বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

কানাডার নির্বাচনে লিবারেল পার্টির জয়

  • নিউজবাংলা ডেস্ক   
  • ৩০ এপ্রিল, ২০২৫ ১৪:৩৮

কানাডার ফেডারেল নির্বাচনে জয় পেয়েছে দেশটির প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নির নেতৃত্বাধীন লিবারেল পার্টি। কানাডার ব্রডকাস্টিং করপোরেশন এমনটিই জানিয়েছে। দেশটির অর্থনীতি ও সার্বভৌমত্বের প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের হুমকির কারণে সোমবারের নির্বাচনের ফলাফলে নাটকীয় পরিবর্তন এসেছে।

গতকাল মঙ্গলবার জয় ঘোষণার পরই কার্নি বলেছেন, তার দেশ ‘কখনো’ যুক্তরাষ্ট্রের কাছে নতি স্বীকার করবে না।

বিজয়ী ভাষণে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কড়া সমালোচনা করেছেন কার্নি। তিনি বলেন, ‘ট্রাম্প আমাদের (কানাডা) ‘ভাঙার’ চেষ্টা করছেন, যাতে যুক্তরাষ্ট্র আমাদের দখলে নিয়ে নিতে পারে। তবে এমনটি কখনোই হবে না। আমি কয়েক মাস ধরেই এ বিষয়ে সতর্ক করে আসছি যে, যুক্তরাষ্ট্র আমাদের ভূমি, সম্পদ, আমাদের পানি, আমাদের দেশ নিয়ে নিতে চায়। এগুলো কেবল নিষ্ক্রিয় কোনো হুমকি নয়।’

‘যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কানাডার সংহতিসাধনের যে পুরোনো সম্পর্ক ছিল তাও এখন শেষ’, উপস্থিত জনতার উদ্দেশে ভাষণে বলেন তিনি। একে তিনি এক ট্র্যাজেডি বলে বর্ণনা করেন।

বিভক্ত জাতিকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার বার্তা দিয়ে কার্নি বলেন, যেসব মানুষ কানাডাকে নিজেদের বাড়ি মনে করেন, তাদের সবার নেতা হওয়ার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন তিনি।

যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্বাসঘাতকতায় কানাডা বিস্মিত হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের এখন একে অপরের যত্ন নিতে হবে।’

এদিকে নির্বাচনের দিন কানাডার নাগরিকদের নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে উপহাস করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি ইঙ্গিত দিয়ে বলেছেন, তিনি নিজেই ব্যালটে আছেন। যুক্তরাষ্ট্রের ৫১তম রাজ্য হওয়া উচিৎ কানাডাকে। যুক্তরাষ্ট্র ভুলবশত কানাডাকে ভর্তুকি দেয় বলেও দাবি করেন তিনি। পোস্টে ট্রাম্প লেখেন, ‘কানাডা রাজ্য না হওয়াটার কোনো মানে নেই।’

চলতি বছরের শুরুতে দেশটিতে আবাসন খরচ বৃদ্ধি ও ক্রমবর্ধমান অভিবাসনের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো পদত্যাগের পর লিবারেলদের হেরে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছিল। কিন্তু দেশটির সার্বভৌমত্ব ও অর্থনীতিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের হুমকিতে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে নাগরিকরা। এর ফলে তাদের মাঝে এক ধরনের জাতীয়তাবাদ গড়ে উঠে। এর ফলেই লিবারেলদের পতনমুখী অবস্থার অবসান হয়—যা দলটিকে চতুর্থ মেয়াদে ক্ষমতায় আসতে সাহায্য করেছে।

নির্বাচনের আগে ভ্যাঙ্কুবারে প্রাণঘাতী গাড়ির ধাক্কায় হতাহতের পর নির্বাচনী প্রচারণা কয়েক ঘণ্টা স্থগিত রাখা হয়েছিল। এই ঘটনার সঙ্গে সন্ত্রাসবাদের সম্পৃক্ততাকে উড়িয়ে দিয়ে জড়িত স্থানীয় এক ব্যক্তিকে আটক করে পুলিশ। আটক ব্যক্তি মানসিকভাবে ভারসাম্যহীন বলে জানায় পুলিশ।

বেশ কিছুদিন ধরে কানাডা জীবনযাত্রার ব্যয় সংকটের মধ্যে রয়েছে। এছাড়া ট্রাম্পের ব্যাপক শুল্কারোপের হুমকি ও উত্তর আমেরিকার গাড়ি নির্মাতাদের কারখানা কানাডা থেকে সরিয়ে নেওয়ার ইচ্ছা দেশটির অর্থনীতিতে মারাত্মক প্রভাব ফেলে। এতে অর্থনীতি ক্ষতির মুখে পড়ে।

কার্নির দল একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছেন কিনা, নাকি তাকে জোট সরকার গঠনের পথে হাঁটতে হবে সেটি এখনও দেখার বাকি।

কানাডায় হাউস অব কমন্সের মোট আসনসংখ্যা ৩৪৩। দেশটির নির্বাচনে কোনও দলকে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে ১৭২ আসনে জিততে হয়। লিবারেল পার্টি ১৬০টির বেশি আসনে এগিয়ে রয়েছে। তবে তারা একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে কি না, তা এখনো স্পষ্ট নয়।

অন্যদিকে, প্রতিপক্ষ কনজারভেটিভ পার্টি পাচ্ছে অন্তত ১৪৭ টি আসন। ইতোমধ্যেই পরাজয় স্বীকার করে নিয়েছেন কনজারভেটিভ পার্টির নেতা পিয়েল পয়েলিভার। তিনি বলেন, ‘কার্নি একটি সূক্ষ্ম ব্যবধানের সংখ্যালঘু সরকার গড়ার জন্য যথেষ্ট আসন পেয়েছেন।’

কানাডায় ভোটাররা সরাসরি তাদের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচন করেন না। ভোটাররা ৩৪৩টি নির্বাচনী জেলায় কেবল হাউস অ কমন্সে তাদের স্থানীয় প্রতিনিধি নির্বাচন করেন।

হাউস অব কমন্সে যে দল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে, সেই দলের নেতা সরকর গঠন করবে এবং তিনিই প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।

তবে যদি কোনো দলই প্রয়োজনীয় সংখ্যক আসনে জয়লাভ করতে না পারেন, তাহলে সবচেয়ে বেশি আসন পাওয়া দল বিরোধী অন্য দলের সমর্থন নিয়ে সংখ্যালঘু সরকার গঠন করবে। তবে বিরল ঘটনা হলো— দুই বা ততোধিক দল আনুষ্ঠানিকভাবে চুক্তি করে জোট সরকার গঠন করতে পারে।

লিবারেল দলের কার্নি ও কনজারভেটি দলের পোইলিভর উভয়ই বলেছেন, নির্বাচিত হলে তারা কানাডা ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে একটি মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির বিষয় পুনর্বিবেচনা করবেন—যাতে উভয় দেশের অর্থনীতির অনিশ্চয়তা কেটে যায়।

যুক্তরাজ্যের নাগরিক নন এমন প্রথম ব্যক্তি হিসেবে কার্নির ব্যাংক অব ইংল্যান্ড পরিচালনা করার অভিজ্ঞতা রয়েছে। এর আগে তিনি কানাডার কেন্দ্রীয় ব্যাংক পরিচালনা করেছেন।

নির্বাচনের দিন কানাডার রেকর্ড ৭৩ লাখ ভোটার ভোট দিয়েছেন।

এ বিভাগের আরো খবর