ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের ধাক্কায় তছনছ হয়ে গেছে ভারতের সুন্দরবনের বিস্তীর্ণ অঞ্চল। ঘরবাড়ি, গরু-বাছুর, মানুষের যা কিছু সম্বল, সবকিছু তীব্র জলের তোড়ে ভেসে গেছে।
ইয়াসের দুর্যোগের দুই সপ্তাহ পরও অনেক জায়গা জলের তলায়। নিঃস্ব অসহায় সাধারণ মানুষ ত্রাণশিবির বা অন্যত্র উঁচু জায়গায় আশ্রয় নিয়েছেন। পানিবন্দি হয়ে আছেন হাজার হাজার মানুষ।
সুন্দরবনের গোসাবা অঞ্চলের এই সব মানুষের সাহায্যার্থে ত্রাণ নিয়ে আসছেন সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থার মানুষজন। আর এদের হাত ধরে নতুন করে করোনা সংক্রমণের আশঙ্কায় গোসাবা প্রশাসন।
করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সুন্দরবনের দুর্গত মানুষদের জন্য ‘ত্রাণ আনুন, কিন্তু করোনা নয়’, এই বার্তা দিয়ে বৃহস্পতিবার থেকে যেসব খেয়াঘাট দিয়ে ত্রাণ নিয়ে গোসাবায় যাচ্ছেন, প্রশাসনের তরফে গদখালীসহ সেই সব খেয়াঘাটে প্রচার শুরু করেছে গোসাবা প্রশাসন।
শুধু প্রচারে থেমে নেই উদ্বিগ্ন প্রশাসন। ইয়াস-বিধ্বস্ত দুর্গত এলাকায় যারা ত্রাণ নিয়ে যাচ্ছেন, সেসব ত্রাণদাতাদের এন্টিজেন টেস্টের ব্যবস্থাও করেছে প্রশাসন।
গদখালীসহ যেসব বড় বড় খেয়াঘাট দিয়ে দুর্গত এলাকায় ত্রাণ নিয়ে যাচ্ছেন, সেখানে প্রশাসন এই করোনা পরীক্ষার ব্যবস্থা করেছে।
করোনা পরীক্ষার প্রতিবেদন নেগেটিভ হলে, তবেই ত্রাণ নিয়ে দুর্গত এলাকায় যাওয়ার ছাড়পত্র মিলবে। পজেটিভ হলে ত্রাণ নিয়ে ফিরে যেতে হবে।
করোনা সংক্রমণ আর ইয়াসের তাণ্ডবে নাজেহাল প্রশাসন, নতুন করে আর বিপদের মুখে পড়তে চাইছে না। বিগত কয়েক দিনে গোসাবায় করোনা সংক্রমণ বেড়েছে।
ত্রাণশিবিরে বহু মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। প্রতিদিন ত্রাণের জন্য নদীর পাড়ে লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকছেন। কোনো ধরনের করোনা বিধি মানার কোনো বালাই নেই সেখানে।
ত্রাণশিবিরে যারা আছেন, তাদের উপসর্গ দেখা দিলে পরীক্ষা করা হচ্ছে শিবিরেই। করোনা পজিটিভ হলে, পাঠানো হচ্ছে সেফহোমে।
রাজ্যে কড়া করোনা বিধিনিষেধের ফলে দৈনিক সংক্রমণ কিছুটা কমেছে। রোববারের স্বাস্থ্য দপ্তরের বুলেটিন অনুযায়ী, শেষ ২৪ ঘণ্টায় ৭ হাজার দুইজন সংক্রমিত হয়েছেন। কলকাতায় সংক্রমিত হয়েছে ৬৪৫ জন । তবে, মৃত্যুর সংখ্যা এখনও শতাধিকেই আছে।