শীতের সময় ঘনিয়ে আসছে, সঙ্গে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ-আশঙ্কা। ফলে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তা এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি।
বিশেষজ্ঞদের মতে, শীতকালে প্রতিদিন আদা ও লেবুর চা পান করলে সার্বিক সুস্থতা বজায় থাকে, শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে, ওজন কমাতে সহায়তা করে, হজমে উন্নতি ঘটে এবং হৃদ্যন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো থাকে।
আদা সাধারণত বুকজ্বালা, গ্যাস্ট্রিক, বমি ভাব এবং উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে ব্যবহৃত হয়। অন্যদিকে লেবুতে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন ‘সি’, যা রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা জোরদার করে, রক্তাল্পতা প্রতিরোধে সাহায্য করে, কোলাজেন উৎপাদন বাড়ায় এবং হজমে সহায়তা করে।
দুই উপাদান আলাদা আলাদাভাবে যেমন উপকারী, একসঙ্গে মিশিয়ে পান করলে তা আরও কার্যকর হয়।
হজমে উন্নতি
আদা খাবার হজমের গতি নিয়ন্ত্রণ করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য ও অ্যাসিডিটির ঝুঁকি কমায়। লেবু পাকস্থলীর অ্যাসিড উৎপাদন বাড়ায়, যা খাবার হজমে সহায়তা করে।
শরীর গরম রাখে
শীতের সময় শরীর গরম রাখা জরুরি। আদার চা পান করলে শরীরে প্রাকৃতিকভাবে উষ্ণতা তৈরি হয়, কারণ আদা ঘাম ঝরানোর মাধ্যমে শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি
আদা ও লেবু উভয়ই শরীরের প্রতিরোধব্যবস্থাকে শক্তিশালী করে। আদায় রয়েছে প্রদাহনাশক ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান, আর লেবু সরবরাহ করে ভিটামিন ‘সি’, অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল, অ্যান্টিভাইরাল ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট গুণাগুণ। একসঙ্গে তারা শরীরের প্রাকৃতিক প্রতিরোধ ব্যবস্থা আরও শক্ত করে।
বুক জ্বালায় আরাম
বুকজ্বালায় আদা উপশম দেয়, কারণ এটি হজমনালীকে শান্ত করে এবং প্রদাহ কমায়। যদিও লেবু অ্যাসিডিক প্রকৃতির, তবে অল্প পরিমাণে গ্রহণ করলে এটি হজম এনজাইমের সঙ্গে মিশে অ্যালকালাইন প্রভাব তৈরি করে, যা পাকস্থলীর অতিরিক্ত অ্যাসিড নিরপেক্ষ করতে সাহায্য করে।
সর্দি-কাশিতে উপকার
শীতকালে সর্দি-কাশি বা ফ্লুর মতো সমস্যা হলে আদা-লেবুর চা প্রাকৃতিক প্রতিকার হিসেবে কার্যকর বলে মনে করা হয়। এতে থাকা অ্যান্টিভাইরাল, প্রদাহনাশক ও অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান শ্বাসনালীর বন্ধভাব দূর করে, গলা ব্যথা কমায় ও প্রদাহ হ্রাস করে।
শীত মৌসুমে প্রাচীনকাল থেকেই আদা-লেবুর এই মিশ্রণকে প্রাকৃতিক ওষুধ হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে আসছে। এটি যেমন সুস্বাদু, তেমনি শরীরের রোগপ্রতিরোধে অত্যন্ত উপকারী।