পূর্ব আফ্রিকার দেশ রুয়ান্ডায় ১৯৯৪ সালের গণহত্যায় ফ্রান্সের দায় ছিল বলে স্বীকার করেছেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ। একই সঙ্গে দেশটির জনগণের কাছে এ জন্য ক্ষমাও চান তিনি।
রুয়ান্ডার কিগালি গণহত্যা স্মৃতিসৌধে বৃহস্পতিবার এক ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন বলে আল জাজিরার প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
১৯৯৪ সালের এপ্রিল মাসে হুতু মিলিশিয়াদের হাতে নিহত হয় প্রায় আট লাখ তুতসি ও মধ্যপন্থি হুতু।
রুয়ান্ডার বর্তমান প্রেসিডেন্ট পল কাগামের নেতৃত্বাধীন রুয়ান্ডান প্যাট্রিয়টিক ফ্রন্ট (আরপিএফ) উগান্ডা থেকে এসে দেশটির নিয়ন্ত্রণ নিলে ১০০ দিন ধরে চলমান গণহত্যার অবসান ঘটে।
নিহতদের মধ্যে আড়াই লাখ মানুষকে কিগালি স্মৃতিসৌধে সমাহিত করা হয়।
মাখোঁ বলেন, রুয়ান্ডায় গণহত্যা হতে পারে- এ সতর্কবার্তা যারা দিয়েছিলেন, ফ্রান্স তাদের কথা শোনেনি। বরং গণহত্যাকারীদের পাশে ছিল দেশটি।
তিনি বলেন, ‘বিনয় ও সম্মানের সঙ্গে আপনাদের পাশে দাঁড়িয়ে সেদিনের গণহত্যার দায় স্বীকার করতে আজ এখানে এসেছি। তবে ফ্রান্স ওই গণহত্যায় সহায়তা করেনি।’
ফরাসি প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘সত্য যাচাইয়ে অনেক সময় নিয়েছিল ফ্রান্স। রুয়ান্ডাবাসীদের এ জন্য অবর্ণনীয় যন্ত্রণা পোহাতে হয়। গণহত্যার সময় যারা প্রাণে বেঁচে গিয়েছিলেন, তারা হয়তো আমাদের ক্ষমা করতে পারবেন।’
ফ্রান্সে মাখোঁর পূর্বসূরিরা রুয়ান্ডা গণহত্যায় দায় এভাবে অকপটে স্বীকার করেননি।
রুয়ান্ডার অনেক নাগরিকের আশা ছিল, গণহত্যা বন্ধে ফ্রান্স যে ব্যর্থ হয়েছিল, তার জন্য দেশটি যেন আনুষ্ঠানিক ক্ষমা চায়।
মাখোঁর বক্তব্যের আগে কিগালি স্মৃতিসৌধ পরিচালনাকারী সংস্থা এজিস ট্রাস্টের পরিচালক ফ্রেডি মুতানগুহা বলেন, ‘ফরাসি প্রেসিডেন্ট যদি ক্ষমা চান, তা হলে তা অনেক ভালো হবে।’
রুয়ান্ডার গণহত্যা নিয়ে চলতি বছরের মার্চে ফ্রান্সের এক তদন্তকারী দল প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এতে বলা হয়, ঔপনিবেশিক মনমানসিকতা ফরাসি সরকার ও কর্মকর্তাদের অন্ধ করে দিয়েছিল। ফলে আসন্ন গণহত্যা টের না পাওয়ার গুরুতর দায় ইউরোপের দেশটির রয়েছে।
অবশ্য গণহত্যায় ফ্রান্সের সরাসরি সহযোগিতার অভিযোগ নাকচ করেছে প্রতিবেদনটি।
রুয়ান্ডার প্রেসিডেন্ট কাগামে এর আগে বলেছিলেন, গণহতায় অংশ নিয়েছিল ফ্রান্স।
গত সপ্তাহে তিনি বলেন, ফ্রান্সের তদন্তকারী দলের প্রতিবেদন তার দেশের জনগণের কাছে অনেক কিছু।