বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

‘কানাডায় মুসলমানবিদ্বেষ অস্বীকারের সুযোগ নেই’

  •    
  • ৯ জুন, ২০২১ ০৯:৪২

ট্রুডো বলেন, ‘কেউ যদি দাবি করে যে এই দেশে বর্ণবাদ বা ঘৃণা বলে কোনো কিছুর অস্তিত্ব নেই, তাকে আমি বলতে চাই, হাসপাতালে মৃতপ্রায় অবস্থায় থাকা শিশুটি যে সহিংসতার শিকার, সেটার কী ব্যাখ্যা দেবেন আপনারা?’

অভিবাসীবান্ধব কানাডার সমাজে ইসলামভীতি, মুসলমানবিদ্বেষ, বর্ণবাদ ও ঘৃণার অস্তিত্ব অস্বীকার করার সুযোগ নেই বলে মন্তব্য করেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো।

এবিসি নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়, কানাডায় মুসলমান পরিবারের ওপর ট্রাক উঠিয়ে দেয়া সন্ত্রাসী হামলা ছিল বলেও স্বীকার করেছেন তিনি।

পার্লামেন্টে দেয়া ভাষণে মঙ্গলবার ট্রুডো এ হামলাকে আখ্যা দেন ‘মুসলমানদের প্রতি বিদ্বেষপ্রসূত হামলা’ বলে।

স্থানীয় সময় রোববার সন্ধ্যায় ওন্টারিও প্রদেশের লন্ডন শহরে ওই হামলায় প্রাণ যায় একই পরিবারের চার সদস্যের।

তিনি বলেন, ‘এটি একটি সন্ত্রাসী হামলা ছিল। বিদ্বেষপ্রসূত এ হামলার শিকার ব্যক্তিরা আমাদের সমাজেরই অবিচ্ছেদ্য অংশ।’

পরিবারটির জীবিত উদ্ধার হওয়া একমাত্র সদস্য ৯ বছরের শিশু ফায়েজ গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তবে সে বেঁচে যাবে বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

ট্রুডো বলেন, ‘কেউ যদি দাবি করে যে এই দেশে বর্ণবাদ বা ঘৃণা বলে কোনো কিছুর অস্তিত্ব নেই, তাকে আমি বলতে চাই, হাসপাতালে মৃতপ্রায় অবস্থায় থাকা শিশুটি যে সহিংসতার শিকার, সেটার কী ব্যাখ্যা দেবেন আপনারা?

‘নিহত ব্যক্তিদের স্বজনের চোখের দিকে তাকিয়ে আমরা কীভাবে বলতে পারি যে ইসলামভীতি বলে কিছু নেই?’

পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত পরিবারটির স্বজনরা এক বিবৃতিতে হতাহত ব্যক্তিদের পরিচয় প্রকাশ করেছেন।

নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে ছিলেন ৪৬ বছর বয়সী সালমান আফজাল, তার স্ত্রী ৪৪ বছর বয়সী মাদিহা, তাদের ১৫ বছর বয়সের মেয়ে যমুনা ও ৭৪ বছর বয়সী মা, যার নাম প্রকাশ করা হয়নি।

১৪ বছর আগে পাকিস্তান থেকে কানাডায় গিয়ে স্থায়ী বসবাস শুরু করেছিল তারা।

পুলিশ জানিয়েছে, সন্ধ্যায় হাঁটতে বেরিয়েছিল পরিবারটি। লন্ডনের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের হাইড পার্ক রোডে রাস্তা পার হওয়ার অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে থাকার সময় তাদের ওপর ট্রাক উঠিয়ে দেন চালক।

কানাডার প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এই মহামারির মধ্যে বাড়িতে থেকে হাঁপিয়ে কিংবা সারা দিনের ক্লান্তি মেটাতে অনেক মানুষ সন্ধ্যার তাজা বাতাস উপভোগে বের হন। এই পরিবারটিও তাই করছিল। কিন্তু অন্য রাতগুলোর মতো এই রাতে আর তাদের বাড়ি ফেরা হয়নি।’

এটি কোনো দুর্ঘটনা ছিল না উল্লেখ করে ট্রুডো বলেন, ‘নির্মম, নির্লজ্জ আর কাপুরুষোচিত হামলা চালিয়ে তাদের প্রাণ কেড়ে নেয়া হয়েছে…রোববারের হামলায় কানাডার নাগরিকরা ক্ষুব্ধ। আর কানাডার মুসলমানরা আতঙ্কিত।’

অনলাইন ও রাজনীতিতে উগ্রবাদী ও আক্রমণাত্মক বক্তব্য, তথ্যের অপপ্রচারের মতো বিষয়গুলোকে জাতিবিদ্বেষের জন্য দায়ী করেন ট্রুডো।

তিনি বলেন, ‘উগ্রবাদী ও আক্রমণাত্মক মন্তব্য, ভুলভাল তথ্য ছড়ানো কুৎসিত রূপ নিতে পারে, অনেক দীর্ঘমেয়াদি ও জটিল সমস্যা তৈরি করতে পারে। কখনো কখনো এগুলো বাস্তব সহিংসতার পথ খুলে দেয়।’

ওন্টারিওর হামলাকারী ২০ বছরের তরুণ ট্রাকচালক নাথানিয়েল ভেল্টম্যানকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তার বিরুদ্ধে চারটি হত্যা মামলা ও একটি হত্যাচেষ্টা মামলা করা হয়েছে।

গঠন করা হতে পারে সন্ত্রাসবাদের অভিযোগও।

পুলিশ নিশ্চিত করেছে, পরিকল্পিতভাবে ও মুসলমান জেনেই রাস্তা পার হওয়ার অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে থাকা পরিবারটির ওপর ট্রাক উঠিয়ে দিয়েছিলেন চালক ভেল্টম্যান। হতাহত ব্যক্তিদের সঙ্গে তার পূর্বপরিচয় ছিল না।

কোনো নির্দিষ্ট ‘হেইট গ্রুপের’ সঙ্গে তার সম্পৃক্ততা ছিল কি না, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটারে লিখেন, পশ্চিমা দেশগুলোতে ইসলামভীতি যে বাড়ছে, এ হামলায় সেটাই প্রমাণিত।

কানাডার সরকারি পরিসংখ্যান সংস্থা চলতি বছরের মার্চে জানিয়েছে, ২০১৯ সালে মুসলমানদের ওপর ১৮১টি হামলার ঘটনা নথিবদ্ধ করে পুলিশ। ২০১৮ সালে এ সংখ্যা ছিল ১৬৬। কেবল ধর্মপরিচয়ের কারণে হামলার শিকার হয়েছেন তারা।

তবে কানাডার ইতিহাসে মুসলমান সম্প্রদায়ের ওপর সবচেয়ে ভয়াবহ হামলাটি হয় ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে। কিউবেকের একটি মসজিদে এলোপাতাড়ি গুলি চালিয়ে ছয়জনকে হত্যা করে ঘাতক।

এ বিভাগের আরো খবর