জাতিসংঘে নিযুক্ত মিয়ানমারের দূত কিয়াও মোয়ে তুনকে হত্যার ষড়যন্ত্রের অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্রে দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
বিবিসির প্রতিবেদনে জানানো হয়, কিয়াও মোয়ে তুনকে ভয় দেখিয়ে পদত্যাগে বাধ্য করতে চেয়েছিলেন ওই দুই ব্যক্তি। এ জন্য ভাড়াটে গুন্ডা দিয়ে তার ওপর হামলার পরিকল্পনা করা হয়। উদ্দেশ্য ছিল তাকে হত্যা বা আহত করা।
নিউ ইয়র্কে অ্যাটর্নির কার্যালয় জানিয়েছে, গ্রেপ্তার দুজনই মিয়ানমারের নাগরিক। তারা হলেন ফিও হেইন তুত ও ইয়ে হেইন জাও।
চলতি বছরের শুরুতে ২৮ বছর বয়সী জাও একটি অ্যাপের মাধ্যমে ২০ বছর বয়সী তুতকে চার হাজার ডলার পাঠান। কিয়াও মোয়ে তুনের ওপর হামলার জন্য অগ্রিম হিসেবে দেয়া হয় বিপুল এ অর্থ।
অভিযুক্ত ষড়যন্ত্রকারীদের স্থানীয় সময় শুক্রবার রাতেই নিউ ইয়র্কের একটি আদালতে নেয়ার কথা।
অ্যাটর্নি অড্রে স্ট্রস শুক্রবার এক বিবৃতিতে জানান, যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে পরিকল্পিত হামলার মাধ্যমে জাতিসংঘে নিযুক্ত মিয়ানমারের দূতকে গুরুতর আহত বা হত্যা করতে চেয়েছিলেন তুত ও জাও।
এতে উল্লেখ করা হয়, ‘সব পর্যায়ের বিদেশি কূটনীতিক ও কর্মকর্তার সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিতে অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন আমাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সহযোগীরা।’
মিয়ানমারের সামরিক শাসকের কট্টর সমালোচক কিয়াও মোয়ে তুন। তাকে জাতিসংঘে দেশটির প্রতিনিধির পদ থেকে বহিষ্কারও করেছিল সেনাবাহিনী, কিন্তু তারপরও বিশ্বের সর্ববৃহৎ আন্তর্জাতিক জোটটিতে নিজ দেশের বেসামরিক সরকারের প্রতিনিধিত্ব করা অব্যাহত রেখেছেন তিনি।
কিয়াও মোয়ে তুনের বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো প্রতিক্রিয়া এখনও জানায়নি মিয়ানমারের সেনাবাহিনী।
চলতি বছরের ১ ফেব্রুয়ারি সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে মিয়ানমারের নিয়ন্ত্রণ নেয় দেশটির সেনাবাহিনী। ক্ষমতাচ্যুত করে রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টা অং সান সু চি ও প্রেসিডেন্ট উইন মিন্তকে। তখন থেকেই আটক নেতাদের বিরুদ্ধে পরের কয়েক মাসে দুর্নীতি, রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তা লঙ্ঘনসহ বেশ কয়েকটি মামলা করা হয়েছে।
গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা পুনরুদ্ধারের দাবিতে মিয়ানমারে কয়েক মাসের নজিরবিহীন গণআন্দোলন দেখে বিশ্ব। বিক্ষোভ দমনে কঠোর নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের আক্রমণে নিহত হয় শিশুসহ নয় শতাধিক মানুষ; গ্রেপ্তার হয় কয়েক হাজার।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে সু চির দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসির (এনএলডি) আইনপ্রণেতা, সদস্যরাও আছেন।