সামরিক জান্তা সরকারকে ক্ষমতা থেকে উৎখাতে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে মিয়ানমারের ছায়া সরকার।
দেশটির জাতীয় ঐক্য সরকার (এনইউজি) মঙ্গলবার সকালে এ ঘোষণা দেয় বলে দ্য ইরাওয়াদ্দির প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
এনইউজির ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট দুয়া লাশি লা এক ভাষণে জনগণের উদ্দেশে বলেন, ‘অভ্যুত্থান নেতা মিন অং হ্লাইংয়ের নেতৃত্বাধীন সামরিক সরকারের বিরুদ্ধে মিয়ানমারের প্রতিটি প্রান্তে বিদ্রোহ গড়ে তুলতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘দেশে বেসামরিক শাসন কায়েম না হওয়া পর্যন্ত এ বিদ্রোহ চলবে।’
ওই সময় মিয়ানমারজুড়ে জরুরি অবস্থারও ডাক দেন এনইউজির ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট দুয়া।
সামরিক শাসনের অধীনে কর্মরত বিভিন্ন পেশাজীবীকে অবিলম্বে চাকরি ছাড়ারও আহ্বান জানান তিনি।
পাশাপাশি জনগণকে ভ্রমণ থেকে বিরত থাকারও অনুরোধ জানান দুয়া।
নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের হটিয়ে মিয়ানমারে সামরিক শাসন শুরুর সাত মাস পর সশস্ত্র যুদ্ধের ডাক দিল দেশটির ছায়া সরকার।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে সামরিক অভ্যুত্থানের পর এপ্রিলে ক্ষমতাচ্যুত ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্র্যাসির (এনএলডি) আইনপ্রণেতা ও দলটির জাতিগত মিত্রদের নিয়ে ছায়া সরকার এনইউজি গঠন করা হয়।
প্রতিষ্ঠার পর মিয়ানমারের জনগণ ছাড়াও বিভিন্ন দেশের সমর্থন পেয়ে আসছে এনইউজি।
এক সপ্তাহ পর নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।
এই এক সপ্তাহে মিয়ানমারে সংঘর্ষ বাড়লে স্বাভাবিকভাবেই তা নিয়ে জাতিসংঘের সভায় আলোচনা হবে।
সেনাশাসনের বিরুদ্ধে ডাকা জনগণের অসহযোগ আন্দোলনে গত কয়েক মাসে মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে প্রায় ৯০০ মানুষ প্রাণ হারান। কারাগারে বন্দি রয়েছেন প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার মানুষ।
সামরিক জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে অস্ত্র তুলে নিয়েছে মিয়ানমারের অনেক তরুণ।
একই সঙ্গে সামরিক শাসনবিরোধী আন্দোলনের প্রতি সংহতি জানাতে মিয়ানমারের কচিন ও কারেন প্রদেশের বিভিন্ন জাতিগত সম্প্রদায়ের সঙ্গে লড়াই চলছে দেশটির সেনাবাহিনীর।
১ ফেব্রুয়ারি সামরিক অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ক্ষমতা দখল করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। জারি করা হয় জরুরি অবস্থা।
ওই সময় সামরিক নেতাদের হাতে গৃহবন্দি হন দেশটির নির্বাচিত নেতা ও শান্তিতে নোবেলজয়ী অং সান সু চি, প্রেসিডেন্ট উইন মিন্টসহ এনএলডির বেশ কয়েকজন মন্ত্রী।