ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ (মমেক) হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ২১০ শয্যার বিপরীতে রোগী ভর্তি আছেন ৫৮০ জন। মেঝেতেও রোগী রাখার জায়গা দিতে হিমশিম খাচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। আর ২২ শয্যার আইসিইউ সবগুলো রোগীতে পরিপূর্ণ।
করোনা ইউনিটে ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত রোগী ভর্তি থাকায় ‘বেড খালি নেই’ লিখে হাসপাতালের সামনে ব্যানার টাঙিয়ে দেয়া হয়েছে। এতে অনেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাসায় ফিরে যাচ্ছেন।
হাসপাতালের করোনা ইউনিটের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (ফোকাল পারসন) মহিউদ্দিন খান মুন বলেন, ময়মনসিংহ বিভাগের চার জেলা ছাড়াও কিশোরগঞ্জ, টাঙ্গাইল, গাজীপুর, সুনামগঞ্জ থেকেও রোগীরা ভর্তির জন্য আসছেন। এতে হাসপাতালের চিকিৎসকসহ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ওপর চাপ বাড়ছে। বেড খালি না থাকায় বাধ্য হয়েই অনেককে ফেরত পাঠানো হচ্ছে। তবে যাদের অবস্থা গুরুতর তাদের ভর্তি করা হচ্ছে। বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসা ও পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘রোগীকে হাসপাতালে আনা হয় দেরি করে বা গুরুতর অবস্থায়। রোগী বাড়িতে দীর্ঘদিন উপসর্গে ভুগলেও সময়মতো তার করোনা শনাক্তের পরীক্ষা করা হয় না। ফলে হাসপাতালে রোগ অনুযায়ী চিকিৎসা শুরুর আগেই রোগী মারা যায়। আবার কোনো কোনো রোগীর মৃত্যু হয়েছে করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট আসার আগেই।’
ময়মনসিংহ বিভাগের চার জেলা ছাড়াও কিশোরগঞ্জ, টাঙ্গাইল, গাজীপুর, সুনামগঞ্জ থেকেও রোগীরা ভর্তির জন্য আসছেন। ছবি: নিউজবাংলা
ডা. মহিউদ্দিন খান মুন বলেন, ‘বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় ২৩ দিন ও ১৩ দিন বয়সী দুই নবজাতক নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। তাদের নমুনা পরীক্ষা করে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। তবে দুজনই সুস্থ আছে। এ পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত ১০ জন নবজাতককে আমরা চিকিৎসা দিয়েছি।’
এ বিষয়ে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সহকারী পরিচালক (প্রশাসন) ডা. জাকিউল ইসলাম বলেন, ‘বেশির ভাগ বয়স্ক রোগী করোনার উপসর্গ কিংবা আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হচ্ছেন। তাদের মধ্যে অনেক রোগী অ্যাজমাসহ নানা জটিল রোগে আক্রান্ত। ফলে করোনার ধকল সামলাতে পারছেন না। ভর্তি হওয়ার এক থেকে দুই ঘণ্টার মধ্যে অনেকের শ্বাসকষ্ট প্রবল হয়ে উঠছে। এ জন্য চিকিৎসা দেয়ার আগেই মারা যাচ্ছেন তারা।’
এদিকে এই হাসপাতালে গত ২৪ ঘণ্টায় ২১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ৬ জন করোনা শনাক্ত হয়ে, বাকিরা উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৬৮ জন।
সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ময়মনসিংহ জেলায় নতুন করে ১ হাজার ৫৬৩টি নমুনা পরীক্ষা করে ৩১৬ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। করোনায় আক্রান্তের হার ২০ দশমিক ২১ শতাংশ।