বনভূমি ধ্বংসের ইতিহাসে অন্যতম কালো বছর ২০২০ সাল। করোনাভাইরাস মহামারি পরিস্থিতিতে নজিরবিহীন লকডাউনে সারা পৃথিবী দীর্ঘ সময় কার্যত অচল থাকার মধ্যেই এক কোটি ২২ লাখ হেক্টর এলাকার বন ধ্বংস হয়েছে যা ২০১৯ সালের তুলনায় ১২ শতাংশ বেশি।
ইউনিভার্সিটি অফ মেরিল্যান্ড ও অনলাইন পর্যবেক্ষক সংস্থা গ্লোবাল ফরেস্ট ডেটার সূত্র উল্লেখ করে এক প্রতিবেদনে দ্য গার্ডিয়ান এ তথ্য জানিয়েছে। ২০০২ সাল থেকে বনভূমি ধ্বংসের খতিয়ান রাখা শুরু করে পর্যবেক্ষক সংস্থাটি।
বলা হচ্ছে, বিগত দুই দশকে সবচেয়ে বেশি বনভূমি ধ্বংস হওয়া বছরের তালিকায় তৃতীয় শীর্ষ সাল হচ্ছে ২০২০। বিশ্বের তাপমাত্রা ধরে রাখতে সহায়ক প্রধান মৌসুমী অঞ্চলগুলোর কমপক্ষে ৪২ হাজার বর্গকিলোমিটার এলাকার গাছ কেটে ফেলা হয়েছে গত বছর।
আমাজন বনাঞ্চল, কঙ্গো ও দক্ষিণপূর্ব এশিয়ায় সবচেয়ে বেশি বন ধ্বংস হয়েছে গত এক বছরে। বৈশ্বিক তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রয়েছে এই বনাঞ্চলগুলোর।
সবচেয়ে বেশি বন ধ্বংস হয়েছে ব্রাজিলের আমাজন অংশে, গাছ কেটে ফেলা হয়েছে ১৭ লাখ হেক্টর এলাকার; আগের বছরের চেয়ে যা ২৫ শতাংশ বেশি। আগুনে পুড়েছে বড় একটি অংশ।
বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহৎ মৌসুমী জলাভূমি ব্রাজিলের পান্তানালের পরিস্থিতি নিয়েও উদ্বিগ্ন গবেষকরা। ৪০ বছরের মধ্যে রেকর্ড খরার সাক্ষী হয়েছে অঞ্চলটি।
বিভিন্ন ধনী দেশে বনভূমি ধ্বংসের প্রবণতা বেড়েছে। জার্মানিতে ২০১৮ সালের তুলনায় ২০২০ সালে তিন গুণ বেশি গাছ ধ্বংস হয়েছে। ভয়াবহ দাবানলের কারণে আগের দুই বছরের তুলনায় ২০২০ সালে অস্ট্রেলিয়ায় এ হার ছিল নয় গুণ বেশি।
অন্যদিকে বনভূমি ধ্বংসের প্রবণতা কমেছে ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়ায়।
আগামী নভেম্বরে যুক্তরাজ্যে অনুষ্ঠেয় জাতিসংঘের ২৬তম জলবায়ু সম্মেলনে তোলা হবে বিষয়টি।