বন্দরনগরী চট্টগ্রামে এভারকেয়ার হাসপাতালের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণা করেছে এভারকেয়ার গ্রুপ।
স্বাস্থ্য সেবাখাতের ইতিবাচক রূপান্তরে উদীয়মান অর্থনীতির দেশগুলোতে বিনিয়োগ করে এভারকেয়ার গ্রুপ। তারই ধারাবাহিকতায়, হাসপাতালটি চট্টগ্রামের সর্বপ্রথম মাল্টিস্পেশালিটি টারশিয়ারি কেয়ার হাসপাতাল হিসেবে যাত্রা করল।
এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এভারকেয়ার গ্রুপ জানায়, ২০২১ সালের এপ্রিল মাস থেকে সেবাদান চালু ও কার্যক্রম শুরু করলেও কোভিড-১৯ বৈশ্বিক মহামারির প্রাদুর্ভাবের কারণে হাসপাতালটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হলো এতিদিন পর।
অনুষ্ঠানে উদ্বোধনী কার্যক্রম পরিচালনা করেন টিপিজি গ্রোথের কো-ম্যানেজিং পার্টনার ও এভারকেয়ার গ্রুপের বোর্ড অফ ডিরেক্টরসের চেয়ারম্যান ম্যাথু হোবার্ট; এভারকেয়ার হাসপাতাল বাংলাদেশের চেয়ারম্যান বব কুন্দানমাল এবং এভারকেয়ার গ্রুপের গ্রুপ সিইও ম্যাসিমিলিয়ানো কোলেলা।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি; গেস্ট অফ অনার হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ এবং চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) চেয়ারম্যান আলহাজ্ব এম. জহিরুল আলম দোভাষ।
বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, ‘২০১৯ সালে আমরা যখন চতুর্থবারের মতো সরকার গঠন করি তখন আমাদের প্রতিশ্রুতি ছিল জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সোনার বাংলা স্বপ্নের বাস্তবায়ন, আর এ লক্ষ্যে ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উন্নত দেশে রূপান্তর করা।
উন্নত অর্থনীতির দেশগুলোর মানুষের জন্য বিশ্বসেরা ও গুণগতমানের স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। এক্ষেত্রে, স্বীকৃতিপ্রাপ্ত ও উন্নত সেবা প্রদানে সক্ষম বৈশ্বিক হাসপাতাল চেইন এভারকেয়ার হাসপাতাল চট্টগ্রামের কার্যমক্রমের উদ্বোধন আমাদের লক্ষ্য অর্জনের ক্ষেত্রে মাইলফলক হিসেবে কাজ করবে।’
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, ‘কোভিড-১৯ বৈশ্বিক মহামারির সময় স্বাস্থ্যসেবা খাতে এক অভূতপূর্ব সঙ্কটের তৈরি হয়। বিশ্বজুড়ে আমাদের সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে আমরা সাফল্যের সাথে সে সময়ের প্রতিকূল পরিস্থিতির উত্তরণ ঘটাতে সক্ষম হই। দেশের স্বাস্থ্যসেবা খাতে বিনিয়োগে অগ্রণী ভূমিকা রাখছে এভারকেয়ার গ্রুপ। এখন থেকে চট্টগ্রামের মানুষও উন্নত সেবা পাবেন।’
এভারকেয়ার গ্রুপের বোর্ড অব ডিরেক্টরসের চেয়ারম্যান ও টিপিজি গ্রোথের কো-ম্যানেজিং পার্টনার ম্যাথু হোবার্ট দ্য রাইস ফান্ডের জন্য স্বাস্থ্য সেবাখাতে বিনিয়োগে নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
তিনি বলেন, ‘উদীয়মান বাজারে রূপান্তরে লক্ষ্যে যে বিনিয়োগ করা হয় তা কীভাবে উচ্চ মানসম্পন্ন সেবা প্রদান করতে পারে এবং সবার জন্য স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে ফলপ্রসূ ভূমিকা রাখতে পারে তার অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে এভারকেয়ার হাসপাতাল চট্টগ্রাম। বাংলাদেশে স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের নতুন অধ্যায় শুরু করতে পেরে আমরা গর্বিত।’
অনুষ্ঠানে এভারকেয়ার গ্রুপের গ্রুপ সিইও ম্যাসিমিলিয়ানো কোলেলাসহ আরও অনেকেই বক্তব্য রাখেন।
চট্টগ্রাম এভারকেয়ার হাসপাতাল ৪৭০ শয্যাবিশিষ্ট, রয়েছে সর্বাধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন ২৪/৭ জরুরি বিভাগ, ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট (আইসিইউ), ২৭টি বিশেষ ও উপ-বিশেষ বিভাগ।
হাসপাতালটিতে ২৪/৭ ইন্টারভেনশনাল কার্ডিওলোজি অ্যান্ড কার্ডিয়াক সার্জারি সার্ভিসসহ কম্প্রিহেনসিভ হার্ট সেন্টার একটি মা ও শিশু সেন্টার, একটি নিউরোসায়েন্স সেন্টার, বোন অ্যান্ড জয়েন্টস সেন্টার এবং ডাইজেস্টিভ ডিজর্ডার সেন্টারসহ ১২টিরও বেশি উন্নত মানসম্পন্ন সেন্টার রয়েছে।
চট্টগ্রামের অনন্যা আবাসিক এলাকায় মোট ৪ লাখ ৯২ হাজার বর্গফুট আয়তনের ওপর নির্মিত হয়েছে এভারকেয়ার হাসপাতাল চট্টগ্রাম। এ হাসপাতালটি বাংলাদেশের একমাত্র হাসপাতাল যা হছে ফ্ল্যাগশিপ ফ্যাসিলিটি- এভারকেয়ার হাসপাতাল ঢাকার চেয়েও আয়তনে বড় ও সক্ষমতা বিবেচনায় এগিয়ে রয়েছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানায় গ্রুপটি।
এভারকেয়ার হাসপাতাল বাংলাদেশর চেয়ারম্যান বব কুন্দানমাল বলেন, ‘এভারকেয়ার হাসপাতাল চট্টগ্রাম একটি মাল্টি-স্পেশালিটি হাসপাতাল, যা সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ও বিশ্বমানের মেডিক্যাল প্রফেশনালরা পরিচালনা করে। আমাদের প্রত্যাশা এ হাসপাতাল চট্টগ্রামে ইতিবাচকভাবে সামাজিক পরিবর্তন ত্বরাণ্বিত করবে এবং ভবিষ্যতে স্বাস্থ্য সেবাদানের ক্ষেত্রে নতুন মানদণ্ড তৈরি করবে। চট্টগ্রামের প্রথম হাসপাতাল হিসেবে এটি মেডিক্যাল, সার্জিক্যাল ও রেডিয়েশনসহ ক্যানসার চিকিৎসার সম্পূর্ণ ও সর্বাধুনিক সেবা নিশ্চিত করবে।’