প্রতি ৫০০ জন পুরুষের মধ্যে একজন একটি অতিরিক্ত সেক্স ক্রোমোজোম বহন করতে পারে। হতে পারে এটি এক্স বা ওয়াই। তবে তাদের মধ্যে খুব কম সম্ভবতই বিষয়টি জানেন। জেনেটিক্স ইন মেডিসিনে গত ৯ জুন প্রকাশিত এক গবেষণা ফলাফলে উঠে আসে এই তথ্য।
একজন পুরুষের সাধারণত এক্স এবং ওয়াই দুই ধরনের সেক্স ক্রমোজোম থাকে। আর নারীদের দুটি এক্স। এক্স এবং ওয়াই-এর মিলনে ছেলে সন্তান; এক্স এবং এক্সের মিলনে হয় কন্যাসন্তান। তবে যেসব পুরুষের শরীরে বাড়তি সেক্স ক্রোমোজোম থাকে তারা কী সমস্যা বা সুবিধা পায়?
গবেষকরা বলছেন, বাড়তি এক্স ক্রোমোজম থাকাকে বলা হয় ক্লাইনফেল্টার সিনড্রোম (কেএস)। এটি থাকার ফলে কিছুটা স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি হতে পারে। যেসব পুরুষের বাড়তি এক্স ক্রোমোজোম আছে, তাদের প্রজননজনিত সমস্যা আছে। এসব পুরুষের সন্তান না হওয়ার হার এক্সওয়াই ক্রোমোজমধারীর চেয়ে চার গুণ বেশি। তাদের বয়ঃসন্ধি দেরিতে শুরু হওয়ার সম্ভাবনাও তিন গুণ বেশি।
অন্যদিকে বাড়তি ওয়াই ক্রোমোজম থাকাকে বলা হয় ৪৭, এক্সওয়াইওয়াই সিনড্রোম। এটির প্রজননের ওপর কোনো প্রভাব নেই। তবে অতীতের গবেষণা বলছে, এ উপসর্গের সঙ্গে শেখায় প্রতিবন্ধকতা, কথা বলা ও মোটর স্কিল অর্জনে দেরির মতো বিষয়গুলোর যোগসূত্র রয়েছে।
বাড়তি ক্রোমোজোমধারীদের টাইপ টু ডায়াবেটিস, ভেনোস থ্রমবোসিসের (শিরায় রক্ত জমে যাওয়া), ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ-এর (ফুসফুসে বায়ুপ্রবাহকে বাধা দেয়) মতো জটিলতায় আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও বেশি।
'এটা আসলে নিশ্চিত না যে কেন কেএস এবং ৪৭, এক্সওয়াইওয়াই সিনড্রোমের ঝুঁকিগুলো ভিন্ন। এটি জানতে হলে আরও গবেষণার প্রয়োজন।'
গবেষণায় অংশ নেন যুক্তরাজ্যের দুই লাখ ৭ হাজার স্বেচ্ছাসেবক। তাদের বয়স ৪০ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে। সবাই জিনগত ও স্বাস্থ্যবিষয়ক ডেটাবেইস ইউকে বায়োব্যাংকের সদস্য এবং সাধারণের চেয়ে বেশি সুস্বাস্থ্যের অধিকারী।
গবেষণায় দেখা গেছে, অংশগ্রহণকারীদের ২১৩ জনের একটি বাড়তি এক্স ক্রোমোজোম ও ১৪৩ জনের একটি বাড়তি ওয়াই ক্রোমোজম রয়েছে।
তাদের মধ্যে খুব কম সংখ্যকেরই ক্রোমোজমজনিত জটিলতা আছে। যাদের ক্রোমোজম এক্স এক্স ওয়াই, তাদের মধ্যে কেবল ২৩ শতাংশের এ ধরনের কোনো সমস্যা ছিল। আর এক্স ওয়াই ওয়াই ক্রোমোজমধারীদের মাত্র ০.৭ শতাংশ সংশ্লিষ্ট কোনো সমস্যায় ভুগছেন।
অর্থাৎ ০.১৭ শতাংশের বাড়তি সেক্স ক্রোমোজম পাওয়া গেছে। এ হার প্রতি ৫৮০ জনে একজন। গবেষকরা বলছে, সাধারণ জনসংখ্যার ক্ষেত্রে এ হার কিছুটা কম হতে পারে। যেমন ‘প্রতি ৫০০ জনে একজন’ হতে পারে।
কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিক্যাল রিসার্চ কাউন্সিল (এমআরসি) এপিডেমিওলজি ইউনিটের পেডিয়াট্রিক এন্ডোক্রিনোলজিস্ট এবং গবেষণার সহসিনিয়র লেখক কেন ওং বলেন, ‘এটি কতটা সাধারণ তা দেখে আমরা অবাক হয়েছি। এটি বেশ বিরল বলে মনে করা হয়েছিল।’