বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ওষুধ বন্ধ করে ঝুঁকিতে উচ্চ রক্তচাপের রোগী

  •    
  • ১৭ মে, ২০২২ ০৮:১০

মাঝ পথে ওষুধ সেবন বন্ধ করে দেয়ায় মৃত্যুর ঝুঁকি বাড়ছে। একই সঙ্গে হৃদরোগ, স্ট্রোক ও কিডনি রোগে আক্রান্তের ঝুঁকি বেড়ে যাচ্ছে। এখনই এ বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করা না হলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে। রোগটি সম্পর্কে জনসচেতনতা বাড়াতে সারা বিশ্বের মতো আজ বাংলাদেশে বিশ্ব উচ্চ রক্তচাপ দিবস পালিত হচ্ছে।

করোনা মহামারির মধ্যে দেশে উচ্চ রক্তচাপের রোগী বেড়েই চলেছে। এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে যারা মারা গেছেন তাদের অর্ধেকের বেশি উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত ছিলেন।

উদ্বেগের আরও একটি বিষয় উঠে এসেছে একটি জরিপে যে, এই রোগে আক্রান্তদের আজীবন ওষুধ সেবন করতে হলেও আক্রান্তের ৩১ শতাংশ রোগীই মাঝপথে এসে ওষুধ সেবন বন্ধ করে দিচ্ছেন।

সম্প্রতি ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্স ইনস্টিটিউট এই জরিপ চালিয়েছে। মাঝপথে ওষুধ সেবন বন্ধ রাখছেন- এমন সাড়ে ৬ হাজার রোগীর সাক্ষাৎকার নিয়েছে তারা।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও প্রতিষ্ঠানটির তথ্য বলছে, বর্তমানে দেশের ৫ শতাংশ মানুষ অসংক্রামক এ রোগে ভুগছেন। এই রোগে আক্রান্তে ঝুঁকিতে রয়েছেন ২১ শতাংশ।

যারা আক্রান্ত তাদের একটি বড় অংশ নিয়মিত ওষুধ সেবন করে না। রোগীর সেবা ও ওষুধ নিশ্চিতে সরকারের উদ্যোগে ৮০টি উপজেলায় এই রোগের ওষুধ বিনা মূল্যে দেয়া হচ্ছে। তবে ৩১ শতাংশ রোগী নিয়মিত ওষুধ নিতে আসেন না।

কারণ জানতে সাড়ে ৬ হাজার রোগীকে ফোন করা হয়। ৮০ শতাংশের উত্তর ছিল টাকার অভাব ও দূরত্বের কারণে জেলা শহরে এসে এই রোগের বিনা মূল্যে দেয়া ওষুধও গ্রহণ করছেন না।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মাঝপথে ওষুধ সেবন বন্ধ করে দেয়ায় মৃত্যুর ঝুঁকি বাড়ছে। একই সঙ্গে হৃদরোগ, স্ট্রোক ও কিডনি রোগে আক্রান্তের ঝুঁকি বেড়ে যাচ্ছে। এখনই এ বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করা না হলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে।

আরও উদ্বেগের বিষয় আক্রান্তের ৫০ শতাংশ মানুষ জানেনই না তিনি উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত। আবার অসচেতনতার কারণে অনেকে আক্রান্ত হচ্ছেন।

এমন পরিস্থিতিতে রোগটি সম্পর্কে জনসচেতনতা বাড়াতে সারা বিশ্বের মতো আজ বাংলাদেশে বিশ্ব উচ্চ রক্তচাপ দিবস পালিত হচ্ছে। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য ‘মেজার ইয়োর ব্লাড প্রেশার অ্যাকিউরেটলি, কন্ট্রোল ইট, লিভ লঙ্গার। অর্থাৎ উচ্চ রক্তচাপ: সঠিকভাবে পরিমাপ করুন, নিয়ন্ত্রণে রাখুন, দীর্ঘদিন বাঁচুন।’

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, দেশে প্রতি পাঁচজনে একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ উচ্চ রক্তচাপে ভুগছেন। এই রোগ অসংক্রামক রোগের প্রকোপ ক্রমে বাড়িয়ে তুলছে। এটি নিয়ন্ত্রণে সরকারি উদ্যোগে উপজেলা পর্যায়ে বিনা মূল্যে ওষুধ সরবরাহের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

প্রাথমিক পর্যায়ে ৮০টি উপজেলায় বিনা মূল্যে এই ওষুধ সরবরাহ করা হচ্ছে। আগামী বছরের মধ্যে ২০০ উপজেলায় এবং ২০২৪ সালে ৪০০ উপজেলায় এর আওতা বাড়ানো হবে। প্রথম পর্যায়ে উপজেলায় দেয়া হলেও ভবিষ্যতে প্রান্তিক পর্যায়ে কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে ওষুধ সরবরাহ করা হবে।

করোনায় আক্রান্তের ৪০ শতাংশ উচ্চ রক্তচাপের রোগী

সারা দেশে সাড়ে ১৯ লাখ মানুষ করোনা আক্রান্ত হয়েছে বেশির ভাগেরই শরীরে আগে থেকে অন্য রোগ ছিল। এর ৪০ শতাংশই উচ্চ রক্তচাপের রোগী ছিলেন বলেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের কভিড-১৯ সম্পর্কিত টেলিহেলথ সেন্টার মাধ্যমে এই তথ্য জানানো হয়।

টেলিহেলথ সেন্টারের তথ্যানুযায়ী, বাকি ডায়াবেটিসে, অ্যাজমা, হার্টের সমস্যা, কিডনির সমস্যায় ভুগছেন। করোনা আক্রান্তদের মধ্যে যাদের অন্য রোগ বা কো-মরবিডিটি ছিলেন তারাই বেশি মারা গেছেন।

ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্স ইনস্টিটিউটের উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির প্রোগ্রাম ম্যানেজার মাহফুজুর রহমান ভূঁইয়া নিউজবাংলাকে বলেন, ‘উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ বিনামূল্য দিলেও নিয়মিত এই ওষুধ নিতে যাচ্ছেন না রোগীরা। এ বিষয়ে মানুষকে সচেতন করতে হবে। প্রাথমিক পর্যায়ে এই রোগ শনাক্ত হলে প্রতিরোধ করা সম্ভব। এই কারণে নিজ উদ্যোগে ১৮ বছর বয়স হলে বছর দুই-একবার পরীক্ষা করতে হবে। শনাক্ত হলে নিয়ম মেনে জীবনযাপন করতে হবে। মোবাইলে আসক্ত না হলে কায়িক পরিশ্রম করতে হবে।’

শিশুরাও উচ্চ রক্তচাপের রোগী

বেসরকারি সংস্থা প্রজ্ঞার ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার শামীম জোয়ার্দ্দার বলেন, ‘আগে শুধু এই রোগটি বয়স্ক মানুষের মধ্যে সংক্রমিত হলেও সম্প্রতি শিশুদের মধ্যেও এই রোগের প্রকোপ দেখা দিচ্ছে। সম্প্রতি ১৫ বছরের একটি শিশু ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের চিকিৎসা নেয়ার জন্য এসেছে। তাই এখন থেকে এটি প্রতিরোধে জোর দিতে হবে। তাই ১৮ বছর বয়স হলে প্রতিনিয়ত ব্লাড পেশার মাপবেন। ছয় মাস এক বছরের মধ্যে একবার মাপলে হবে না।’

এ বিভাগের আরো খবর