বহুজাতিক প্রযুক্তি জায়ান্ট মাইক্রোসফটের ওপর চীন সাইবার হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ করেছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন।
মাইক্রোসফট এক্সচেঞ্জের একাধিক সার্ভারে চলতি বছরের এ হামলার শিকার হয়েছে সারা বিশ্বের ৩০ হাজারের বেশি প্রতিষ্ঠান।
বিবিসির প্রতিবেদনে জানানো হয়, চীনসংশ্লিষ্ট একটি প্রতিষ্ঠান হাফনিউম গত জানুয়ারিতে এ হামলা শুরু করে। সে সময় মাইক্রোসফট এক্সচেঞ্জের সার্ভারে অনুপ্রবেশ করে হ্যাকাররা। পরে আবার সেগুলোর নিয়ন্ত্রণ ফিরিয়েও দেয়।
ধারণা করা হচ্ছে, বিভিন্ন প্রতিরক্ষা প্রতিষ্ঠান, থিংক ট্যাঙ্ক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যুক্ত মাইক্রোসফট এক্সচেঞ্জের সুনির্দিষ্ট কিছু সার্ভারে অনুপ্রবেশ করেছে হ্যাকাররা।
যুক্তরাজ্যের অভিযোগ, এর মাধ্যমে মূলত বড় পরিসরে গুপ্তচরবৃত্তি শুরু হয়েছে। ব্যক্তিগত তথ্য ও মেধাসত্ত্ব চুরিও এর আওতায় পড়েছে।
শুরুতে পুরো বিষয়টিকে বেইজিংয়ের অন্যান্য গুপ্তচরবৃত্তির মতোই একটি অভিযান মনে করা হচ্ছিল। তবে ফেব্রুয়ারির একটি ঘটনায় সদ্য আবিষ্কৃত এই সাইবার হামলার বিশেষত্ব উদঘাটিত হয়।
তদন্ত কর্মকর্তারা জানান, প্রধান প্রধান সব শিল্প ও সরকারি প্রতিষ্ঠানের সাইবার নিরাপত্তার ফাঁকফোকরগুলোকে লক্ষ্য করেছে চীনা হ্যাকাররা।
পশ্চিমা নিরাপত্তা বাহিনীগুলোর ধারণা, গুপ্তচরবৃত্তি থেকে অনেকটা সরে গিয়ে এখন সাইবার হামলার মাধ্যমে সরাসরি আক্রমণ ও তথ্য চুরিকে লক্ষ্য করেছে চীন। কিন্তু কেন, সে বিষয়টি এখনও স্পষ্ট নয়।
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিরুদ্ধে আগে থেকেই বড় পরিসরে গুপ্তচরবৃত্তি ও বেপরোয়া আচরণের অভিযোগ ছিল পশ্চিমা বিশ্বের।
এসব অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে চীন। বরং সাইবার অপরাধের বিরুদ্ধে নিজেদের অবস্থান দাবি করেছে বেইজিং।
এ ঘটনার পর চীনের বিরুদ্ধে সাইবার অপতৎপরতাবিষয়ক অতিরিক্ত ব্যবস্থা নেয়া হতে পারে বলে জানিয়েছে হোয়াইট হাউজ।
এ ধরনের হামলা নিরাপত্তা ঝুঁকির পাশাপাশি বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের জন্য বড় ধরনের অর্থনৈতিক ক্ষতির কারণ হতে পারে বলে শঙ্কা জানিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন।
বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছে জাপান, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা ও নিউজিল্যান্ড। আন্তর্জাতিক প্রতিরক্ষা জোট ন্যাটোর সঙ্গে এক যৌথ বিবৃতিতে এ বিষয়ে একাত্মতাও জানিয়েছে দেশগুলো।