করোনা ও উপসর্গ নিয়ে ফরিদপুরে ২১ জন, ময়মনসিংহে ১৭ জন, রাজশাহীতে ১৬, বরিশালে ১৩, খুলনায় ১১, সাতক্ষীরায় ৯ ও চট্টগ্রামে ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে।
শুক্রবার সকাল ৮টা থেকে শনিবার সকাল ৮টার মধ্যে তাদের মৃত্যু হয়।
ফরিদপুর
জেলা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক সাইফুর রহমান জানান, এক দিনে এ হাসপাতালে ২১ জনের মৃত্যু হয়েছে। যার মধ্যে ১৬ জন শনাক্ত হয়ে ও ৫ জন উপসর্গ নিয়ে। এখন পর্যন্ত আইসিইউতে ১৫ জনসহ মোট ৪০৬ জন রোগী এই হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
এক দিনে এ জেলায় ৩০৫ জনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়।
ময়মনসিংহ
ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ৮ জন করোনা শনাক্ত হয়ে ও বাকি ৯ জন উপসর্গ নিয়ে মারা যান। এ ছাড়া এ সময়ের মধ্যে ৫৩ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন।
হাসপাতালের করোনা ইউনিটের ফোকাল পার্সন মহিউদ্দিন খান মুন জানান, বর্তমানে এই হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ৪৩৯ জন চিকিৎসা নিচ্ছেন। এর মধ্যে আইসিইউতে ভর্তি আছেন ২২ জন। নতুন করে ভর্তি হয়েছেন ৭৮ জন।
জেলা সিভিল সার্জন নজরুল ইসলাম জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ৪৩৬টি নমুনা পরীক্ষা করে ১০৮ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। জেলায় আক্রান্তের হার ২৪ দশমিক ৭৭ শতাংশ।
রাজশাহীরাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের করোনা ইউনিটে করোনা শনাক্ত হয়ে ৮ জন ও উপসর্গে ৮ জন মারা গেছেন। উপসর্গ নিয়ে মৃত ব্যক্তিদের মধ্যে করোনা নেগেটিভ হওয়ার পরও ২ জনের মৃত্যু হয়েছে।রামেক হাসপাতালের পরিচালক শামীম ইয়াজদানী জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় রামেকে মারা যাওয়া ১৬ জনের মধ্যে রাজশাহীর ৯ জন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের ২, পাবনার ৩, নাটোর ও কুষ্টিয়ার ১ জন করে। মৃত ব্যক্তিদের মধ্যে পুরুষ ১৪ জন ও নারী ২ জন।এ নিয়ে চলতি মাসের ১৭ দিনে রামেক হাসপাতালের করোনা ইউনিটে মোট ২৯৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে করোনা পজেটিভ ৯৬ জন আর উপসর্গ নিয়ে ২০২ জনের মৃত্যু হয়।করোনা ইউনিটে নতুন রোগী ভর্তি হয়েছেন ৬৬ জন। আর এই সময়ে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন ২৭ জন। বর্তমানে রামেক হাসপাতালের করোনা ইউনিটের ৪৫৪টি শয্যার বিপরীতে রোগী ভর্তি আছেন ৫২৭ জন।
রাজশাহী সিভিল সার্জনের তথ্য অনুযায়ী, শুক্রবার রাজশাহীতে ৭৭৬ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ১৬৩ জনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়। শনাক্তের হার ১৯ দশমিক ৫৯ ভাগ।
বরিশাল
বরিশাল বিভাগে এক দিনে করোনায় ৪ জন ও উপসর্গ নিয়ে ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে।
এই নিয়ে বরিশাল বিভাগে করোনায় মোট মৃত্যুর সংখ্যা ৩৭৭ জনে দাঁড়িয়েছে। এক দিনে মৃত ব্যক্তিদের মধ্যে ১২ জন বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক বাসুদেব কুমার দাস জানান, এ বিভাগে নতুন করে ১৫৬ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন। এর মধ্যে বরিশালে শনাক্তের সংখ্যা ১০৪ জন, পটুয়াখালীতে ১০, ভোলায় ৩৮, বরগুনায় ১ ও ঝালকাঠিতে ৩ জন।
শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ৩০০ শয্যাবিশিষ্ট করোনা ইউনিটে শনিবার ২৫৩ জন ভর্তি রয়েছেন, যার মধ্যে ৮৪ জন করোনা পজিটিভ। এক দিনে এই ইউনিটে ৩৫ নতুন রোগী ভর্তি হয়েছেন।
খুলনা
খুলনায় ২ হাসপাতালে ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে খুলনা করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালে ৭ জন ও গাজী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ৪ জন।
ডেডিকেটেড হাসপাতালের ফোকাল পার্সন সুহাস রঞ্জন হালদার জানান, এ হাসপাতালে মৃত ব্যক্তিদের মধ্যে করোনা নিয়ে ৬ ও উপসর্গ নিয়ে ১ জন মারা গেছেন। শনাক্ত হয়ে মৃত ব্যক্তিদের মধ্যে খুলনার ৫ জন ও নড়াইলে ১ জন।
এ ছাড়া এ হাসপাতালে ২০০ রোগী ভর্তি রয়েছেন। যার মধ্যে রেড জোনে ১৩৬ জন, ইয়ালো জোনে ২৪ জন, এইচডিইউতে ২০ ও আইসিইউতে ২০ জন। নতুন রোগী ভর্তি হয়েছেন ২৮ জন। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ২৯ জন।
গাজী মেডিক্যালের স্বত্বাধিকারী গাজী মিজানুর রহমান জানান, এই হাসপাতালে মৃত ৪ জনের মধ্য খুলনার ২ এবং যশোর ও নড়াইলে ১ জন করে। হাসপাতালে ১০৩ জন রোগী ভর্তি রয়েছেন। এর মধ্যে আইসিইউতে ৮ জন। এক দিনে নতুন রোগী ভর্তি হয়েছেন ১৯ জন। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ২০ জন।
জেলা জেনারেল হাসপাতালের মুখপাত্র আবু রাশেদ জানান, এ হাসপাতালে মৃত্যু নেই। তবে হাসপাতালে মোট রোগী রয়েছেন ৫৬ জন। নতুন ভর্তি হয়েছেন ৯ জন; বাড়ি ফিরেছেন ১৩ জন।
আবু নাসের হাসপাতালের মুখপাত্র প্রকাশ দেব নাথ জানান, এই হাসপাতালেও মৃত্যু নেই। ৫৬ জন রোগী ভর্তি, যার মধ্যে আইসিইউতে ১০ জন। এখানে নতুন ভর্তি হয়েছেন ১ জন; বাড়ি ফিরেছেন ২ জন।
সাতক্ষীরা
সাতক্ষীরা মেডিক্যাল কলেজ (সামেক) হাসপাতালে ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে জেলায় ১৬ জুলাই পর্যন্ত করোনার উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন ৪৫৮ জন। পাশাপাশি করোনায় মারা গেছেন ৮০ জন।
গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ৫৪ জন।
শুক্রবার এ হাসপাতালের পিসিআর ল্যাব ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১৭৫টি নমুনা পরীক্ষায় ৩৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়। শনাক্তের হার ১৮ দশমিক ৮৬ শতাংশ।
সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের মেডিক্যাল কর্মকর্তা জয়ন্ত কুমার সরকার জানান, এ পর্যন্ত সাতক্ষীরায় করোনা রোগীর সংখ্যা ৪ হাজার ৮২৫ জন। সুস্থ হয়েছেন ৩ হাজার ৫৩৭ জন।
বর্তমানে করোনা রোগী রয়েছেন ১ হাজার ২০৮ জন। হাসপাতালে ভর্তি করোনা রোগীর সংখ্যা ৩৪ জন। এদের মধ্যে সামেক হাসপাতালে ২৬ জন ও বেসরকারি হাসপাতালে ৮ জন ভর্তি আছেন।
হোম আইসোলেশনে আছেন ১ হাজার ১৭১ জন। উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছেন ৩২৮ জন। এর মধ্যে সরকারি হাসপাতালে ভর্তি ২৭৪ জন ও বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি ৮১ জন।
চট্টগ্রাম
চট্টগ্রামে নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৬০০ জন। এই সময়ে মারা গেছেন ৫ জন।
জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, কক্সবাজারের একটি ও চট্টগ্রামের ৯টি ল্যাবে ১ হাজার ৯৫৭ নমুনা ও এন্টিজেন পরীক্ষা করে ৬০০ জনের শরীরে করোনার উপস্থিতি পাওয়া গেছে।
এর মধ্যে ৪৪৭ জন শহরের এবং ১৫৩ জন উপজেলার বাসিন্দা। এ নিয়ে চট্টগ্রামে মোট আক্রান্ত হয়েছেন ৬৯ হাজার ৯৫৭ জন।
এক দিনে জেলায় করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৫ জন। এর মধ্যে ৩ জন মহানগর ও বাকি ২ জন উপজেলার বাসিন্দা। এ নিয়ে চট্টগ্রামে মোট মারা গেছেন ৮২৪ জন।