আফগানিস্তানে অন্তর্ভুক্তিমূলক সরকার গঠন এবং নারী ও মানবাধিকার নিশ্চিত করতে বিশ্বনেতারা যেসব দাবি রেখেছে তা পূরণ করতে তালেবান সরকার প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন পাকিস্তান, চীন ও রাশিয়ার তিন বিশেষ দূত।
কাবুলে সম্প্রতি আফগানিস্তানের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধানমন্ত্রী মোল্লা হাসান আখুন্দের সঙ্গে দেখা করে তালেবানের এ ইচ্ছার কথা জানান তারা।
তালেবান সরকারের মনোভাব নিয়ে তিন বিশেষ দূতই সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন বলে বৈঠকটির বিষয়ে অবগত কূটনৈতিক সূত্রগুলো দ্য ট্রিবিউন এক্সপ্রেসকে জানিয়েছে।
আফগানিস্তানের নেতৃত্ব নিয়ে তালেবানের যে মতাদর্শ তাতে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন পাকিস্তান, চীন ও রাশিয়ার বিশেষ দূত। পাশাপাশি আফগানিস্তানের চলমান পরিস্থিতি স্বাভাবিক দেখে বিস্মিত হয়েছেন তারা।
বিশেষ তিন দূত আফগানিস্তানের হাটবাজার ও বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ঘুরে দেখেছেন। সব ক্ষেত্রেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক দেখেছেন তারা।
সূত্রগুলো বলেছে, আফগানিস্তানে ‘সবার সরকার’ গঠন করতে তালেবান যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, তা পূরণ করা হবে বলে জানানো হয়েছে। এ বিষয়ে কট্টর ইসলামপন্থি গোষ্ঠীটি সবার সঙ্গে একমত।
তবে তালেবান নেতৃত্ব জানিয়েছে, গত ২০ বছর আফগানিস্তান সরকারে যারা দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছেন, তারা পরিচিত মুখ হলেও তালেবান সরকারে তাদের নেয়া হবে না।
পাকিস্তান, চীন ও রাশিয়ার বিশেষ দূতদের তালেবান থেকে এটাও জানানো হয়েছে, নারী শিক্ষার প্রতি আফগানিস্তানে কোনো বাধা দেয়া হবে না। তবে এই শিক্ষা পদ্ধতি হবে ‘শরিয়াহ’ আইন অনুযায়ী।
সূত্রগুলো জানিয়েছে, তালেবান নেতারা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে কাজ করতে চান। এ জন্য আফগানিস্তান নিয়ে বিশ্বের উদ্বেগগুলো দূর করতে চান তারা।
দুই দশক পর আবার আফগানিস্তান দখল করে তালেবান জানায়, তারা ২০ বছর আগের অবস্থানে নেই। সহনশীলতার কথা বলেছিল কট্টর ইসলামি গোষ্ঠীটি। শত্রুদের সবাইকে ক্ষমা করে দেয়ার কথা জানায় তারা। সবাইকে নিয়ে অন্তর্ভুক্তিমূলক সরকার গঠনের আশ্বাস দেয়। সরকারে নারী প্রতিনিধিত্ব রাখারও ইঙ্গিত দেয়।
তালেবানের এসব আশ্বাসের বাস্তবের কোনো মিল পাওয়া যাচ্ছে না। এর মধ্যে তালেবান যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ঘোষণা করেছে, সেখানে বেশির ভাগ সদস্যই পশতু জাতিগোষ্ঠীর; মন্ত্রিসভায় নেই কোনো নারী সদস্য। এমনকি নারী শিক্ষার্থীদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেও মানা করে দিয়েছে তারা।