ভারতের পশ্চিমবঙ্গে রাজ্য বিজেপিতে ভাঙন অব্যাহত। সবশেষ দলত্যাগ করেছেন রায়গঞ্জের বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যাণী, ফিরেছেন নিজের পুরোনো ঘাঁটি তৃণমূলে।
তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও জোড়াসাঁকোর বিধায়ক বিবেক গুপ্তার উপস্থিতিতে বুধবার নিজের তৃণমূলের পতাকা হাতে তুলে নেন কৃষ্ণ কল্যাণী।
চলতি বছর পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন কৃষ্ণ কল্যাণী। বিজেপির টিকিটেই রায়গঞ্জ থেকে বিধানসভা সদস্য নির্বাচিত হন তিনি।
কিন্তু রাজ্য বিজেপির অন্তর্কোন্দলে বীতশ্রদ্ধ কল্যাণী পুরনো দল তৃণমূলে ফিরতে চাইছিলেন বেশ কিছুদিন ধরে।
রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ও তৃণমূল সভানেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সম্মতিতে আবার তৃণমূল পতাকা হাতে তুলে নেন কল্যাণী।
পুরোনো দলে ফিরে কৃষ্ণ কল্যাণী বলেন, ‘বিজেপিতে আছে খালি ষড়যন্ত্র। তা দিয়ে নির্বাচনের ময়দানে জেতা যায় না। জিততে হলে দরকার উন্নয়ন। আমি কাজ করার চেষ্টা করেছি, বিনিময়ে ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছি। তাই বিজেপি ছাড়তে বাধ্য হয়েছি।’
তৃণমূলে ফেরার প্রতিক্রিয়ায় কৃষ্ণ কল্যাণী আরও বলেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যা কথা দেন, তা করে দেখান। ভোটের আগে তিনি যা যা বলেছিলেন, ক্ষমতায় ফিরে সব করে দেখিয়েছেন। এতে অভিভূত আমি। ধন্যবাদ জানাই মমতাদি আর অভিষেকদাকে।’
বিজেপির বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়ে কৃষ্ণ কল্যাণী বলেন, ‘বিজেপিতে ভালো কাজের কোনো মূল্যায়ন নেই। বিজেপিতে যোগ দিয়ে যে ভুল করেছিলাম, তা এবার শুধরে নিচ্ছি।’
বেশ কিছুদিন ধরে বিজেপির রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে রায়গঞ্জের বিধায়কের বিরোধ চলছিল। নাম উল্লেখ না করলেও বিজেপির রাজ্য নেতৃত্ব ও স্থানীয় সংসদ সদস্য দেবশ্রী চৌধুরীর ওপর কৃষ্ণ কল্যাণীর ক্ষোভ স্পষ্ট ছিল।
এ অবস্থায় সংবাদ সম্মেলন করে দলের সব কর্মসূচি থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়ে দল ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন তিনি। গত ১ অক্টোবর জানিয়েছিলেন, দেবশ্রী চৌধুরীর সঙ্গে একই দল করা সম্ভব নয়।
২০২১ সালে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় ৭৭টি আসনে জয়লাভ করে বিজেপি। নিশীথ প্রামাণিক এবং জগন্নাথ সরকার তাদের সংসদ সদস্য পদ ধরে রাখতে বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দিলে ৭৭ থেকে নেমে ৭৫ জনে নেমে আসে বিধায়কের সংখ্যা।
এরপর বিজেপি দলীয় পাঁচজন বিধায়ক দল ছেড়ে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন। ফলে বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির বিধায়কের সংখ্যা ৭০।