ভারতের উত্তর প্রদেশের গঙ্গা নদীতে ভাসছে অসংখ্য মরদেহ।
কর্তৃপক্ষ মরদেহ ৪০টি বললেও এ সংখ্যা শতাধিক বলে দাবি করেছেন স্থানীয় লোকজন।
বিহার ও উত্তর প্রদেশের সীমানায় গঙ্গা নদীতে গত কয়েক দিনে এসব মরদেহ ভাসতে দেখা গেছে। তবে সবচেয়ে বেশি মরদেহ ভেসে ওঠে সোমবার।
তবে হঠাৎ করে এত মরদেহ কীভাবে সেখানে এলো, সে সম্পর্কে জানে না স্থানীয় কর্তৃপক্ষ।
বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো দাবি করেছে, নদীতে ভাসতে থাকা সারি সারি মরদেহগুলো করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া ব্যক্তিদের।
সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, গত কয়েক দিনে নদীতে শতাধিক মরদেহ ভাসতে দেখা গেছে।
বিবিসিকে স্থানীয় কর্মকর্তা অশোক কুমার বলেন, ‘মরদেহগুলো উত্তর প্রদেশ থেকে ভেসে আসতে পারে।’
নদীতে ভাসমান মরদেহ তুলে দাহ বা সমাহিত করা হবে বলে জানান তিনি।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানায়, মরদেহগুলোর মধ্যে বেশির ভাগই পচে ফুলে গেছে। এর অনেকগুলো আবার আংশিক পোড়া।
করোনায় মারা যাওয়ার পর উত্তর প্রদেশে নদীর ধারে তাদের দাহ করতে নিয়ে যাওয়া হতে পারে। সেখান থেকেই মরদেহগুলো নদীতে ফেলে দেয়া হয়।
স্থানীয় লোকজন ও সাংবাদিকরা বিবিসি হিন্দিকে জানান, দাহ করার জন্য কাঠের অভাব ও করোনায় আয় কমে যাওয়ায় শেষকৃত্যের খরচ মেটাতে পারছে না অনেক পরিবার। কোনো বিকল্প না পেয়ে তারা স্বজনের মরদেহ নদীতে ফেলে চলে যাচ্ছেন।
চন্দ্র মোহন নামের স্থানীয় এক ব্যক্তি বলেন, ‘বেসরকারি হাসপাতাল মানুষজনকে সর্বস্বান্ত করে ছাড়ছে। বেশির ভাগ মানুষ টাকার অভাবে পুরোহিতকেও কিছু দিতে পারছে না।
‘অনেকেই কষ্ট করে ২ হাজার রুপির বন্দোবস্ত করছে মরদেহগুলো নদীর ধারে পৌঁছানোর জন্য। এরপর মরদেহ নদীতে ফেলে দিচ্ছে তারা।’
ভারতের সবচেয়ে জনবহুল রাজ্য উত্তর প্রদেশ। রাজ্যটিতে ৯ মে পর্যন্ত করোনা শনাক্ত হয়েছে ১৫ লাখের বেশি মানুষের। এর মধ্যে মারা গেছে ১৫ হাজার ৪৬৪ জন।
দেশটিতে এখন চলছে করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ। দেশটিতে এখন প্রতিদিনই চার লাখের ওপর মানুষ শনাক্ত হচ্ছেন। সরকারি হিসাবে ভারতে দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা গড়ে চার হাজার।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ও মানবাধিকার বিভিন্ন সংস্থা বলছে, সরকারি হিসাবের বাইরেও ভারতে করোনায় প্রতিদিন আরও অনেক মানুষ মারা যাচ্ছে।
ভারতে সোমবার পর্যন্ত করোনা শনাক্ত হয়েছে ২ কোটি ২৭ লাখের বেশি মানুষের দেহে। এ সময়ে ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে ২ লাখ ৪৬ হাজারের বেশি মানুষ।