ঋতু পরিবর্তনের প্রভাব পড়ে অনেকের শরীরের ওপর। এ সময়ে শিশুদের শরীরে হানা দিতে পারে ভাইরাস, ব্যাকরিয়া এবং এ থেকে হতে পারে সর্দিজ্বর। তা প্রতিরোধে করণীয় কী, সেটি জানিয়েছেন নর্থ বেঙ্গল মেডিক্যাল কলেজের মেডিসিন বিশেষজ্ঞ জিয়াউল কবির।
তিনি বলেন, ‘এই সময় হাঁচি ও কাশি হয়। সামান্য জ্বরও থাকতে পারে। অনেকে এটাকে করোনা ভেবে ভয় পান, কিন্তু সব ক্ষেত্রে তা নাও হতে পারে।
‘তাই ভয় না পেয়ে সাধারণ সর্দি কাশিতে যা যা করণীয় সেগুলো খেয়াল রাখতে হবে। চলুন জেনে নেই এ সময় কী করতে হবে।’
১. শিশুকে আবহাওয়া অনুযায়ী গরম রাখতে হবে। বেশি কাপড় না পরানো ভালো। এতে শিশু ঘেমে ঠান্ডা বেশি লেগে যেতে পারে।
২. সর্দি বা কাশি থাকলে শিশুকে গরম পানির সঙ্গে লেবু ও চিনি, লবঙ্গ ও মধু মিশিয়ে পাঁচ থেকে ৬ চা চামচ করে দিনে চার থেকে পাঁচবার খাওয়ালে ঠান্ডা কমে যাবে।
৩. অনেক সময় সর্দি হয়ে শিশুর নাক বন্ধ হয়ে যায়। সে ক্ষেত্রে সাধারণ স্যালাইন (খাওয়ার স্যালাইন) ড্রপারের সাহায্যে শিশুর দুই নাকের ছিদ্রে এক ফোঁটা করে দিনে দুই থেকে তিন বার দিন এবং কটন বাড দিয়ে নাক ভালোভাবে পরিষ্কার করে দিন
৪. নিউমোনিয়া একটি মারাত্মক রোগ। আমাদের দেশের শিশুরা সহজেই নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়। সঠিক সময়ে চিকিত্সা না করালে নিউমোনিয়া মারাত্মক রূপ নিতে পারে। তাই শিশুর এ রোগের লক্ষণ দেখা দেয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া ভালো।
৫. এ সময় শিশুকে প্রতিদিন কুসুম গরম পানিতে গোসল করালে ভালো হয়। গোসলের আগে অলিভ অয়েল ব্যবহার করা উপকারী। গোসলের পর বেবি লোশন ব্যবহার করা যেতে পারে। রাতে ঘুমানোর আগে গ্লিসারিনের সঙ্গে পানি মিশিয়ে শিশুর হাত-পায়ে লাগাতে পারেন। এতে শীতে ত্বক ভালো থাকবে।
৬. এই আবহাওয়ায় শিশুদের খাবারের দিকে বিশেষ খেয়াল রাখতে হবে। কারণ ঋতু পরিবর্তনের ফলে ডায়রিয়ার প্রকোপ দেখা দিতে পারে। সেই সঙ্গে ব্যাকটেরিয়া বা ভাইরাস ইনফেকশন থেকে জ্বর হতে পারে। তাই বাইরের ও বাসি খাবার খাওয়ানো উচিত নয়। ঘরে তৈরি হালকা ধরনের খাবার খাওয়াতে হবে।
৭. বেশি করে পানি ও তরলজাতীয় খাবার খাওয়াতে হবে, তবে কোনোভাবেই যেন ঠান্ডা না লেগে যায়। আর ছয় মাসের কম বসসী শিশুদের মায়ের দুধের বিকল্প নেই। আবহাওয়া পরিবর্তনজনিত রোগ সহজেই প্রতিরোধ করা যায়।
৮. শিশুর অভিভাবককে অবশ্যই আবহাওয়ার পরিবর্তন বুঝতে হবে। বেশি গরম অনুভূত হলেও বেশি গতিতে ফ্যান চালানো যাবে না কিংবা শিশুকে সরাসরি ফ্যানের নিচে রাখা যাবে না। আর যেকোনো সমস্যা গুরুতর মনে হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।