আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুল গত মাসে তালেবানের দখলে যাওয়ার পর বিদেশি কর্মকর্তারা দেশটি ছেড়ে পালিয়ে যান।
আল-জাজিরাকে দেয়া সাক্ষাৎকারে ওইসব কর্মকর্তাকে দেশে ফেরার আহ্বান জানিয়েছেন আফগানিস্তানের ভারপ্রাপ্ত নতুন প্রধানমন্ত্রী মোল্লা মোহাম্মদ হাসান আখুন্দ।
আখুন্দ বলেন, ‘কূটনীতিক, দূতাবাস ও ত্রাণসহায়তা দানকারী সংস্থার সুরক্ষা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে আফগানিস্তানের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।
‘অন্তর্বর্তী সরকার এ অঞ্চল ও এর বাইরের দেশগুলোর সঙ্গে ইতিবাচক ও শক্তিশালী সম্পর্ক প্রতিষ্ঠায় আগ্রহী।’
তালেবানের প্রতিষ্ঠাতা মোল্লা ওমরের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ও রাজনৈতিক উপদেষ্টা ছিলেন আখুন্দ।
তিনি বলেন, ‘আফগানিস্তানের আজকের ঐতিহাসিক মুহূর্তের জন্য অনেক অর্থ ব্যয় ও প্রাণহানি হয়েছে। এর জন্য চড়া মূল্য দিতে হয়েছে আমাদের।‘দেশে দীর্ঘদিন ধরে চলা হত্যা, রক্তপাত ও জনমনে বিদ্বেষের অধ্যায় আজ শেষ।’
২০০১ সালে বিদেশি শক্তি আফগানিস্তানে তাদের ঘাঁটি গাড়ার পর যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা সমর্থিত আফগান সরকারের পক্ষে যারা কাজ করেছেন, তাদের সাধারণ ক্ষমার অঙ্গীকারও পুনর্ব্যক্ত করেন আখুন্দ।
তিনি বলেন, ‘কোনো আফগান এখন প্রমাণ করতে পারবেন না, তিনি প্রতিহিংসার শিকার হয়েছেন।
‘চলমান উদ্বেগজনক পরিস্থিতিতে এমনটা হতে পারে। তবে তালেবান যোদ্ধারা শৃঙ্খলাবদ্ধ ও নিয়ন্ত্রিত।
‘আগের কর্মকাণ্ডের জন্য আমরা কারও ক্ষতি করিনি, ভবিষ্যতেও করব না।’
আফগানিস্তানের প্রধানমন্ত্রী আখুন্দ আরও বলেন, ‘আফগান জনগণকে আমরা আশ্বস্ত করে বলতে চাই, দেশের সমৃদ্ধি ও মঙ্গলের দিকে মনোযোগ দেবে এ সরকার।
‘আফগানিস্তানে ইসলামি ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠায় কাজ করছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এ মহান উদ্যোগে সবাইকে আমাদের সঙ্গে যোগ দেয়ার আহ্বান জানানো হচ্ছে।’
১৫ আগস্ট কাবুল দখলের পর মঙ্গলবার রাতে মোল্লা আখুন্দকে প্রধান করে সরকার গঠন করে তালেবান।
ওই দিন আফগানিস্তানের নতুন মন্ত্রিসভায় ৩৩ জনের নাম ঘোষণা করা হয়।
এদের মধ্যে ১৪ জন তালেবানের আগের শাসনামলে সরকারের বিভিন্ন দায়িত্বে ছিলেন।
নতুন সরকারে থাকা পাঁচজন গুয়ানতানামো বে কারাগারের সাবেক বন্দি। বাকি ১২ জন তালেবান প্রতিষ্ঠার পর দ্বিতীয় প্রজন্মের নেতা।
কাবুল দখলের পর সরকারে নারী অন্তর্ভুক্ত করার কথা শুরুতে তালেবান নেতারা বললেও ঘোষিত ৩৩ কর্মকর্তার মধ্যে কোনো আফগান নারীকে দেখা যায়নি।