ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে সেন্ট্রাল অক্সিজেনব্যবস্থা না থাকায় করোনা রোগীদের চিকিৎসা ব্যাহত হচ্ছে। তীব্র শ্বাসকষ্টের রোগীদের জীবনের ঝুঁকি না নিয়ে বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। এতে রোগী ও স্বজনদের অতিরিক্ত খরচের পাশাপাশি পোহাতে হচ্ছে সীমাহীন দুর্ভোগ।
অক্সিজেন সরবরাহের ঘাটতি মেটাতে গত বছরের ২৫ নভেম্বর ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে সেন্ট্রাল অক্সিজেনব্যবস্থা স্থাপনের কাজ শুরু হয়। ১০০ শয্যার এই হাসপাতালে ৩ কোটি ২৯ লাখ টাকা ব্যয়ে সেন্ট্রাল অক্সিজেন প্ল্যান্টের কাজটি পায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এক্সপেক্টা ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড।
অক্সিজেন প্ল্যান্টের নির্মাণকাজ চলতি বছরের মার্চের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা ছিল। তবে নির্ধারিত সময়ের পর চার মাস পেরিয়ে গেলেও অর্ধেক কাজ শেষ করতে পেরেছে প্রতিষ্ঠানটি।
প্রতিষ্ঠানটি এক বছরে নির্মাণ করেছে ৬ হাজার লিটার ধারণক্ষমতার অক্সিজেন ট্যাংক। আর ধীরগতিতে চলছে পাইপ স্থাপনের কাজ। কাজ অসম্পূর্ণ থাকায় প্ল্যান্টটিতে সরবরাহ করা যাচ্ছে না অক্সিজেন। ফলে সিলিন্ডার দিয়েই করোনা রোগীদের অক্সিজেন সরবরাহ করা হচ্ছে।
এই হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে থাকা করোনা রোগীর স্বজন আমির উদ্দিন বলেন, ‘সেন্ট্রাল অক্সিজেন না থাকায় অতিরিক্ত শ্বাসকষ্টের অনেক রোগীকেই বরিশাল যেতে বলা হচ্ছে।’
আরেক রোগীর স্ত্রী শিমুল আক্তার বলেন, ‘আমার রোগীর জন্য হাসপাতালের বাইরে থেকে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের মাধ্যমে অক্সিজেন সিলিন্ডার এনেছি।’
হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীর স্বজনরা অভিযোগ করেন, এ হাসপাতালের সাধারণ ওয়ার্ডে করোনা উপসর্গ নিয়ে ভর্তি থাকা রোগীর র্যাপিড টেস্টের রিপোর্ট পজিটিভ না আসা পর্যন্ত সেই রোগীর বেডে অক্সিজেন সিলন্ডার দেয়া হয় না।
ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের কনসালটেন্ট আবুয়াল হাসান বলেন, ‘সেন্ট্রাল অক্সিজেন না থাকায় চিকিৎসাসেবা কিছুটা ব্যাহত হচ্ছে।’
এ বিষয়ে সিভিল সার্জন রতন কুমার ঢালী বলেন, ‘এই প্ল্যান্টে অক্সিজেন উৎপাদন চালু না থাকায় প্রতিদিন বরিশাল থেকে ২০টি বড় আকারের সিলিন্ডারে অক্সিজেন ভরে আনতে হচ্ছে। এ ছাড়া ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কাজ শেষ করার জন্য বারবার তাগিদ দেয়া হচ্ছে। কাজের ধীরগতির বিষয়টি স্থানীয় স্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগকেও জানানো হয়েছে।’
এ ব্যাপারে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এক্সপেক্টা ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডের সহকারী ঠিকাদার গোলাম মোর্শেদ বলেন, ‘এরই মধ্যে ৬ হাজার লিটার ধারণক্ষমতার অক্সিজেন ট্যাংক নির্মাণ করা হয়েছে। ১০ হাজার ৪৩৪ লিটার ধারণক্ষমতার এই প্ল্যান্টের নির্মাণকাজ শিগগিরই শেষ হবে। এরপর ট্যাংকটিতে একবার লিকুইড ভরা হলে তা থেকে উৎপাদিত অক্সিজেন ১০০ জন রোগী তিন মাস পর্যন্ত ব্যবহার করতে পারবেন।’