২০২১ সালের প্রথম গুরুত্বপূর্ণ এক রায়ে বিরোধীদের দাবি উড়িয়ে নতুন সংসদ ভবন নির্মাণের পক্ষেই আদেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির স্বপ্নের প্রকল্প ‘সেন্ট্রাল ভিস্টা প্রজেক্ট’কে সবুজ সংকেত দেয় শীর্ষ আদালতের তিন সদস্যের বেঞ্চ।
২০২২ সালের মধ্যে নতুন সংসদ ভবন নির্মাণের কাজ শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। নতুন ভবন তৈরি হলে লোকসভায় একসঙ্গে বসতে পারবেন ৮৮৮ জন সদস্য, রাজ্যসভায় বসতে পারবেন ৩৮৪ জন।
নতুন সংসদ ভবন তৈরির জন্য দরপত্র আগেই ডাকা হয়েছিল। সর্বোচ্চ খরচ ধরা হয়েছিল ৯৭১ কোটি টাকা। সবচেয়ে কম দর হেঁকে বরাত পেয়েছে টাটা গোষ্ঠী।
প্রকল্পটি দিল্লিতে রাষ্ট্রপতি ভবন থেকে ইন্ডিয়া গেট পর্যন্ত প্রায় ৪ কিলোমিটার জায়গা জুড়ে। এর ফলে দিল্লির ৮৬ একর সবুজ ধ্বংস হবে বলে অভিযোগ আনা হয়েছে।
আরও অভিযোগ, দিল্লি উন্নয়ন আইনের বিরুদ্ধে গিয়ে এই প্রকল্পের জমি বদল করা হয়েছে।
এ প্রকল্পের বিরুদ্ধে শীর্ষ আদালতে একগুচ্ছ আবেদন জমা পড়েছে।
আবেদনকারীরা হলেন অবসরপ্রাপ্ত লে. কর্নেল অনুজ শ্রীবাস্তব, সাবেক আমলা মীনা গুপ্ত ও রাজীব সুরি।
তবে এসব অভিযোগ নাকচ করে দিয়েছে শীর্ষ আদালতের বিচারপতি এ এম খানউইলকর, বিচারপতি দীনেশ মহেশ্বরী ও বিচারপতি সঞ্জীব খান্নার বেঞ্চ।
গোড়া থেকেই নয়া সংসদ ভবন নির্মাণ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে কংগ্রেসসহ বিরোধী দলগুলি। প্রশ্ন উঠেছে, করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে নতুন ভবন নির্মাণ কতটা জরুরি এবং যুক্তিসঙ্গত। এত বড় নির্মাণে পরিবেশ দূষণ ও জমির ব্যবহারে পরিবর্তনের বিষয়টিও উঠে এসেছে।
শেষমেশ মামলা গড়ায় সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত। মঙ্গলবার সেই মামলায় রায় দিল দেশের শীর্ষ আদালত। তবে বাকি দুই বিচারপতির সঙ্গে একমত হতে পারেননি বিচারপতি সঞ্জীব খান্না। পরিবেশ সংক্রান্ত বিষয়ে ছাড়পত্র দেয়ার বিষয়ে তার আপত্তি রয়েছে।
এদিকে, নয়া নির্মাণে ছাড়পত্র দিলেও বেশ কয়েকটি শর্ত দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। নির্মাণস্থলে দূষণ রোধে অ্যান্টি–স্মগ গান ও স্মগ টাওয়ার বসানোর নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
গত অক্টোবর ও নভেম্বরে এ মামলার শুনানিতে সরকারপক্ষে ছিলেন সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা।
গত ১০ ডিসেম্বর ২০ হাজার কোটি টাকার এ প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করলেও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আশ্বাস দিয়েছিলেন, শীর্ষ আদালতের থেকে সবুজ সংকেত না পাওয়া পর্যন্ত এর নির্মাণকাজ শুরু হবে না। তবে মঙ্গলবারের এ রায়ের পর সে বাধা কেটে গেল বলে মনে করা হচ্ছে।