ভারতে বিধানসভা নির্বাচনের ফল প্রকাশের পর বিজয় মিছিল ও বিজয়োল্লাস বাতিল করেছে দেশটির নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
ইসির দেয়া মঙ্গলবারের নির্দেশনায় বলা হয়েছে, আগামী ২ মে পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের ফল প্রকাশের দিন ও এর পরে কোনো ধরনের বিজয় মিছিল ও বিজয়োল্লাস করা যাবে না।
ইসির নির্দেশনার বরাত দিয়ে দেশটির গণমাধ্যম বিজনেস ইনসাইডার ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়, বিজয়ী প্রার্থী যখন ইসির কার্যালয়ে এসে তার সার্টিফিকেট নিবেন তখন তার সঙ্গে দুইজনের বেশি নেতা-কর্মী থাকতে পারবে না।
পশ্চিমবঙ্গ, তামিলনাড়ু, কেরালা, আসাম ও পুদুচেরিতে বিধানসভা নির্বাচনের ফল প্রকাশ করা হবে ২ মে।
ইসি জানিয়েছে, দেশজুড়ে করোনাভাইরাসের ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমণ ঠেকাতে ভোটগণনা, ফল প্রকাশের দিন ও এর পরবর্তী সময়ে এই ধরনের কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
করোনার ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমণের মধ্যেই পাঁচ রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন করায় সোমবার ইসির কঠোর সমালোচনা করে মাদ্রাজের উচ্চ আদালত। ইসির কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ গঠন করলেও নৈতিকভাবে তা ভুল হতো না বলেও জানান বিচারক।
আদালতের এমন মন্তব্যের একদিনের মধ্যেই নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে আজ এমন কঠোর নির্দেশনা এসেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
করোনা বিপর্যয়ে দায়ী ইসি
করোনাভাইরাস মহামারির দ্বিতীয় ধাক্কায় হাহাকার চলছে ভারতে। নিয়ন্ত্রণহীন পরিস্থিতির জন্য নির্বাচন কমিশনকে দায়ী করেছে মাদ্রাজের উচ্চ আদালত।
ওই আদালতের বিচারকরা সোমবার বলেন, ইসির কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ গঠন করলেও নৈতিকভাবে তা ভুল হতো না।
এ সময় করোনাভাইরাসের ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমণের মধ্যেই পাঁচ রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন করায় ইসির কঠোর সমালোচনা করে আদালত।
আদালতের আদেশ অনুযায়ী দীর্ঘ নির্বাচনি প্রচারে মাস্ক পরা, স্যানিটাইজার ব্যবহার করা ও নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখাসহ করোনাকালীন স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতে ইসি ব্যর্থ হয়েছে বলে মত দিয়েছেন মাদ্রাজ হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায়।
তামিলনাড়ুর পরিবহনমন্ত্রী এমআর বিজয়াবস্করের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে শুনানিতে এসব কথা বলেন তিনি। নিজ আসনে করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সহযোগিতা চেয়ে আবেদনটি করেন মন্ত্রী বিজয়াবস্কর।
পশ্চিমবঙ্গ, তামিলনাড়ু, কেরালা, আসাম ও পুদুচেরিতে বিধানসভা নির্বাচনের সময় থেকেই ভয়াবহ হারে বাড়তে থাকে করোনার সংক্রমণ। গত এক সপ্তাহে সারা ভারতে রেকর্ড সাড়ে ২২ লাখ মানুষের শরীরে ভাইরাসটি শনাক্ত হয়েছে। মৃত্যুহার বেড়েছে ৮৯ শতাংশ।
অন্য সব রাজ্যে ভোট শেষ হলেও পশ্চিমবঙ্গে এখনও এক দফা ভোট বাকি।
এমন পরিস্থিতিতে গত বৃহস্পতিবার প্রচারণার অংশ হিসেবে রাজ্যে রোড-শো ও মিছিল নিষিদ্ধ করে ইসি। আর সর্বোচ্চ ৫০০ জনকে নিয়ে জনসমাবেশ করা যাবে বলেও মত দিয়েছে কমিশন।
এর আগেই ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি মঙ্গলবার পশ্চিমবঙ্গে তার পূর্বনির্ধারিত সফর বাতিল করেন মহামারির কারণে।
প্রচারণায় ইতি টেনেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। তার প্রশ্ন, কেন মোদির ঘোষণা পর্যন্ত প্রচারণা বন্ধের সিদ্ধান্ত বিলম্বিত করল ইসি।