বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

অন্ধের চোখে আলো ছড়াচ্ছে সোনাইমুড়ী অন্ধকল্যান সমিতি আই হসপিটাল

  • খোরশেদ আলম, নোয়াখালী   
  • ২০ অক্টোবর, ২০২৫ ২০:২১

নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীতে উন্নত বিশ্বের চিকিৎসা পদ্ধতির সাথে তাল মিলিয়ে অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতির সমন্বয়ে অনন্য সাধারণ আধুনিক চক্ষু চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছে ‘সোনাইমুড়ী অন্ধকল্যাণ সমিতি আই হসপিটাল’। অক্লান্ত পরিশ্রম করে দৃষ্টিহীন মানুষকে পৃথিবীর আলো দেখার সুযোগ করে দিচ্ছে এই হাসপাতালের দায়িত্বরতরা।

বেগমগঞ্জ থানার সাবেক সার্কেল অফিসার (উন্নয়ন) মরহুম তাফাজ্জল আহমদ এবং সোনাইমুড়ী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মরহুম ইউনুস মিয়ার উদ্যোগে ১৯৭৮ সালের জানুয়ারি মাসে প্রতিষ্ঠিত হয় সোনাইমুড়ী অন্ধকল্যাণ সমিতি।

প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মরহুম ছাইদুল হক পাটোয়ারী এবং প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা ভূঁইয়ার হাত ধরে পথ চলা শুরু হয় এই সমিতির।

প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে ‘আই ক্যাম্প’ পরিচালনার মাধ্যমে দরিদ্র-হতদরিদ্র রোগীদের চক্ষু চিকিৎসাসেবা প্রদান এবং লেন্স স্থাপন করা ছাড়াও চশমা প্রদান করা হয়। রয়েছে সেমিনার সিম্পোজিয়াম, র‍্যালি, লিফলেট, বুকলেট,ম্যাগাজিনসহ নানা রকমের প্রচার কার্যক্রম।

সোনাইমুড়ী অন্ধকল্যাণ সমিতি ২০১১ সালের ১০ জুলাই সোনাইমুড়ী অন্ধকল্যাণ সমিতি আই হসপিটাল নামে অনুমোদন প্রাপ্ত হয়ে নিরবচ্ছিন্ন সেবা দিয়ে যাচ্ছে নোয়াখালী ও তার পাশ্ববর্তী জেলার জনগণকেও। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের ৮০ শতাংশ এবং হাসপাতালের ২০ শতাংশ অর্থে প্লুকোমা চিকিৎসা, ইয়াগ লেজার, চোখের আল্ট্রাসনোগ্রাম (বি-স্ক্যান), সেলাই বিহীন ফ্যাকো অপারেশন, ডায়াবেটিক রোগীর চক্ষু পরীক্ষা, চোখের লেন্স পরীক্ষা সহ বিভিন্ন সেবা দিয়ে আসছে।

চক্ষু চিকিৎসাসেবা নিতে আসা রিতা রাণী বলেন, তার চোখের চানি হলুদভাব থাবা ঘিরে নিচ্ছে পুরো চোখ। কিন্তু, টাকার অভাবে চোখের অপারেশন করতে পারছেন না। সোনাইমুড়ী অন্ধকল্যাণ সমিতির প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তফা ভূঁইয়ার সহযোগিতায় স্বল্প খরচে চিকিৎসা সেবা পেয়েছেন।

আরেকজন সেবা গ্রহিতা ৭০ বছর ছুঁই ছুঁই হতদরিদ্র আবু কালাম রিক্সা চালিয়ে জিবিকা নির্বাহ করেন। তিনি সাংবাদিকদের জানান, তিনি দীর্ঘদিন ধরে চোখের সমস্যায় ভুগছেন। ছানি অপারেশন করতে বিভিন্ন স্থানে অর্থের অভাবে চোখের চিকিৎসা করাতে পারছেন না। পরে, নোয়াখালী জেলা প্রশাসকের নিটক চোখের চিকিৎসায় সহযোগিতার জন্য যান। জেলা প্রশাসক আবু কালামকে সোনাইমুড়ী অন্ধকল্যাণ সমিতি আই হসপিটালে পাঠান। এখানে তিনি অল্প খরচে চিকিৎসাসেবা পেয়ে তিনি আনন্দিত।

সোনাইমুড়ী অন্ধকল্যাণ সমিতির দপ্তর সম্পাদক মো. আবুল বাসার বলেন, এই প্রতিষ্ঠান থেকে কোনো রোগী চিকিৎসা সেবা না নিয়ে ফেরত যাবে না।

সোনাইমুড়ী অন্ধকল্যাণ সমিতির প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তফা ভূঁইয়া জানান, সেবাই মানুষকে মহৎ করে- এ স্লোগান নিয়ে ১৯৭৮ সালে কিছু মানুষের উদ্যোগ ও অনুপ্রেরণায় সোনাইমুড়ী অন্ধকল্যাণ সমিতি প্রতিষ্ঠা করা হয়। যার পেছনে ছিল সমাজের কিছু বিত্তমান ও মহান মানুষের দান-অনুদান।

সরকারের সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয় ও সোনাইমুড়ী অন্ধকল্যাণ সমিতির যৌথ অর্থায়নে আধুনিক চক্ষু হাসপাতালটি নির্মাণ করা হয়েছে। এটি পুরোদমে চালু হলে নোয়াখালী, ফেনী, লক্ষ্মীপুর ও পার্শ্ববর্তী কুমিল্লা জেলার কিছু অংশ নিয়ে প্রায় ৪০ লাখ মানুষকে বিনামূল্যে চোখের চিকিৎসা সেবা দেওয়া সম্ভব হবে।

সোনাইমুড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাছরিন আক্তার বলেন, বাংলাদেশে এমন প্রতিষ্ঠান বিরল। আধুনিক সুযোগ সুবিধা সম্বলিত সেবারমান অত্যন্ত ভালো। গরিব-দুঃখিরাই বেশি এখান থেকে সেবা নিচ্ছে।

নোয়াখালীর সিভিল সার্জন ডা. মরিয়ম সিমি বলেন, সোনাইমুড়ী অন্ধকল্যান সমিতি আই হসপিটালের সেবার কার্যক্রম প্রচার-প্রচারণা করলে এখানে রোগী আরো বাড়বে। প্রতিদিন এই হাসপাতাল থেকে স্বল্প মূল্যে চক্ষু রোগীরা সেবা নিচ্ছে। গ্রাম অঞ্চলের ভূঁইফোড় ও অনুমোদনহীন চক্ষু চিকিৎসালয়ে না গিয়ে এই হাসপাতালে গেলে সেবা পাবে এবং প্রতারিত হবে না।

এ বিভাগের আরো খবর