পাকিস্তানের সিন্ধু প্রদেশে দুই ট্রেনের সংঘর্ষে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫১ জনে। আহত হয়েছে শতাধিক মানুষ।
দুর্ঘটনার ২৪ ঘণ্টা পার হলেও শেষ হয়নি উদ্ধারকাজ। ফলে প্রাণহানি আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছে প্রশাসন।
জিও টিভির প্রতিবেদনে জানানো হয়, দুর্ঘটনায় নিহত ব্যক্তিদের পরিবারপ্রতি ১৫ লাখ রুপি করে ক্ষতিপূরণ দেয়ার আশ্বাস দিয়েছে প্রশাসন।
সিন্ধুর ঘোটকিতে স্থানীয় সময় সোমবার ভোরের এ দুর্ঘটনার সময় ট্রেন দুটিতে প্রায় ১ হাজার ৪০০ আরোহী ছিলেন।
ঘোটকির এএসপি উমর তুফাইল জানান, ঘণ্টার পর ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়েও অনেক বগির ধ্বংসস্তূপে ঢোকা যায়নি। একটি বগিতেই কমপক্ষে ২৫ জন আটকে আছেন বলে জানতে পেরেছেন তারা।
ঘটনাস্থলে এখনও চলছে উদ্ধারকাজ। যোগ দিয়েছে সেনা ও আধা-সামরিক বাহিনীর সদস্যরা।
রেলওয়ের কর্মকর্তারা জানান, রাইতি ও ওবারো স্টেশনের মাঝামাঝি এলাকায় একটি ট্রেনের বেশ কয়েকটি বগি লাইনচ্যুত হয়। কিছুক্ষণ পরই দ্রুতগতিতে আসতে থাকা আরেকটি ট্রেন লাইনচ্যুত ট্রেনটিকে ধাক্কা দিলে ভয়াবহ এ দুর্ঘটনা ঘটে।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এক আরোহী স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে ঘটনার বর্ণনা দিয়ে বলেন, ‘আমরা যে ট্রেনে ছিলাম, সেটি লাইনচ্যুত হওয়ায় ছিটকে পড়ে গেছিলাম, যেন আমাদের ছুড়ে দিয়েছে কেউ। ছাদের সঙ্গে মাথা ঠুকে গিয়েছিল।
‘এর কয়েক মিনিটের মধ্যে যখন আরেকটি ট্রেন এসে ধাক্কা দিলো, তখন অবস্থা আরও শোচনীয় হয়ে যায়।’
এ দুর্ঘটনায় শোক জানিয়ে কারণ অনুসন্ধানে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান।
প্রাথমিক প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘দ্বিতীয় ট্রেনের চালক ইমার্জেন্সি ব্রেক ব্যবহারের চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু তাও ট্রেনের ইঞ্জিনটি লাইনচ্যুত অপর ট্রেনের বগিগুলোতে গিয়ে ধাক্কা মারে।’
ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক আমলে নির্মিত শতবর্ষের পুরোনো অবকাঠামোতেই এখনও পরিচালিত হচ্ছে পাকিস্তানের রেল যোগাযোগ। এ অবস্থায় দেশটিতে এ ধরনের রেল দুর্ঘটনা প্রায় নিয়মিত হয়ে দাঁড়িয়েছে।
পার্লামেন্টে দেয়া বক্তব্যে পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী ফাওয়াদ চৌধুরী দুর্ঘটনার জন্য দায়ী করেছেন দেশটির সাবেক সরকারের দুর্নীতিকে।
২০০৫ সালে একই জেলায় রেলওয়ে স্টেশনে দাঁড়িয়ে থাকা একটি ট্রেনকে ধাক্কা দেয় অতিরিক্ত যাত্রীবোঝাই ট্রেন।
দুই ট্রেনের ধ্বংসস্তূপে এসে ধাক্কা খায় আরও একটি ট্রেন। ভয়াবহ ওই দুর্ঘটনায় প্রাণ যায় ১৩০ জনের।