ভারত সরকারের স্বাস্থ্য উপদেষ্টা চিকিৎসক ও বিজ্ঞানী কে বিজয়রাঘবন বলেছিলেন, ‘এখন যে হারে ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ছে, সেখানে সংক্রমণের তৃতীয় ঢেউ আসতে আর বেশি দেরি নেই। তবে কবে এবং কীভাবে এই ঢেউ আছড়ে পড়বে সেটি এখনও স্পষ্ট নয়।’
বিজয়রাঘবনের ওই সতর্কবাণীর পরেই বৃহস্পতিবার অক্সিজেন নিয়ে কেন্দ্র বনাম দিল্লি সরকারের আইনি লড়াইয়ে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট কেন্দ্রকে সংক্রমণের তৃতীয় ঢেউ মোকাবিলার জন্য প্রস্তুতি নিতে বলল।
আদালত বলেছে, ‘বিশেষজ্ঞদের মতে ভারতে তৃতীয় ঢেউ আসন্ন। এই তৃতীয় ঢেউয়ের তীব্রতা শিশুদেরকেও প্রভাবিত করবে। তাই কোনো শিশু যখন হাসপাতালে যায় তখন মা এবং বাবাকেও যেতে হবে। সে কারণেই অভিভাবকদের জন্য টিকা দেয়া দ্রুত শেষ করতে হবে। এর জন্য আমাদের বিজ্ঞানভিত্তিক পরিকল্পনা ও সেটি কার্যকর করতে হবে।’
দিল্লির হাসপাতালগুলোর জন্য অক্সিজেন বরাদ্দের বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের একটি আবেদনের শুনানির সময় এ কথা বলে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় এবং এম আর শাহকে নিয়ে গঠিত ডিভিশন বেঞ্চ।
এ দিন শুনানির শুরুতেই কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে আদালতকে জানানো হয়, দিল্লির হাসপাতালগুলিতে যথেষ্ট পরিমাণ অক্সিজেন রয়েছে। অক্সিজেন এক্সপ্রেসের মাধ্যমে ২৮০ মেট্রিক টন অক্সিজেন দিল্লিতে আনা হচ্ছে।
একই সঙ্গে কেন্দ্রের তরফে জানানো হয়, দিল্লিকে অতিরিক্ত অক্সিজেন দিলে বাকি রাজ্যে ঘাটতি দেখা দেবে। এর জবাবে উচ্চ আদালতের পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘যে প্রক্রিয়ায় দিল্লিতে অক্সিজেন বরাদ্দ হচ্ছে, সেটি নতুন করে মূল্যায়ন করা উচিত। এর জন্য নতুন পরিকল্পনাও দরকার।’
রাজ্যে অক্সিজেন সঙ্কটের যে ভয়াবহ চিত্র দেখা গেছে, তার সমালোচনা করে সুপ্রিম কোর্টের পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘এটি কেবল রাজ্যগুলোকে অক্সিজেন বরাদ্দের কাজ নয়, পরিবহণ পদ্ধতি অনুসরণ করে সঠিক পরিকল্পনাও দরকার। সংক্রমণের তৃতীয় ঢেউ আসছে এবং এর জন্য প্রস্তুতি নেয়ার সময় এসেছে।’
সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে পরিকল্পনা দরকার উল্লেখ করে আদালত বলে, ‘যখন সংক্রমণের তৃতীয় ঢেউ আসবে, তখন কীভাবে সামলাবেন? বৈজ্ঞানিকরা বলছেন যে শিশুরাও এবার রেহাই পাবে না এবং হাসপাতালে মা-বাবাকেও সঙ্গে যেতে হবে। এর জন্য একটি সুচিন্তিত পরিকল্পনার দরকার।’
সংবাদমাধ্যমগুলিতে করোনা সঙ্কট নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করার প্রসঙ্গ টেনেও আদালতের পক্ষ থেকে জানানো হয়, মিডিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ না করে অনেক ভাল কাজ করা যায়।