জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের এবারের অধিবেশনে মিয়ানমার থেকে কেউ প্রতিনিধিত্ব করছেন না।
সংস্থাটির এক মুখপাত্র স্থানীয় সময় শুক্রবার এ তথ্য জানান বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
জাতিসংঘের মুখপাত্র স্তেফান দুজারিক বলেন, ‘এবারের অধিবেশনে মিয়ানমার থেকে কেউ কথা বলছেন না।’
জাতিসংঘে মিয়ানমারের বর্তমান রাষ্ট্রদূত কিয়াও মোয়ে তুন। দেশটির নির্বাচিত সাবেক স্টেট কাউন্সেলর অং সান সু চি তাকে নিয়োগ দিয়েছিলেন।
সোমবার নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের শেষ দিনে সংস্থাটির ১৯৩টি সদস্য রাষ্ট্রের সামনে মোয়ে তুনের বক্তৃতা দেয়ার কথা ছিল।
তবে কূটনীতিকরা জানিয়েছেন, চীন, রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র মোয়ে তুনের বিষয়ে এক ধরনের ঐকমত্যে পৌঁছেছে।
রাশিয়া ও চীনের ভাষ্য, জাতিসংঘে মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতের পদে মোয়ে তুন থাকতে পারবেন যদি তিনি সংস্থাটির উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে অংশ না নেন।
মোয়ে তুন রয়টার্সকে বলেন, ‘জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে বক্তাদের তালিকা থেকে নিজের নাম সরিয়ে নিয়েছি।
‘আমি এবারের সাধারণ বিতর্কে অংশ নেব না।’
তিনি বলেন, ‘আমাকে নিয়ে রাশিয়া, চীন, যুক্তরাষ্ট্রসহ জাতিসংঘের কয়েকটি সদস্য রাষ্ট্রের ঐকমত্যের বিষয়ে অবগত রয়েছি।’
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে অভ্যুত্থানের পর মিয়ানমারের জান্তা সরকার জাতিসংঘে তাদের রাষ্ট্রদূত হিসেবে সামরিক কর্মকর্তা অং থুরেইনের নাম প্রস্তাব করে।
একই সঙ্গে মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত হিসেবে মোয়ে তুনকে জাতিসংঘের স্বীকৃতি নবায়ন করতে বলা হয়।
সামরিক অভ্যুত্থানের বিরোধিতা করায় মোয়ে তুনকে হত্যা বা জখমের পরিকল্পনা মিয়ানমারের জান্তা সরকার করে বলে অভিযোগ রয়েছে।
এদিকে গত মাসে আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ তালেবানের হাতে যাওয়ার পর জাতিসংঘে দেশটির প্রতিনিধিত্ব নিয়েও আলোচনা উঠেছে।
জাতিসংঘের মুখপাত্র দুজারিক বলেন, ‘সোমবার জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে আফগানিস্তানের প্রতিনিধিত্ব করবেন গোলাম এম ইসাকজাই।’
জাতিসংঘে আফগানিস্তানের রাষ্ট্রদূত হিসেবে তালেবানের হাতে ক্ষমতাচ্যুত পশ্চিমা সমর্থিত দেশটির সাবেক সরকারের নিয়োগ পেয়েছিলেন ইসাকজাই।
নবগঠিত তালেবানের অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকি সোমবার জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে অংশগ্রহণের আকাঙ্ক্ষার কথা জানিয়েছিলেন।
এ জন্য জাতিসংঘে আফগানিস্তানের রাষ্ট্রদূত হিসেবে তালেবানের মুখপাত্র সুহেইল শাহীনকে মনোনয়নও দেন মুত্তাকি।
সাধারণত বছরের অক্টোবর বা নভেম্বর মাসে যুক্তরাষ্ট্র, চীন, রাশিয়াসহ জাতিসংঘের ৯ সদস্যের এক কমিটি সংস্থাটির স্বীকৃতি নিয়ে আলোচনায় বসে।
তাই তালেবান মনোনীত প্রার্থীর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি ওই কমিটি।
জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের নিয়ম অনুযায়ী, সংস্থাটির ৯ সদস্যের ওই কমিটি সিদ্ধান্ত না নেয়া পর্যন্ত মোয়ে তুন ও ইসাকজাই উভয়ই সংস্থাটিতে নিজ নিজ দেশকে প্রতিনিধিত্ব করবেন।