ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় ও পরিস্থিতি নজরদারি করতে মঙ্গলবার রাতেই নবান্নে যাচ্ছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার সকাল থেকে থাকবেন উপান্নের কন্ট্রোল রুমে।
মঙ্গলবার নবান্নে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, ‘পূর্ণিমার ভরা কোটালের কারণে জলস্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। ৭৪ হাজার আধিকারিক ও কর্মী দুর্যোগ মোকাবিলায় কাজ করছেন। প্রায় দুই লাখ পুলিশকর্মীকে কাজে লাগানো হয়েছে।’
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আজ ও কাল টানা নজরদারি চলবে। সুরক্ষিত জায়গায় থাকুন। প্রয়োজন হলে সেনা নামানো হবে। সব এজেন্সির সঙ্গে কথা বলে সবাইকে তৈরি রেখেছি।’
৯ লাখ মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরানো হয়েছে। ২৪ ঘণ্টা পরিস্থিতির ওপর নজরদারি চলছে। ব্লকে ব্লকে কন্ট্রোল রুম খুলে নজরদারি চলছে। ল্যান্ডফলের পরেই কতটা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বোঝা যাবে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
এদিকে আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, কলকাতায় আম্ফানের পুনরাবৃত্তি হওয়ার সম্ভাবনা নেই ।
পূর্ব মেদিনীপুরে ৯০ থেকে ১২০, দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ৮০ থেকে ৯০ এবং কলকাতায় ৭০ থেকে ৮০ কিলোমিটার বেগে প্রতি ঘণ্টায় ঝড়ো হাওয়া বইতে পারে বলে জানিয়েছে আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর।
মৌসম ভবনের খবরে বলা হয়েছে, এই মুহুর্তে ঘূর্ণিঝড় ইয়াস দীঘা থেকে ৩২০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে। আজই তা অতি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে। আগামীকাল বেলা ১২টার আগে স্থলভাগে আছড়ে পড়তে পারে ইয়াস।
দীঘায় ইয়াস মোকাবিলায় ৭০ জনের সেনাদল নামানো হয়েছে। জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা ও আধা সেনাবাহিনী মোতায়েন রয়েছে ।
আসছে ইয়াস
সাগরদ্বীপের মহিষমারী গ্রামে বাঁধ ভেঙে জল ঢুকতে শুরু করায় পূর্ব মেদিনীপুরের নয়াচরের বাসিন্দাদের পুলিশ মৎস্য দপ্তরের অতিথি নিবাসে সরিয়ে নেন।
হলদি নদী তীরের বাসিন্দাদের ত্রাণশিবিরে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। গোসাবা ব্লকের দূর্গাদুয়ানি নদীর জলস্তর বাড়ায় বাঁধ ধসে গিয়েছে। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় নদীর বাঁধ মেরামতের কাজ করছেন গ্রামবাসীরা। মাতলা নদীর জল বাড়ায় গ্রামবাসীরা বাঁধ নিরাপদ রাখার চেষ্টা করছেন মাটি, প্লাস্টিক দিয়ে ।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার বকখালি থেকে ১৬ হাজার, দীঘা থেকে এক লক্ষ ১০ হাজার বাসিন্দাকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় টুইট করেন, ‘ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় কেন্দ্রীয় বাহিনী ও সংস্থা একযোগে রাজ্যের সংস্থাগুলির সঙ্গে কাজ করছে। মমতা বন্দোপাধ্যায়ের উদ্দেশে জানাই, জীবনহানি ও সম্পত্তির ক্ষতি রুখতে হবে। ভারতীয় বিমানবাহিনী ও মৌসম ভবনের প্রশংসনীয় ভূমিকার জন্য দুর্যোগ মোকাবিলার প্রস্তুতি আরও ভালো হয়েছে। দেশের সংবিধানে কেন্দ্র ও রাজ্যের একসঙ্গে কাজ করাটাই যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থার ভিত্তি।’