করোনাভাইরাস সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ে বিপর্যস্ত ভারতে সম্পূর্ণ লকডাউন জারি না হলেও দেশের একাধিক রাজ্যে সংক্রমণ ঠেকাতে লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে।
এর ফলে ফের অন্ধকার নেমেছে অসংখ্য পরিযায়ী শ্রমিকের জীবনে। এশিয়ার তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশে বাড়ছে দারিদ্র্য। ফলে ফের মন্দার মুখে পড়তে চলেছে অর্থনীতি।
চলতি বছরের মার্চে দেশীয় পণ্যে আট শতাংশ সংকোচন দেখে ভারত, যা ১৯৫২ সালের পর এ প্রথম। যদিও মনে করা হয়, বেকারত্ব কমতে পারে, সঞ্চয়ও বৃদ্ধি পেতে পারে।
কিন্তু কোভিডের দ্বিতীয় ধাক্কার দাপটে সব তছনছ। এস অ্যান্ড পি গ্লোবাল রেটিংস জানাচ্ছে, ১১ শতাংশ বৃদ্ধির সম্ভাবনার বদলে ভারতের আর্থিক বৃদ্ধি হতে পারে ৯.৮ শতাংশ।
২০২০ সালে চরম অর্থনৈতিক ক্ষতির মুখে পড়ে ভারত। জিডিপি নেমেছিল তলানিতে। করোনা ক্ষত সারিয়ে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হতে শুরু করে দেশটির অর্থনীতির চাকা। কিন্তু গত এক মাসে পরিস্থিতির ফের অবনতি ঘটেছে।
অর্থনীতিবিদদের ভাষ্য, করোনার প্রাদুর্ভাব ভারতের অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে বাধা সৃষ্টি করবে।
ভারতের শ্রমজীবী মানুষের বড় অংশ চুক্তি ছাড়া কাজ করে দিনমজুরির ভিত্তিতে। প্রতিদিনের খরচ মেটানোর পর স্বাস্থ্যসেবা ও ওষুধের জন্য খুব সামান্য অর্থই থাকে তাদের।
ভারতে ওই শ্রেণির সংখ্যা অনেক। এ শ্রমিকেরা কাজ হারালে পরিবারের সঞ্চয়ও হ্রাস পায়। যার অর্থ চূড়ান্ত দারিদ্র্যের পথে একধাপ এগিয়ে যাওয়া।
অর্থনীতিবিদেরা সতর্ক করে বলেন, পরিবারের সঞ্চয় হ্রাস এবং আয় কমে যাওয়ার কারণে দৈনন্দিন ঘরোয়া ব্যবহারের ওপর প্রভাব পড়বে যা জিডিপির প্রায় ৬০ শতাংশ।
তিনি বলেন, ভারতের সঞ্চয় প্রবৃদ্ধি যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও জাপানের চেয়ে পিছিয়ে রয়েছে। পরিসংখ্যানে বেকারত্বও বেড়েছে। আগামী দিনে করোনা হয়তো অনেক প্রাণ কাড়বে, কিন্তু এর চেয়েও ভয় পেটে খিদের টান।
গত বছর শুরু হওয়া করোনা মহামারির কারণে ভারতে আয়ের বৈষম্য আরও গভীর হচ্ছে। ওয়াশিংটনের পিউ রিসার্চ সেন্টারের এক সমীক্ষায় দেখা যায়, মহামারি শুরু হওয়ার পর থেকে ভারতে প্রায় সাড়ে সাত কোটি মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে চলে গেছে। করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আরও কিছু মানুষকে টেনে নামাবে দারিদ্র্যসীমার নিচে।