ছোট শহরগুলোতে ‘সুপার হাই-রাইজ’ ভবন নির্মাণ নিষিদ্ধ করেছে চীন। উচ্চাভিলাষী প্রকল্পের অধীনে সুউচ্চ ভবন নির্মাণ কমাতে বৃহত্তর পরিকল্পনার অংশ হিসেবে এ পদক্ষেপ নিয়েছে বেইজিং।
বিবিসির প্রতিবেদনে জানানো হয়, ৫০০ মিটারের বেশি লম্বা ভবন নির্মাণের ওপর আগে থেকেই একটি নিষেধাজ্ঞা কার্যকর আছে চীনে।
বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু বেশ কয়েকটি আকাশছোঁয়া ভবনই চীনে অবস্থিত। এগুলোর মধ্যে অন্যতম ১২৮ তলার সাংহাই টাওয়ার।
নতুন নিয়মে বলা হয়েছে, জনসংখ্যা ৩০ লাখের কম হলে সেসব শহরে ১৫০ মিটার পর্যন্ত উঁচু ভবন নির্মাণ করা যাবে, এর বেশি নয়।
চীনের আবাসন ও নগর-গ্রাম উন্নয়ন মন্ত্রণালয় আর জরুরি ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয় যৌথ বিবৃতিতে জানিয়েছে, ৩০ লাখের বেশি বাসিন্দার শহরগুলো ২৫০ মিটারের বেশি উঁচু ভবন নির্মাণ করতে পারবে না।
মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে, কিছু ক্ষেত্রে বিশেষ বিবেচনায় ৩০ লাখের কম মানুষের শহরে ১৫০ মিটারের বেশি উঁচু ভবন নির্মাণের অনুমতি দেয়া যেতে পারে। কিন্তু কোনো অবস্থাতেই সেসব শহরে ২৫০ মিটারের বেশি উঁচু ভবন নির্মাণের অনুমতি দেয়া হবে না।
একইভাবে, ৩০ লাখের বেশি জনবসতির শহরগুলোতে সুনির্দিষ্ট কিছু পরিস্থিতিতে ২৫০ মিটারের বেশি উঁচু ভবন নির্মাণের অনুমতি দেয়া হতে পারে। কিন্তু উচ্চতা ৫০০ মিটার ছাড়ানো কঠোরভাবে নিষিদ্ধ।
এসব নিয়ম উপেক্ষা করে কোনো প্রশাসনিক কর্মকর্তা ভবন নির্মাণের অনুমতি দিলে তাকে ‘আজীবন জবাবদিহি করতে হবে’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে বিবৃতিতে।
সম্প্রতি জনবসতি কম, এমন শহরগুলোতে আকাশচুম্বী দালান নির্মাণের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে সম্প্রতি প্রশ্ন তুলেছিল চীনের স্থানীয় বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম। বলা হয়েছিল, বাস্তবতাবিবর্জিত এসব নির্মাণকাজের মাধ্যমে বড়াই করতে পারা ছাড়া আর কোনো অর্জন নেই।
এ ঘোষণায় সমর্থন জানিয়েছে বেশিরভাগ চীনা। চীনের নিজস্ব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে বেইজিংয়ের এ পদক্ষেপের ভূয়সী প্রশংসা করেছে জনসাধারণ। বেশিরভাগেরই মত, অতিরিক্ত উঁচু এসব ভবনের ‘কোনো প্রয়োজন নেই… এগুলো শুধু লোকদেখানো।’
চলতি বছর ‘কুৎসিত স্থাপনা’ নির্মাণেও নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে চীন।
টোঙ্গিং ইউনিভার্সিটির স্থাপত্যকলা ও নগর পরিকল্পনা কলেজের উপপ্রধান ঝ্যাং শাংউ বলেন, ‘আমরা এমন এক সময়ে বাস করছি যেখানে মানুষ সর্বক্ষণ ছুটে চলছে। প্রতিনিয়ত ইতিহাস গড়ার মতো নতুন কিছু করতে ব্যস্ত তারা।’
তার মতে, প্রতিটি ভবন নির্মাণের পেছনেই এখন প্রধান লক্ষ্য থাকে নতুন কোনো রেকর্ড গড়ার। নগর পরিকল্পনাবিদ আর উন্নয়নবিদরা এ লক্ষ্য অর্জনে ভবন কতোটা অভিনব আর অদ্ভুত করা যায়, সেটাই দেখেন।