মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে ফ্রান্সের পণ্য বয়কট বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ।
স্থানীয় সময় রোববার তিনি এ আহ্বান জানান।
ফ্রান্সের মূল্যবোধের সমর্থনে নিজের অবস্থানকে আরও জোরালোভাবে তুলে ধরে রোববার টুইট করেন মাখোঁ।
ওই বার্তায় তিনি বলেন, ‘আমরা কখনো আত্মসমর্পণ করব না। শান্তির লক্ষ্যে আমরা সব ভিন্নতাকে সম্মান করি।
‘বিদ্বেষপূর্ণ বক্তব্যকে গ্রহণ করব না ও যৌক্তিক বিতর্ককে রক্ষা করব। মানুষের মর্যাদা ও সার্বজনীন মূল্যবোধের পাশে আমরা সবসময়ই আছি।’
১৬ অক্টোবর মহানবী হজরত মোহাম্মদকে (সা.) নিয়ে আঁকা কার্টুন শিক্ষার্থীদের দেখানোয় প্যারিসের স্কুলশিক্ষক স্যামুয়েল প্যাটির শিরশ্ছেদ করেন আবদুলাখ আনজোরভ নামের এক চেচেন বংশোদ্ভূত যুবক।
গত বুধবার স্যামুয়েলের স্মরণে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে মাখোঁ বলেন, ‘স্যামুয়েলকে হত্যা করা হয়েছে কারণ ইসলামপন্থিরা আমাদের ভবিষ্যৎ ছিনিয়ে নিতে চায়। কার্টুন আমরা কখনোই সরাব না।’
মাখোঁর ওই বক্তব্যের পরই মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো ফ্রান্সের পণ্য বয়কটের ডাক দেয়। কুয়েত, জর্ডান ও কাতারের কয়েকটি দোকান থেকে ফরাসি পণ্য সরিয়ে ফেলা হয়েছে।
এদিকে তুরস্ক, লিবিয়া, সিরিয়া ও গাজা উপত্যকায় মাখোঁর বক্তব্যের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখা গেছে।
ফ্রান্সের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, ‘উগ্রপন্থি সংখ্যালঘুদের চাপে’ ওই ‘ভিত্তিহীন’ বয়কটের ডাক দেয়া হয়েছে।
মোহাম্মদ (সা.) ও আল্লাহর ছবি ব্যবহার ইসলাম ধর্মে স্পষ্টভাবে নিষিদ্ধ।
অন্যদিকে ফ্রান্সের জাতীয় পরিচয়ের কেন্দ্রে রয়েছে রাষ্ট্রীয় ধর্মনিরপেক্ষতা। দেশটি মনে করে, বিশেষ সম্প্রদায়ের ধর্মীয় অনুভূতি রক্ষার লক্ষ্যে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা খর্ব করলে জাতীয় ঐক্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
তুরস্ক ও পাকিস্তানের রাজনীতিকরাও মাখোঁকে মৌখিক আক্রমণ করতে ছাড়েননি। মাখোঁর বিরুদ্ধে ‘বিশ্বাসের স্বাধীনতাকে’ শ্রদ্ধা না করার অভিযোগ করেন তারা। একই সঙ্গে ফ্রান্সে বসবাসরত কয়েক লাখ মুসলমানকে কোণঠাসা করার অভিযোগ করেন ওই রাজনীতিকরা।
রোববার তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান দ্বিতীয়বারের মতো বলেন, “ইসলাম সম্পর্কে এমন চিন্তাভাবনার জন্য মাখোঁর ‘মানসিক চিকিৎসা’ নেয়া দরকার।”
সূত্র: বিবিসি