বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

এবার ভারত যুদ্ধ শুরু করলে ধ্বংসাবশেষে চাপা পড়বে: খাজা আসিফ

  • নিউজবাংলা ডেস্ক   
  • ৫ অক্টোবর, ২০২৫ ২১:৩৫

ভারতের নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের সাম্প্রতিক মন্তব্যকে ‘উসকানিমূলক’ আখ্যা দিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ। রোববার ভোরে এক্সে (পূর্বে টুইটার) দেওয়া পোস্টে তিনি বলেন, এবার ভারত নিজ দেশের যুদ্ধবিমানের ধ্বংসাবশেষের নিচেই সমাধিস্থ হবে, ইনশাআল্লাহ।

আসিফ বলেন, ভারতের সামরিক ও রাজনৈতিক নেতাদের সাম্প্রতিক মন্তব্য তাদের ‘হারানো বিশ্বাসযোগ্যতা পুনরুদ্ধারের ব্যর্থ প্রচেষ্টা। তার ভাষায়, এই ধরনের বিবৃতি ভারতের নেতৃত্বের শীর্ষ পর্যায়ে তীব্র চাপের ইঙ্গিত দেয়।

তিনি লিখেছেন, এমন এক সুস্পষ্ট ৬-০ পরাজয়ের পর যদি তারা আবারও চেষ্টা করে, তাহলে পাকিস্তানের স্কোর আরও ভালো হবে। আসিফ দাবি করেন, ওই পরাজয়ের পর ভারতের জনমত এখন ক্ষমতাসীন দলের বিরুদ্ধে চলে গেছে, যা দেশটির নেতাদের বক্তব্যেও প্রতিফলিত হচ্ছে।

প্রতিরক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, পাকিস্তান আল্লাহর নামে প্রতিষ্ঠিত একটি রাষ্ট্র, আর আমাদের রক্ষাকারীরা আল্লাহর সৈনিক। এইবার ভারত, ইনশাআল্লাহ, নিজেদের ভূপাতিত যুদ্ধবিমানের ধ্বংসাবশেষের নিচেই সমাধিস্থ হবে। আল্লাহু আকবার।

এর আগে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর মুখপাত্রও ভারতের নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের একই ধরনের মন্তব্যের জবাবে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিলেন।

ভারতের যুদ্ধোত্তেজনামূলক বক্তব্যের জবাবে পাকিস্তানের সশস্ত্র বাহিনী সতর্ক করে বলেছে, ভারতের জ্যেষ্ঠ নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের ‘উসকানিমূলক ও যুদ্ধবাজ মন্তব্য’ দক্ষিণ এশিয়ায় ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনতে পারে।

ইন্টার-সার্ভিসেস পাবলিক রিলেশনস (আইএসপিআর) এক বিবৃতিতে বলেছে, এসব মন্তব্য আসলে আগ্রাসনের অজুহাত তৈরি করার নতুন প্রচেষ্টা, যা আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য গুরুতর হুমকি তৈরি করবে।

এক দিন আগে ভারতের বিমানবাহিনীর প্রধান অমরপ্রীত সিং দাবি করেন, চলতি বছরের মে মাসে দুই পরমাণু শক্তিধর প্রতিবেশীর মধ্যে তীব্র সংঘর্ষের সময় ভারত পাকিস্তানের পাঁচটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে। সেগুলোর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি এফ-১৬ ও চীনের তৈরি জেএফ-১৭ মডেলের যুদ্ধবিমান রয়েছে।

এ বিষয়ে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী ভারতের তীব্র সমালোচনা করে জানায়, ভারত বহু বছর ধরে নিজেকে ‘ভুক্তভোগী’ হিসেবে তুলে ধরছে। অথচ বাস্তবে তারাই দক্ষিণ এশিয়া ও এর বাইরেও সহিংসতা উসকে দিচ্ছে এবং সন্ত্রাসবাদে মদদ দিচ্ছে। আইএসপিআর জানায়, এই ভুয়া বর্ণনা এখন পুরোপুরি উন্মোচিত হয়েছে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এখন ভারতকেই ‘আন্তঃসীমান্ত সন্ত্রাসবাদের আসল মুখ’ এবং ‘আঞ্চলিক অস্থিরতার কেন্দ্রবিন্দু’ হিসেবে চেনে।

আইএসপিআর স্মরণ করিয়ে দেয়, চলতি বছরের শুরুর দিকে ভারতের আগ্রাসনই দুই পরমাণু শক্তিধর দেশকে বড় ধরনের যুদ্ধে টেনে নিয়েছিল। ভারতীয় নেতৃত্ব এখনো তাদের যুদ্ধবিমানের ধ্বংসাবশেষ ও পাকিস্তানের পাল্টা হামলার ভয়াবহতা ভুলে গেছে বলে উল্লেখ করে সংস্থাটি।

ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ও তিন বাহিনীর প্রধানদের সাম্প্রতিক বক্তব্যের প্রসঙ্গে আইএসপিআর সতর্ক করে জানিয়েছে, যে কোনো নতুন সংঘাত দক্ষিণ এশিয়ায় বিপর্যয়কর ধ্বংস ডেকে আনতে পারে।

সংস্থাটি আরও জানিয়েছে, যদি ভারত কোনো আগ্রাসন শুরু করে, পাকিস্তান কখনো পিছু হটবে না; বরং দৃঢ় প্রতিশ্রুতিতে দ্রুত, কঠোর ও বিধ্বংসী জবাব দেবে।

আইএসপিআর সতর্ক করে বলেছে, যারা নতুন ‘স্বাভাবিক অবস্থা’ তৈরি করতে চায়, তাদের জানা উচিত- পাকিস্তানও তার জবাবে এক নতুন স্বাভাবিকতা তৈরি করেছে, যা হবে দ্রুত, নির্ভুল ও বিধ্বংসী।

ভারতের পক্ষ থেকে পাকিস্তানকে মানচিত্র থেকে মুছে ফেলার হুমকির প্রতিক্রিয়ায় আইএসপিআর বলেছে, ভারতকে জানতে হবে, যদি এমন পরিস্থিতি আসে, তবে এই মুছে ফেলা হবে পারস্পরিক।

এদিকে, পাকিস্তানি নিরাপত্তা সূত্রগুলো ভারতের এই হুমকিকে ‘ফাঁকা বুলি’ বলে অভিহিত করেছে ও জানিয়েছে, পাকিস্তানের সেনাবাহিনী দেশ রক্ষায় সম্পূর্ণ প্রস্তুত।

চলতি বছরের ২২ এপ্রিল ভারত অধিকৃত কাশ্মিরের পহেলগামে সন্ত্রাসী হামলা ঘটে। এতে ২৬ জন পর্যটক নিহত হন। ভারত অভিযোগ করে, এ হামলায় পাকিস্তান সন্ত্রাসীদের সহায়তা করেছে। তবে পাকিস্তান অভিযোগ নাকচ করে ঘটনাটির আন্তর্জাতিক তদন্তের দাবি জানায়।

পরিস্থিতি উত্তপ্ত হলে গত ৬ মে পাকিস্তান ও পাকিস্তান-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে (আজাদ কাশ্মির) হঠাৎ বিমান হামলা চালায় ভারত। এর নাম দেওয়া হয় ‘অপারেশন সিঁদুর’। ভারতের দাবি, আজাদ কাশ্মীরে থাকা সন্ত্রাসী ঘাঁটিগুলো লক্ষ্য করে হামলা চালায় তারা।

ভারতের হামলার জবাবে পাকিস্তান ‘অপারেশন বুনিয়ানুন মারসুস’ চালায়। কয়েকদিন ধরে চলা এ সংঘাতে দুই পক্ষই যুদ্ধবিমান, ড্রোন, ক্ষেপণাস্ত্র ও দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে। পরিস্থিতি চরম আকার ধারণ করলে সর্বাত্মক যুদ্ধের আশঙ্কা দেখা দেয়। অবশেষে ১০ মে দুই দেশ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়।

সংঘাত চলাকালে পাকিস্তানি বাহিনী দাবি করে, ভারতের ‘অপারেশন সিঁদুর’র জবাবে গত ৭ মে রাতে তারা পাঁচটি ভারতীয় যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে। এর মধ্যে তিনটি ছিল ফ্রান্সের তৈরি রাফাল, একটি রাশিয়ার তৈরি মিগ-২৯ ও একটি এসইউ-৩০।

সংঘাত শেষে পাকিস্তান আবারও দাবি করে, তারা ভারতের মোট ছয়টি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে, যার মধ্যে ফ্রান্সের রাফালও রয়েছে। কিছু ক্ষতির কথা স্বীকার করলেও ছয়টি বিমান হারানোর দাবি অস্বীকার করেছে ভারত।

এ বিভাগের আরো খবর