আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহালের পর জাতিসংঘের পারমাণবিক সংস্থা আইএইএ-এর সঙ্গে সহযোগিতা এখন আর প্রাসঙ্গিক নয় বলে ঘোষণা দিয়েছে ইরান।
রোববার দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি বলেন, কায়রো চুক্তির অধীনে আইএইএর সঙ্গে আমাদের সহযোগিতা আর প্রাসঙ্গিক নয়।
গত সেপ্টেম্বর মাসে জাতিসংঘ সংস্থার সঙ্গে ইরান এক চুক্তি স্বাক্ষর করেছিল, যার আওতায় আন্তর্জাতিক পরিদর্শকদের আবারও ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় প্রবেশাধিকার দেওয়ার কথা ছিল।
তবে জুন মাসে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের হামলার পর তেহরান এই সহযোগিতা স্থগিত করে।
ইরান জানায়, ব্রিটেন, ফ্রান্স ও জার্মানি ২০১৫ সালের পারমাণবিক চুক্তির অংশীদার হওয়া সত্ত্বেও ইরানের ওপর জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা ফিরিয়ে আনার পদক্ষেপ নিয়েছে।
এর ফলে কায়রো চুক্তি ইরানের কাছে অর্থহীন হয়ে গেছে।
আরাঘচি বলেন, তিন ইউরোপীয় দেশ মনে করেছিল নিষেধাজ্ঞা হুমকি দিয়ে তারা আমাদের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে পারবে। কিন্তু তারা এখন নিজেরাই দেখেছে, এতে তারা তাদের কূটনৈতিক প্রভাব হারিয়েছে।
তিনি আরও যোগ করেন যে, ভবিষ্যতের পারমাণবিক আলোচনায় ইউরোপীয় তিন দেশের ভূমিকা অনেক কমে যাবে।
যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের নেতৃত্বে পশ্চিমা দেশগুলো অভিযোগ করেছে যে, ইরান গোপনে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করছে। তারা ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণকে লাল রেখা হিসেবে চিহ্নিত করেছে।
তবে ইরান এসব অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করে বলছে, তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি কেবল নাগরিক উদ্দেশে এবং তারা পরমাণু অস্ত্র নিরস্ত্রীকরণ চুক্তি (এনপিটি) অনুযায়ী সমৃদ্ধকরণের অধিকার রাখে।
কিছু ইরানি সংসদ সদস্য এনপিটি থেকে বেরিয়ে আসার প্রস্তাব দিলেও প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান জানিয়েছেন, ইরান এখনো চুক্তির প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকবে।
আরাঘচি জানান, আইএইএর সঙ্গে ভবিষ্যৎ সহযোগিতা নিয়ে তেহরানের সিদ্ধান্ত শিগগিরই ঘোষণা করা হবে। তবে তিনি বলেন, কূটনীতির পথ এখনো পুরোপুরি বন্ধ হয়নি।
ইরান ও যুক্তরাষ্ট্র গত এপ্রিলে নতুন একটি পারমাণবিক চুক্তি নিয়ে আলোচনা শুরু করেছিল। কিন্তু জুনে ইসরায়েলের ইরানের পারমাণবিক, সামরিক ও আবাসিক স্থাপনায় হামলার পর সেই আলোচনা বন্ধ হয়ে যায়।
তেহরান যুক্তরাষ্ট্রকে অভিযুক্ত করে বলেছে, তারা কূটনীতি ব্যাহত করছে এবং আলোচনায় ফেরার আগে ইরানের অধিকার স্বীকৃতি ও নিরাপত্তা নিশ্চয়তা দিতে হবে।