বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

চিকিৎসকদের গ্রামে যেতে হবে: প্রধানমন্ত্রী

  •    
  • ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ১২:৫৫

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘...সবাইকে রাজধানীতেই থাকতে হবে, এটা কিন্তু না। আর এখন যোগাযোগব্যবস্থা যথেষ্ট উন্নত হয়ে গেছে, আমি আশা করি আমাদের ডাক্তাররা আরও মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখবেন।’

দেশের প্রান্তিক পর্যায়ে স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোতে দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসকদের অনুপস্থিত থাকা, দায়িত্ব পালনে উদাসীনতা ও কেন্দ্রমুখী হওয়ার প্রবণতায় চটেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি সাফ বলে দিয়েছেন, গ্রামে গিয়ে ভালো ব্যবহার দিয়ে মানুষের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে হবে চিকিৎসকদের।

স্বাস্থ্য খাতে গবেষণা বাড়ানোর পাশাপাশি অনলাইনে চিকিৎসাসেবা দেয়ার পরিধি আরও বাড়ানোর তাগিদ দিয়েছেন সরকারপ্রধান।

ঢাকার শাহবাগে বুধবার সকালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে তিনি এ কথা বলেন। গণভবন প্রান্ত থেকে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে যুক্ত ছিলেন তিনি।

জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের সংকট তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘ইকুইপমেন্ট দিয়েছি, সব রকমের সুযোগ-সুবিধা দিয়েছি, কিন্তু সেখানে যথাযথ চিকিৎসার ক্ষেত্রে নার্সের অভাব, ডাক্তারের অভাব। এগুলো কিন্তু থাকে। অনেকেই যেতে চায় না। এই সমস্যাটা রয়েছে।

‘কাজেই সবাইকে রাজধানীতেই থাকতে হবে, এটা কিন্তু না। আর এখন যোগাযোগব্যবস্থা যথেষ্ট উন্নত হয়ে গেছে, আমি আশা করি আমাদের ডাক্তার আরও মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখবেন।’

একজন রোগী ওষুধ সেবনের চেয়েও চিকিৎসকের মুখের কথায় আশ্বস্ত হলে রোগ অর্ধেক সেরে যায় বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘কাজেই সে (রোগী) যেন আশ্বস্ত হয়, সে জন্য প্রত্যেক ডাক্তারকে আন্তরিকতার সঙ্গে দেখতে হবে। চিকিৎসকদের সাধারণ ও দরিদ্র মানুষের চিকিৎসায় আরও বেশি আত্মনিয়োগ করার জন্য আমি অনুরোধ জানাই।

‘গ্রামে যেতে হবে। গ্রামের মানুষকে দেখতে হবে। রোগীদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করতে হবে। আপনারা সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করলে সাধারণ মানুষ আপনাদের ওপর আস্থা রাখবে, বিশ্বাস রাখবে, সহজেই চিকিৎসা সেবাটা পাবে।’

বাড়াতে হবে অনলাইন চিকিৎসার পরিধি

উন্নত চিকিৎসার আশায় দেশের গরিব-দুঃখী মানুষের ঢাকা ছুটে আসা ঠেকাতে অনলাইনে চিকিৎসাসেবার পরিসর আরও বাড়ানোর তাগিদ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘এখন ডিজিটাল বাংলাদেশ। অনলাইনেও এখন চিকিৎসা দেয়া যায়। সেই ব্যবস্থাটা আমরা কিছুটা নিয়েছি। সেদিকটা আরও জোরদার করা উচিত। তাহলে সবাইকে ঢাকায় ছুটে আসতে হবে না।

‘এখান থেকে, বিশেষ করে বিএসএমএমইউ থেকে তো ওয়েব ক্যামেরার মাধ্যমে চিকিৎসা উপজেলা পর্যায়ে যাতে পায়, তার ব্যবস্থাটা আমরা করে দিয়েছিলাম। সেটা আরও ভালোভাবে করতে হবে। কোনো সমস্যা হলে ঢাকার বাইরে যারা, তারা যেন ওয়েব ক্যামেরার মাধ্যমে ডিজিটাল পদ্ধতিতে চিকিৎসাসেবাটা নিতে পারে। সেই ব্যবস্থা নেয়ার জন্য আমি অনুরোধ করছি।’

বেসরকারি পর্যায়ে অনেক হাসপাতাল তৈরি হলেও সাধারণ মানুষ সরকারি হাসপাতালের ওপর বেশি নির্ভরশীল বলে মন্তব্য করেন সরকারপ্রধান।

তিনি বলেন, ‘বেসরকারি অনেক সুন্দর, বড় বড় হাসপাতাল রয়েছে। যারা বিত্তশালী তারা সেখানে গিয়ে চিকিৎসা পেতে পারেন। সাধারণ মানুষ কিন্তু আসে সরকারি হাসপাতালে, বিশেষ করে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে। জাতির পিতার নামে, এখানেই বেশি মানুষ আসবে স্বাভাবিক। কাজেই গরিব-দুঃখী মানুষ যেন চিকিৎসাটা উন্নতমানের পেতে পারে, সেদিকে বিশেষভাবে দৃষ্টি দিতে হবে।’

‘স্বাস্থ্য খাতে গবেষণা এখনও অপ্রতুল’

দেশ ও দেশের বাইরে অনেক প্রতিভাবান চিকিৎসক আছেন, তাদের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের মান আরও বাড়ানোর তাগিদ দিয়েছেন সরকারপ্রধান।

তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে আমাদের ডাক্তারদের আরেকটু উদার হতে হবে। দরজা বন্ধ করে রাখলে বাইরের আলো-বাতাস ঢোকে না। বদ্ধ জলাশয় কখনও সুস্বাস্থ্য দিতে পারে না। সে জন্য একটু উন্মুক্ত থাকলে অভিজ্ঞতা সঞ্চয়টা সহজ হয়। সেদিকে একটু বিশেষ দৃষ্টি দেবেন। সেটাই আমি চাই।’

গবেষণার ওপর চিকিৎসকদের মনোযোগী হওয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘স্বাস্থ্য খাতে আমাদের গবেষণা এখনও অপ্রতুল। আমাদের যারা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক রয়েছেন, শুধু চিকিৎসা দিলেই চলবে না; সঙ্গে সঙ্গে গবেষণা করাটা জরুরি। গবেষণা ছাড়া কখনও উৎকর্ষ সাধনা করা যায় না। কাজেই সে ব্যাপারে আপনাদের অনুরোধ করব, আপনারা বিশেষভাবে নজর দেবেন।’

প্রতিটি বিভাগে মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়

বিএসএমএমইউর পর রাজশাহী, চট্টগ্রাম, খুলনা ও সিলেটে আরও চারটি মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশে যে কয়টা বিভাগ আছে, প্রতিটি বিভাগে একটি করে বিশ্ববিদ্যালয় হবে, যেখানে গবেষণা বেশি গুরুত্ব পাবে। সেটাই আমি চাই।’

সরকারের বাস্তবমুখী সিদ্ধান্তের কারণে স্বাস্থ্য খাতে অনেক উন্নতি হয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বেসরকারি মেডিক্যাল ও নবসৃষ্ট সরকারি মেডিক্যাল কলেজগুলোর শিক্ষার মান ও হাসপাতালের সুবিধার দিকে আমাদের বিশেষভাবে দৃষ্টি দিতে হবে। সেবার মান যাতে বাড়ে, তার জন্যও ব্যবস্থা নিতে হবে।’

নার্সিং পেশাকে আরও সম্মানজনক করতে তা ডিপ্লোমা কোর্স থেকে গ্র্যাজুয়েটে উন্নীত করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘নার্সিংয়ে কিন্তু গবেষণার প্রয়োজন। সেখানেও কিন্তু পিএইচডি করতে পারেন তারা। সেদিকে আপনাদের একটু লক্ষ রাখতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘১৪ বছর আমরা ক্ষমতায়। ১৮ হাজার চিকিৎসক আমরা নিয়োগ দিয়েছি। ২০ হাজারের বেশি নার্স নিয়োগ দেয়া হয়েছে। বাংলাদেশে ৪৭ হাজার নার্স মানুষের সেবা দিচ্ছেন।’

এ বিভাগের আরো খবর