করোনাভাইরাস চিকিৎসা উপযোগী প্রথাগত চাইনিজ মেডিসিনের (টিসিএম) তিনটি ভেষজ পণ্য বিক্রিতে অনুমোদন দিয়েছে দেশটির জাতীয় ওষুধ প্রশাসন।
প্রতিষ্ঠানটি তাদের বিশেষ ক্ষমতাবলে ভেষজ পণ্য তিনটি বিক্রিতে বুধবার অনুমোদন দিয়েছে। এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এ সিদ্ধান্তের উদ্দেশ্য ‘কোভিড-১৯ চিকিৎসায় আরও বিকল্প বাড়ানো’।
বিবৃতিতে আরও জানানো হয়, হারবাল এই ওষুধগুলো দানাদার এবং ‘প্রাচীন চীনা চিকিৎসা থেকে পাওয়া’।
টিসিএম রেমিডি কর্তৃক উদ্ভাবিত ভেষজ ওষুধগুলো করোনাভাইরাস মহামারির শুরুতেই ব্যবহার করা হয়েছিল। ওষুধগুলো বিশেষজ্ঞরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখেছেন।
যে তিনটি ভেষজ পণ্য ওষুধ প্রশাসন অনুমোদন দিয়েছে, সেগুলো ফুসফুস পরিষ্কারক ও জীবাণুনাশক, ঠাণ্ডজনিত সমস্যা দূর করতে সহায়ক এবং ফুসফুসে শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক রাখায় উপযোগী।
তবে টিসিএমের উদ্ভাবিত এসব ওষুধ কার্যকারিতা নিয়ে চীনে বিতর্ক রয়েছে। ওষুধগুলোর ব্যবহারকারী যেমন রয়েছে, তেমনি রয়েছে সংশয়বাদীও।
অবশ্য এ ধরনের ওষুধ চীনে শত শত বছর ধরে ব্যবহার হয়ে আসছে। কিন্তু সমালোচকেরা বলে থাকেন, এসব ভেষজ ওষুধের উপকারিতা আছে এমন দাবির বিজ্ঞানভিত্তিক কোনো প্রমাণ নেই।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে প্রাচীন প্রতিষেধকগুলো চীনের জাতীয় গৌরব হিসেবে তুলে ধরা হচ্ছে। খোদ প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং টিসিএম উদ্ভাবিত ভেষজ ওষুধের বড় সমর্থক।
২০১৯ সালের টিসিএমের জাতীয় কনফারেন্সে তিনি বলেন, ‘ঐতিহ্যবাহী ওষুধগুলো চীনা সভ্যতার সম্পদের ভাণ্ডার। এর মাধ্যমে এই জাতি ও এখানকার মানুষের বিদ্যাবুদ্ধির আন্দাজ পাওয়া যায়।’
চীনের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, গত বছর করোনা আক্রান্ত কয়েক হাজার মানুষ মূলধারার অ্যান্টিভাইরাল ওষুধের পাশাপাশি হারবাল প্রতিষেধকও গ্রহণ করেন।
এ ব্যাপারে চীনের ন্যাশনাল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অব ট্রেডিশনাল চাইনিজ মেডিসিনের ডেপুটি প্রধান উ আংহং জানিয়েছিলেন, এসব সনাতনী ওষুধ করোনা প্রতিরোধে বা করোনামুক্ত হতে সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারে। এটা করোনা চিকিৎসার কার্যকরী একটি উপায় হতে পারে।
উহানে এক জরিপে দেখা যায়, মাঝারি ধরনের উপসর্গে ভোগা করোনা রোগীদের মধ্যে যারা পশ্চিমা ওষুধের পাশাপাশি ভেষজ চিকিৎসা নিয়েছিলেন, তাদের সেরে ওঠার হার অন্যদের তুলনায় ৩৩ শতাংশ বেশি।
টিসিএম দপ্তর জানিয়েছে, করোনার উপসর্গ নিয়ন্ত্রণ এবং এই ভাইরাসের বিস্তার নিয়ন্ত্রণে হারবাল ওষুধের কার্যকারিতা প্রশংসিত হয়েছে। চীনের সামনের সারির পুলিশ সদস্যদের করোনামুক্ত রাখতে জিলিন ও হেবেই প্রদেশে চলতি বছরের জানুয়ারিতেই ৬০ হাজারের মতো ভেষজ ওষুধের ডোজ পাঠানো হয়।
চীন এখন এসব ভেষজ ওষুধের বাজার সম্প্রসারণে নজর দিচ্ছে।