স্বাস্থ্যবিধি আরও এক ধাপ শিথিল হতে যাচ্ছে যুক্তরাজ্যে। ১৭ মে থেকে সামাজিক দূরত্ব ঘুচিয়ে একে অপরের সঙ্গে সাক্ষাৎ, আবদ্ধ স্থানে একসঙ্গে খাওয়াদাওয়া ও একে অন্যকে জড়িয়ে ধরতে পারবেন ব্রিটিশরা।
একই দিন তথা আগামী সোমবার যুক্তরাজ্য থেকে আন্তর্জাতিক বিমান চলাচল শুরু হবে বলেও জানিয়েছে সরকার। তবে মহামারির এ পর্যায়ে করোনাভাইরাসের কারণে ঝুঁকিপূর্ণ বিবেচিত দেশগুলোর ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকবে।
আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, করোনাভাইরাস প্রতিরোধে টিকাদান কর্মসূচি জোরেশোরে চলছে। এর মধ্যে ভাইরাসের বিস্তারও অনেকটা কমে আসায় এ সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে ব্রিটিশ সরকার।
এ বিষয়ে সোমবার সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত জানাবেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন।
দেশটিতে করোনাভাইরাস পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রেখে ধাপে ধাপে স্বাস্থ্যবিধি শিথিল করার পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। এর অংশ হিসেবে আগামী সপ্তাহে তৃতীয় ধাপে স্বাস্থ্যবিধি শিথিল হতে যাচ্ছে ইংল্যান্ডে।
এ ধাপে নাগরিকরা কী কী করতে পারবেন বা পারবেন না, সেসবই জানাবেন বরিস জনসন।
প্রধানমন্ত্রীর উদ্ধৃতি দিয়ে ডাউনিং স্ট্রিটের এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘যেমনটা ভেবেছিলাম আমরা, সেভাবেই সবকিছু এগোচ্ছে। ভাইরাসকে জিততে আমরা দিচ্ছি না। সফল টিকা কর্মসূচির কারণে কর্মপরিকল্পনাও সঠিক পথে আছে।
‘প্রাপ্তবয়স্ক দুই-তৃতীয়াংশ ব্রিটিশ এরই মধ্যে টিকার প্রথম ডোজ নিয়ে ফেলেছেন। এবার সতর্কভাবে নিষেধাজ্ঞা একে একে তুলে নিতে পারি আমরা।’
মহামারির এক বছরে করোনায় যুক্তরাজ্যে প্রাণ হারিয়েছেন ১ লাখ ২৭ হাজারের বেশি মানুষ। ভাইরাসটি শনাক্ত হয়েছে সাড়ে ৪৪ লাখের বেশি মানুষের দেহে।
গেল ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে করোনায় মৃত্যু হয়েছে দুইজনের। ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে ১ হাজার ৮০০ জনের দেহে।
দীর্ঘদিন কঠোর লকডাউন ও স্বাস্থ্যবিধি আরোপ থাকার পর গত বছরের শেষ দিকে টিকা কর্মসূচি শুরু করে ব্রিটিশ সরকার।
ভাইরাসের বিস্তার নিয়ন্ত্রণে আসতে শুরু করায় চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে চার ধাপে যাবতীয় নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার পরিকল্পনা প্রকাশ করে ডাউনিং স্ট্রিট।
প্রথম ধাপে এপ্রিলে লকডাউন তুলে বিভিন্ন দোকানপাট খুলে দেয়া হয়। উন্মুক্ত পরিবেশে ছোট ছোট দলে একসঙ্গে খাওয়াদাওয়ারও অনুমতি দেয়া হয় সে সময়।
দ্বিতীয় ধাপে স্বাস্থ্যবিধি মেনে পাব, ক্যাফে ও রেস্তোরাঁর ভেতরে খাওয়াদাওয়ার অনুমতি দেয়া হয়। আত্মীয়স্বজন ও বন্ধুবান্ধবদের মাসে একবার সর্বোচ্চ ছয়জন করে আবদ্ধ জায়গায় দেখা করার অনুমতি দেয়া হয়।
তৃতীয় ধাপে এক বছরের বেশি সময় পর পরস্পরকে জড়িয়ে ধরার সুযোগ পেতে যাচ্ছেন ব্রিটিশরা।
স্বাস্থ্য নিরাপত্তা পরীক্ষা করে সিনেমা হল, থিয়েটারের মতো বড় আবদ্ধ বিনোদনকেন্দ্রগুলোও খুলে দেয়া হতে পারে এবার। অতিথি নেয়ার অনুমতি পেতে পারে আবাসিক হোটেলগুলো।
গত জানুয়ারিতে মহামারির দ্বিতীয় ধাক্কায় করোনায় সর্বোচ্চ প্রাণহানি ও সংক্রমণের রেকর্ড হয় যুক্তরাজ্যে।
তবে বর্তমানে টিকা কর্মসূচি জোরদার হওয়ার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে কমেছে সংক্রমণ। কমেছে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ও মৃত্যু।
স্বাস্থ্যবিধি শিথিলের ক্ষেত্রে এখনও ভিন্ন বৈশিষ্ট্যের করোনাভাইরাসের প্রকোপ পর্যবেক্ষণ করছে যুক্তরাজ্য।
স্কটল্যান্ড, ওয়েলস ও নর্দার্ন আয়ারল্যান্ড নিজেদের সময়সূচি অনুযায়ী স্বাস্থ্যবিধি শিথিল করতে পারবে।