কানাডায় ট্রাক হামলায় নিহত মুসলমান পরিবারটির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো, অন্য রাজনীতিকসহ কয়েক হাজার মানুষ।
ওন্টারিও প্রদেশের লন্ডন শহরে মঙ্গলবার আয়োজন হয় এ কর্মসূচির।
টরন্টো সিটিভি নিউজের প্রতিবেদনে জানানো হয়, নিহতদের প্রতি শোক জানাতে অটোয়া থেকে লন্ডনে যান প্রধানমন্ত্রী ট্রুডোও।
শ্রদ্ধা জানিয়েছেন ওন্টারিওর প্রিমিয়ার ডাউগ ফোর্ডসহ আরও অনেকে। তিন দিনের শোক চলছে শহরটিতে।
শোকসভায় লন্ডনের একটি মসজিদের সভাপতি বিলাল রাহেল বলেন, ‘এই শহর আমাদের। কেবল গায়ের রং, ধর্মবিশ্বাস কিংবা জন্মস্থান আলাদা বলে কাউকে নিজেদের থেকে ভিন্ন ভাববেন না, ভাবতে দেবেন না...এই শহর আমাদের, এখান থেকে আমরা কোথাও যাব না।’
লন্ডনের হাইড পার্ক এলাকায় স্থানীয় সময় রোববার সন্ধ্যায় রাস্তা পার হওয়ার জন্য অপেক্ষারত পাঁচ মুসলমানের ওপর ট্রাক তুলে দেন চালক।
এতে পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত পরিবারটির চার সদস্যের প্রাণ যায় ঘটনাস্থলেই। হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছে বেঁচে যাওয়া একমাত্র সদস্য নয় বছর বয়সী শিশু।
পরিকল্পিতভাবে এবং মুসলমান জেনেই পরিবারটির ওপর হামলা চালানো হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে লন্ডন পুলিশ। পরিবারটির সঙ্গে ট্রাকচালকের কোনো পূর্বপরিচয় ছিল না।
ট্রাকচালক ২০ বছর বয়সী নাথানিয়েল ভেল্টম্যানকে গ্রেপ্তার ও চারটি হত্যা মামলাসহ পাঁচটি মামলা করা হয়েছে।
পার্লামেন্টে দেয়া ভাষণে মঙ্গলবার ট্রুডো এ হামলাকে আখ্যা দেন ‘মুসলমানদের প্রতি বিদ্বেষপ্রসূত হামলা’ বলে।
অভিবাসীবান্ধব কানাডার সমাজে মুসলমানবিদ্বেষের অস্তিত্ব অস্বীকার করার সুযোগ নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘কেউ যদি দাবি করে যে এই দেশে বর্ণবাদ বা ঘৃণা বলে কোনো কিছুর অস্তিত্ব নেই, তাকে আমি বলতে চাই, হাসপাতালে মৃতপ্রায় অবস্থায় থাকা শিশুটি যে সহিংসতার শিকার, সেটার কী ব্যাখ্যা দেবেন আপনারা?
‘নিহত ব্যক্তিদের স্বজনের চোখের দিকে তাকিয়ে আমরা কীভাবে বলতে পারি যে ইসলামভীতি বলে কিছু নেই?’
কানাডার সরকারি পরিসংখ্যান সংস্থা চলতি বছরের মার্চে জানিয়েছে, ২০১৯ সালে মুসলমানদের ওপর ১৮১টি হামলার ঘটনা নথিবদ্ধ করে পুলিশ। ২০১৮ সালে এ সংখ্যা ছিল ১৬৬। কেবল ধর্মপরিচয়ের কারণে হামলার শিকার হয়েছেন তারা।
তবে কানাডার ইতিহাসে মুসলমান সম্প্রদায়ের ওপর সবচেয়ে ভয়াবহ হামলাটি হয় ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে। কিউবেকের একটি মসজিদে এলোপাতাড়ি গুলি চালিয়ে ছয়জনকে হত্যা করে ঘাতক।