বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

আসছে না এসএমএস, মিলছে না টিকা  

  •    
  • ২২ আগস্ট, ২০২১ ২৩:০৯

করোনার টিকার অপেক্ষায় সিলেট নগরের ৮৬ হাজার বাসিন্দা। অনলাইনে নিবন্ধন করেও এসএমএস পাচ্ছেন না তারা। অনেকের নিবন্ধনের একমাসের বেশি সময় পেরিয়ে গেছে। তবু আসেনি এসএমএস। আবার নিবন্ধনের অ্যাপের সমস্যার কারণে অনেকে টিকা কার্ড প্রিন্টও দিতে পারেননি।

জুলাইয়ের মাঝামাঝিতে করোনাভাইরাসের টিকার জন্য অনলাইনে নিবন্ধন করেছিলেন সিলেট নগরের আমিনা খাতুন। নিবন্ধনের পর এক মাসের বেশি সময় পেরিয়ে গেছে। এখনও টিকা গ্রহণের তারিখ জানিয়ে ক্ষুদেবার্তা পাননি।

হতাশ আমিনা রোববার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘টিকার জন্য নিবন্ধন করলাম একমাস আগে। এখনও এসএমএস পেলাম না। বিষয়টি খুবই হতাশার। সরকার সবাইকে টিকা নিতে বলছে। অথচ নিবন্ধন করেও টিকা পাচ্ছি না। এখন তো প্রথম ডোজ দেয়া বন্ধই হয়ে গেছে। কবে যে আর টিকা পাব এ নিয়েই অনিশ্চয়তায় আছি।’

আমেনা বেগমের মতো অপেক্ষায় আছেন সিলেট নগরের ৮৬ হাজার বাসিন্দা। অনলাইনে নিবন্ধন করেও এসএমএস পাচ্ছেন না তারা। অনেকের নিবন্ধনের একমাসের বেশি সময় পেরিয়ে গেছে। তবু আসেনি এসএমএস। আবার নিবন্ধনের অ্যাপের সমস্যার কারণে অনেকে টিকা কার্ড প্রিন্টও দিতে পারেননি।

৩ আগস্ট টিকার জন্য নিবন্ধন করেন সিলেট জেলা জজ কোর্টের আইনজীবী স্নিগ্ধা পাল। এরপর থেকে প্রায় প্রতিদিন একাধিকবার চেষ্টা করেও অ্যাপ থেকে টিকা কার্ড বের করতে পারছেন না তিনি।

স্নিগ্ধা বলেন, ‘টিকা কার্ড ডাউনলোড করার জন্য প্রতিদিনই একাধিকবার ‘সুরক্ষা’ অ্যাপে ঢুকি। কিন্তু প্রতিবারই ব্যর্থ হই। অনুগ্রহপূর্বক কিছুক্ষণ পর আবার চেষ্টা করুন’- এমন লেখা উঠে। এনিয়ে একেবারে বিরক্ত হয়ে উঠেছি।’

সিলেট নগরে টিকা কার্যক্রম ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকা সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক) কর্মকর্তারা বলছেন, একসঙ্গে অনেক লোক করোনা ভ্যাকসিনের জন্য নিবন্ধন করায় সবাইকে এসএমএস পাঠানো এখনও সম্ভব হয়নি। অনেকগুলো আবেদন এখনো জমে আছে। টিকা সংকটের কারণে ১৫ আগস্ট থেকে গণটিকা কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। পুনরায় টিকা কার্যক্রম শুরু না হলে যারা নিবন্ধন করেছেন তাদের এসএমএস দেয়া হবে না।

একসাথে অনেক মানুষ টিকার অ্যাপে ঢোকার কারণে টিকা কার্ড ডাউনলোডে সমস্যা হতে পারে বলেও জানিয়েছেন তারা।

মর্ডানার টিকার ডোজ বন্ধ হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন সিলেটের প্রবাসীরাও। ১৩ আগস্ট থেকে সিলেটে মর্ডানার টিকার প্রথম ডোজ বন্ধ রয়েছে। এতে প্রবাসী অ্যাপের মাধ্যমে নিবন্ধন করা সিলেটের ২ হাজার ৭৬২ বিদেশ যাত্রী শঙ্কায় রয়েছেন।

গত ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে সারা দেশের সঙ্গে সিলেটেও গণটিকাদান শুরু হয়। কয়েক ধাপে কমানো হয় টিকা নিবন্ধনের বয়সসীমাও।

প্রথমদিকে টিকা নিতে মানুষের তেমন আগ্রহ না থাকলেও, করোনার প্রকোপ বাড়তে থাকায় টিকার জন্য হুমড়ি খেয়ে পড়ছে সবাই। নিবন্ধনকারীর সংখ্যাও বাড়ছে। বহু মানুষ টিকার জন্য নিবন্ধন করায় গত ৭, ৮ ও ৯ আগস্ট সিলেটের প্রতিটি ওয়ার্ডে গণটিকা ক্যাম্পেইন চালিয়েও কমানো যাচ্ছে না টিকা গ্রহিতাদের চাপ।

নগরের শেখঘাট এলাকার বাসিন্দা মো. ইফতেখারুল আলম শান্ত। তারও নিবন্ধন করার একমাস পেরিয়েছে। এখনও পাননি এসএমএস।

তিনি জানান, গত ১৯ জুলাই টিকা নেয়ার জন্য রেজিস্ট্রেশন করেন। এখনো কোনো এসএমএস আসেনি। এমনকি সিলেট নগরে তিনদিনের গণটিকাদান ক্যাম্পেইনে গিয়েও টিকা গ্রহণ করতে পারিনি।

আগামী মাসে পোলেন্ডে যাবেন নগরের ১২ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা বিক্রম সিং। গত ১৯ জুলাই তিনি টিকার জন্য নিবন্ধন করেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত টিকা গ্রহণের তারিখ জানিয়ে এসএমএস পাননি। এদিকে এখন মর্ডানার প্রথম ডোজ দেয়াও বন্ধ হয়ে গেছে।

বিক্রম বলেন, ‘ওইসব দেশে মর্ডানা ছাড়া অন্য কোনো টিকা গ্রহণযোগ্য নয়। অথচ সিলেটে এখন মর্ডানার টিকার প্রথম ডোজ দেয়া বন্ধ রয়েছে। এ ছাড়া আমার ফেরত যাওয়ার সময় চলে এসেছে। অথচ এখন পর্যন্ত প্রথম ডোজ নিতে পারিনি।’

নিবন্ধনের পর তারিখ জানিয়ে ক্ষুদেবার্তা না পাওয়া প্রসঙ্গে সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘নগরীতে বর্তমানে ৮৬ হাজারেরও বেশি মানুষ নিবন্ধন করেছে। এ ছাড়া প্রতিদিনই নতুন করে নিবন্ধন হচ্ছে। অথচ আমরা প্রতিদিন টিকা দিতে পারতাম গড়ে হাজারখানেক। এ কারণে অনেক নিবন্ধন জমে গেছে। এসএমএস পাঠানো যায়নি। আর এখন তো টিকা সংকটের কারণে গণটিকা কার্যক্রম বন্ধ আছে। এই কার্যক্রম আবার শুরু না হলে কাউকেই এসএমএস দেয়া হবে না।’

ডা. জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘টিকা নিবন্ধনের বয়স কমিয়ে আনার পর থেকেই ব্যাপকহারে টিকার নিবন্ধন হচ্ছে। নিবন্ধনের তালিকা অনেক লম্বা হচ্ছে। আমাদের দৈনিক ৬০০ জনকে এসএমএস দেয়ার সক্ষমতা থাকলেও নিবন্ধন হয় অনেক বেশি। এ কারণে দ্রুত এসএমএস দেয়া সম্ভব হয় না। এসএমএস আসতে একটু দেরি হচ্ছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘নগরে যে পরিমাণ বাসিন্দা রয়েছেন কেবল তাদের টিকা দিতে হলে আমাদের টিকার কোনো সংকট হতো না। নগরের বাইরের বাসিন্দারা এখানে টিকা নেয়ার আবেদন করছেন। ফলে জট লেগে যাচ্ছে। সরকারের পক্ষ থেকেও বলা হচ্ছে যেখানে আবেদন করবেন তাকে সেখানে টিকা দিতে হবে। কিন্তু যে পরিমাণ আবেদন হচ্ছে সে পরিমান সরবরাহ নেই। ফলে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে।’

এ বিভাগের আরো খবর