বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট আতঙ্কে বিধিনিষেধ ফিরছে দেশে দেশে

  •    
  • ২৭ জুন, ২০২১ ১২:৩০

বেশির ভাগ ধনী দেশে টিকা কার্যক্রমের মাধ্যমে দৈনিক সংক্রমণ অনেকটা কমিয়ে আনা হয়েছে। কিন্তু ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের কারণে পরিস্থিতি যেকোনো সময় উল্টে যেতে পারে বলে উদ্বিগ্ন দেশগুলো।

রূপ পরিবর্তিত করোনাভাইরাসের ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের বিস্তার রোধে তৎপরতা শুরু করেছে বাংলাদেশ-ইন্দোনেশিয়া থেকে শুরু করে অস্ট্রেলিয়া, ইসরায়েল পর্যন্ত বিভিন্ন দেশ। আবার আরোপ করা হচ্ছে নানা বিধিনিষেধ।

এ পর্যন্ত করোনার পরিবর্তিত রূপের ও ভিন্ন বৈশিষ্ট্যের যত ধরনের ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে, তার মধ্যে ডেল্টা সবচেয়ে বেশি ছোঁয়াচে।

মহামারির এ পর্যায়ে দেশে দেশে সংক্রমণ বাড়তে থাকার জন্য দায়ী করা হচ্ছে এই ভ্যারিয়েন্টকে।

করোনাভাইরাস প্রতিরোধে বিদ্যমান টিকাগুলো ডেল্টার বিরুদ্ধে কতটা কার্যকর, তা নিয়েও প্রশ্ন তৈরি হয়েছে।

এমন পরিস্থিতিতে জোরদার টিকা কার্যক্রম সত্ত্বেও চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে বিভিন্ন দেশের মহামারি পূর্ববর্তী স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরার চেষ্টা।

আল-জাজিরার প্রতিবেদনে জানানো হয়, বেশির ভাগ ধনী দেশে টিকা কার্যক্রমের মাধ্যমে দৈনিক সংক্রমণ অনেকটা কমিয়ে আনা হয়েছে। কিন্তু ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের কারণে পরিস্থিতি যেকোনো সময় উল্টে যেতে পারে বলে উদ্বিগ্ন দেশগুলো।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মহাপরিচালক টেডরোস আধানম শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন।

বিশ্বের কমপক্ষে ৮৫টি দেশে শনাক্ত হয়েছে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট। পর্যাপ্ত টিকাদান না করা দেশগুলোতে দ্রুতগতিতে বাড়ছে এর বিস্তার।

এমন পরিস্থিতিতে চলতি সপ্তাহ থেকে বাংলাদেশে আবারও কমপক্ষে এক সপ্তাহের জন্য জাতীয় পর্যায়ে কঠোর লকডাউন শুরু হতে যাচ্ছে।

অস্ট্রেলিয়ায় ৫০ লাখ বাসিন্দার বৃহত্তম শহর সিডনিতে এরই মধ্যে শুরু হয়েছে দুই সপ্তাহের কঠোর লকডাউন।

নিকটতম প্রতিবেশী অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে কোয়ারেন্টিনমুক্ত ভ্রমণ ব্যবস্থা তিন দিনের জন্য স্থগিত করেছে নিউজিল্যান্ড।

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ ইন্দোনেশিয়ায় শনিবার রেকর্ড ২১ হাজার মানুষের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। করোনা প্রতিরোধী টিকার দুই ডোজ নিয়ে ফেলার পরও চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের ভাইরাসটিতে আক্রান্ত ও মৃত্যুর ঘটনায় শঙ্কিত প্রশাসন।

গত এপ্রিলে ভারতে প্রথম শনাক্ত হয় ভিন্ন বৈশিষ্ট্যের ডেল্টা।

স্বাস্থ্যবিদরা বলছেন, ভাইরাসটি এত বেশি ছোঁয়াচে যে, একটি জনগোষ্ঠীর মধ্যে এর বিস্তার নিয়ন্ত্রণে দ্রুততম সময়ে টিকার আওতায় আনতে হবে কমপক্ষে ৮০ শতাংশ মানুষকে।

অথচ বিশ্বের ধনী দেশগুলো চলতি বছরেও ৮০ শতাংশ নাগরিককে টিকার আওতায় আনতে প্রস্তুত নয়।

যুক্তরাজ্যে করোনার সাম্প্রতিক শনাক্তের ৯০ শতাংশ এবং যুক্তরাষ্ট্রে শনাক্ত ৩০ শতাংশই ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট।

২০১৯ সালের ডিসেম্বরে প্রথম অস্তিত্ব জানা যায় মানবদেহে সংক্রামক করোনাভাইরাসের নতুন প্রজাতির। এরপর থেকে বিভিন্ন সময়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ভাইরাসটির রূপ পরিবর্তিত নতুন নতুন ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হচ্ছে।

এসব ভ্যারিয়েন্টের মধ্যে যুক্তরাজ্যে প্রথম শনাক্ত আলফা ভ্যারিয়েন্টের (বি.১.১.৭) সংক্রমণের মাত্রা নিয়ে উদ্বেগ দেখা দেয়। কারণ ২০১৯ সালে আবিষ্কৃত করোনার চেয়ে ৭০ শতাংশ বেশি সংক্রামক ছিল নতুন ভ্যারিয়েন্টটি।

ইউরোপের গবেষকরা বলছেন, আলফার চেয়েও ৪০ থেকে ৬০ শতাংশ বেশি সংক্রামক ডেল্টা।

স্বাস্থ্যবিধি শিথিল বলে আগস্ট নাগাদ ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোতে করোনা সংক্রমণের ৯০ শতাংশ ডেল্টা হবে বলে সতর্ক করেছেন বিজ্ঞানীরা।

এ অবস্থায় স্পেন, নেদারল্যান্ডসসহ বিভিন্ন দেশে অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধি শিথিল থাকলেও মাস্ক পরার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

লন্ডন স্কুল অফ হাইজিন অ্যান্ড ট্রপিক্যাল মেডিসিনের টিকা বিশেষজ্ঞ ড. অ্যানেলিস ওয়াইল্ডার স্মিথ বলেন, ‘ডেল্টা বেশি মানুষকে আক্রান্ত করেছে। এটি দ্রুত ছড়াতে সক্ষম। ভারতের পর অস্ট্রেলিয়া, ইন্দোনেশিয়া আর যুক্তরাজ্যেও এর উপস্থিতি মিলেছে।

‘আমার ধারণা, এখন ইউরোপ আর আমেরিকাজুড়ে ছড়িয়ে পড়বে ডেল্টা।’

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভাইরাসের যে অংশটির মাধ্যমে মানবদেহের সঙ্গে এটি আটকে থাকে, রূপ পরিবর্তনের মাধ্যমে তার আকৃতি বদলে যাচ্ছে।

এর মাধ্যমে করোনা প্রতিরোধী বিদ্যমান টিকাকে ফাঁকি দিয়ে মানবশরীরে জীবিতই থেকে যাচ্ছে সেটি।

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ডেল্টার বিরুদ্ধে বিদ্যমান টিকা কম কার্যকর। কম কার্যকারিতা পাওয়া যায় দ্বিতীয় ডোজ নেয়ার পর।

বিশ্বে এখন পর্যন্ত টিকা কার্যক্রমে সবচেয়ে সফল ইসরায়েলেও কয়েক দিন ধরে বাড়ছে সংক্রমণ। মাস্ক ব্যবহারের নির্দেশ শিথিলের পর থেকেই দেশটিতে করোনার সংক্রমণ ঊর্ধ্বমুখী।

আফ্রিকার ১২টি দেশে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের কারণে হাসপাতালে রোগী ভর্তির সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে বলে নিশ্চিত করেছে অঞ্চলটির রোগ প্রতিরোধ ও প্রশমন কেন্দ্র।

পুরো অঞ্চলে টিকাগ্রহীতার হার মোট জনগোষ্ঠীর মাত্র এক শতাংশ, যা সারা বিশ্বে অঞ্চলের হিসাবে সর্বনিম্ন।

এ বিভাগের আরো খবর