ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তায় আগামী সপ্তাহে হচ্ছে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ১০টি দেশের জোট আসিয়ানের সম্মেলন। সম্মেলনে অংশ নেয়ার ডাক পেতে আসিয়ানভুক্ত দেশের নেতাদের কাছে আবেদন জানিয়েছে মিয়ানমারের ছায়া সরকার। সেই সঙ্গে ১ ফেব্রুয়ারি ক্ষমতা দখল করা সামরিক সরকারকে স্বীকৃতি না দেয়ারও আহ্বান জানিয়েছে তারা।
আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর প্রধান জেনারেল মিন অং হ্লাইংয়ের শনিবার আসিয়ান সম্মেলনে যোগ দেয়ার কথা। নির্বাচিত নেতা অং সান সু চিকে ক্ষমতা থেকে অপসারণের পর এই প্রথম দেশের বাইরে কোনো সফরে যাচ্ছেন তিনি।
সামরিক সরকারকে ক্ষমতা থেকে হটানোর লক্ষ্যে শুক্রবার ‘জাতীয় ঐক্য সরকার’ (এনইউজি) নামে ছায়া সরকার গঠন করে সু চির দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্র্যাসির (এনএলডি) উৎখাত হওয়া নেতা, জাতিগত সংখ্যালঘু রাজনীতিকসহ মিয়ানমারের আন্দোলনরত গণতন্ত্রপন্থি নেতারা।
মিয়ানমারের ঐক্য সরকারের উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী মো জাউ উ রোববার বলেন, সম্মেলনে তাদের আমন্ত্রণ জানায়নি আসিয়ান।
তিনি বলেন, ‘চলমান সংকটজনক পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে মিয়ানমারকে যদি আসিয়ান সহযোগিতা করতে চায়, তাহলে এনইউজির সঙ্গে পরামর্শ ও আলোচনা ব্যতিরেকে তা সম্ভব না। এনইউজির প্রতি মিয়ানমারের জনগণের সমর্থন রয়েছে। এ ছাড়া এ সরকার পুরোপুরি বৈধ। ক্ষমতা দখলকারী সেনাশাসককে কোনো ধরনের স্বীকৃতি না দেয়া এ মুহূর্তে খুবই জরুরি।’
থাইল্যান্ডের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র তানি সাংরাত শনিবার বলেন, মিন অং হ্লাইংসহ আসিয়ানের ১০ দেশের বেশ কয়েকজন নেতা শনিবার জাকার্তা সম্মেলনে যোগ দেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মানবাধিকার সংস্থা অ্যাসিস্ট্যান্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনার্সের (এএপিপি) তথ্য অনুযায়ী, সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখলের পর গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ৭৩০ জন নিহত হয়েছে।
দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর হাত থেকে রেহাই পাচ্ছেন না সংবাদকর্মীরাও। রোববার বিকেলে মিয়ানমারে কর্মরত জাপানের ফ্রিল্যান্স প্রতিবেদক ইউকি কিটাজুমিকে ইয়াঙ্গুনের বাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এদিকে সামরিক সরকারের পতন ও নির্বাচিত নেতাদের মুক্তির দাবিতে দমন-পীড়নের মধ্যেও টানা তিন মাস ধরে আন্দোলন জারি রেখেছে মিয়ানমারের হাজারো মানুষ। রোববার জাতীয় ঐক্য সরকারের প্রতি সমর্থন জানিয়ে মান্দালয়, মেইকটিলা, মাগওয়া ও মিনগিয়ানে বিক্ষোভ হয়।