবার জানায়, ‘চীনে বর্তমানে যেভাবে ব্যবসায়িক প্রতিকূলতা বাড়ছে এবং আইনি পরিবেশ ভিন্ন মোড় নিচ্ছে, তার সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে পারছে না ইয়াহু। ফলে ১ নভেম্বর থেকে চীনের মূল ভূখণ্ডে প্রতিষ্ঠানটির পরিষেবা বন্ধ হচ্ছে।’
চীনে ইয়াহু ওয়েবসাইটে প্রবেশ করলে এ বিষয়ে সংক্ষিপ্ত একটি বিবৃতি দেখছেন ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা।
ইয়াহু জানিয়েছে, ‘উন্মুক্ত ও স্বাধীন পরিবেশে ইন্টারনেট ব্যবহারের বিষয়ে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ’ থাকবে প্রতিষ্ঠানটি।
চীনে আগেই কার্যক্রম সীমিত করে এনেছিল ইয়াহু। ২০১৫ সালে রাজধানী বেইজিংয়ে প্রতিষ্ঠানটির কার্যালয়ও বন্ধ করে দেয়া হয়। ইয়াহুর বিবিধ পরিষেবার মধ্যে ওয়েব পোর্টালসহ কমপক্ষে একটি সাইটও আগে থেকে বন্ধ রয়েছে চীনে।
ফলে দেশটি থেকে ইয়াহুর বিদায় নেয়াকে মূলত প্রতীকী পদক্ষেপ হিসেবেই দেখছেন অনেকে।
চীনে কার্যক্রম পরিচালনায় বেশিরভাগ বিদেশি প্রতিষ্ঠান এক ধরনের টানাপোড়েনে আছে। বিশেষ করে ভিনদেশি প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো চীনের কঠোর আইন ও কনটেন্ট প্রচারে সরকারি বিধিনিষেধের সঙ্গে খাপ খাওয়াতে হিমশিম খাচ্ছে।
চীনে ইন্টারনেটে প্রকাশযোগ্য বিষয়বস্তু কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করে দেশটির সরকার। বিধিনিষেধের কারণে রাজনৈতিক দিক বিবেচনায় স্পর্শকাতর বা ‘অনুপযুক্ত’ বিবেচিত কনটেন্ট ও কিওয়ার্ড সরিয়ে ফেলতে বাধ্য করা হয় সব প্রতিষ্ঠানকে।
চীনের ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষা আইন বাস্তবায়নের পর দেশটিতে তথ্যপ্রযুক্তিভিত্তিক প্রতিষ্ঠানগুলোর কাজের পরিসর সীমাবদ্ধ হয়ে গেছে।
ফেসবুক ও গুগলসহ বেশিরভাগ আন্তর্জাতিক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও সার্চ ইঞ্জিন ব্লক করে রেখেছে চীন। চীন থেকে এসব সাইটে ঢুকতে চাইলে ভার্চুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্ক (ভিপিএন) ব্যবহার করতে হয়।
চীনে ইয়াহুর গান ও ইমেইলভিত্তিক সেবা চালু ছিল, যেগুলো ২০১০-এর দশকের শুরুর দিকে বন্ধ করে দেয়া হয়।