ভারতের ১৩টি রাজ্য ও একটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে ২৯টি বিধানসভা এবং তিনটি লোকসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচন হয়েছে শনিবার। এছাড়া নাগাল্যান্ডে একটি আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন এনডিপিপি প্রার্থী।
মঙ্গলবার ভোট গণনা শেষে পাওয়া গেল মিশ্র ফলাফল।
তিনটি লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে বিজেপি একটি, কংগ্রেস একটি ও শিবসেনা একটি আসন পেয়েছে। বিধানসভার ২৯টি আসনের মধ্যে কংগ্রেস আট, বিজেপি সাত এবং তৃণমূল কংগ্রেস চারটি আসন পেয়েছে। বিজেপির ছোট শরিকদলগুলো পেয়েছে সাতটি আসন। তিনটি ছোটদল পেয়েছে একটি করে আসন।
শুধু হিমাচল ছাড়া অন্য রাজ্যগুলোতে শাসকদলই জয়ের হাসি হেসেছে। বিজেপি শাসিত হিমাচলে বড় ধাক্কা খেয়েছে শাসক দল। রাজ্যের তিনটি বিধানসভা ও একটি লোকসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে সবকটিতেই জিতেছে কংগ্রেস।
রাজ্যের মান্ডি লোকসভা কেন্দ্রটি বিজেপির থেকে ছিনিয়ে নিয়েছে কংগ্রেস। সেখানে প্রয়াত সাবেক মুখ্যমন্ত্রী বীরভদ্র সিংহের স্ত্রী প্রতিভা সিংকে প্রার্থী করেছিল দলটি। প্রায় ৯ হাজার ভোটে বিজেপি প্রতিদ্বন্দ্বীকে হারিয়েছেন তিনি।
হিমাচলে তিনটি বিধানসভা আসনের মধ্যে নিজেদের দখলে থাকা দুটি আসনের পাশাপাশি বিজেপির থেকে একটি আসন ছিনিয়ে নিয়েছে কংগ্রেস।
রাজস্থানেও বিজেপির ফল খারাপ। সেখানে বল্লভনগর বিধানসভা দখলে রাখার পাশাপাশি বিজেপির কাছ থেকে ধারিওয়াড় আসনটি ছিনিয়ে নিয়েছে কংগ্রেস। শুধু পরাজিত হওয়াই নয়, ধারিওয়াড়ে বিজেপির স্থান তৃতীয়, বল্লভনগরে চতুর্থ।
বিজেপি শাসিত রাজ্য হরিয়ানায় এলেনাবাদ বিধানসভা কেন্দ্রে শাসক দলকে হারিয়েছেন আইএনএলডি প্রার্থী অভয় চৌটালা। মধ্যপ্রদেশে খান্ডোয়া লোকসভা কেন্দ্রটি বিজেপি দখলে রাখতে পারলেও সেখানে ব্যবধান কমেছে অনেকটাই।
২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে সেখানে ২ লাখ ৭৩ হাজারেরও বেশি ব্যবধানে জিতেছিলেন বিজেপি প্রার্থী। এবার সেটি নেমে এসেছে ৫০ হাজারের কাছে। রাজ্যে তিনটি বিধানসভা আসনের উপনির্বাচনে দুটি বিজেপি এবং একটি কংগ্রেসের দখলে গেছে।
কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল দাদরা ও নগর হবেলীর একমাত্র লোকসভা আসনটি জিতেছে শিবসেনা। এই প্রথম মহারাষ্ট্রের বাইরে কোনো লোকসভা আসনে জিতল প্রয়াত বালাসাহেব ঠাকরে প্রতিষ্ঠিত দল।
নরেন্দ্র মোদির রাজ্য গুজরাট পরিবেষ্টিত ওই লোকসভা আসনে প্রয়াত নির্দল সাংসদ মোহন দেলকরের স্ত্রী কলাবেনকে প্রার্থী করে জিতেছে শিবসেনা।
বিজেপি এবং শরিক দলগুলো ভালো ফল করেছে অসমসহ উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলোতে। অসমে পাঁচটি বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচন হয়েছে। এর মধ্যে তিনটি আসনে বিজেপি এবং একটি আসনে শরিক দল ইউপিপিএল জয়লাভ করেছে। পাচঁটির মধ্যে চারটি আসন আগে কংগ্রেসের দখলে ছিল।
মেঘালয়ার তিনটি আসনেই উপনির্বাচন ছিল। শাসকদল ন্যাশনাল পিপলস পার্টি দুটি ও তাদের জোটসঙ্গী ইউনাইটেড ডেমোক্রেটিক পার্টি একটি আসনে জয়লাভ করেছে। মিজোরামের একটি মাত্র আসনে ছিল উপনির্বাচন। এই নির্বাচনে মিজো ন্যাশানাল ফ্রন্টের প্রার্থী জয়লাভ করেছেন।
উত্তর ভারতে হিমাচল, রাজস্থান, হরিয়ানার মতো রাজ্যগুলোতে বিজেপির খারাপ ফলের পেছনে কৃষক আন্দোলনের প্রভাব রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। সেক্ষেত্রে আগামী বছরের গোড়ায় উত্তরপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ড এবং পঞ্জাবের বিধানসভা ভোটে নিশ্চিত ভাবেই কিছুটা চাপে পড়বে বিজেপি।