সেবার মানসিকতা নেই উল্লেখ করে চিকিৎসকদের সমালোচনা করেছেন গণস্বাস্থ্যকেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
তিনি বলেন, ‘মেডিক্যালে যারা আসেন তাদের সঙ্গে সেবার অনেকেরই কোনো সম্পর্ক নেই। তাই সে এ পেশাকে কখনো মনে করে ধান্ধা।’
এই পরিস্থিতি পাল্টাতে মেডিক্যাল শিক্ষাব্যবস্থায় পরিবর্তন আনার তাগিদও দেন। নিজের প্রতিষ্ঠানের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘প্রতিমূহুর্তে তাদের সঙ্গে শিক্ষক থাকেন। সে দরিদ্র মানুষের রূপ নিজের চোখে দেখে।’
বৃহস্পতিবার ধানমন্ডির গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেট নিয়ে এক আলোচনায় তিনি এমন মন্তব্য করেন।
আলোচনায় স্বাস্থ্য খাত নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
তিনি বলেন, ‘স্বাস্থ্য খাতে অর্থ বরাদ্দ বাড়িয়ে লাভ হবে না, যদি না কতগুলো মৌলিক পরিবর্তন আনা যায়। মৌলিক পরিবর্তনটা হলো, আজকে বাংলাদেশে যদি বিল্ডিংয়ের দিক দিয়ে পরিমাপ করা হতো, আমার মনে হয়, আমরা নোবেল প্রাইজ পেয়ে যেতাম।
‘আমাদের প্রায় ১৫ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক আছে, আট হাজার ইউনিয়ন হেলথ কেয়ার সেন্টার আছে, সাড়ে পাঁচ শ উপজেলায় আছে। বিল্ডিং আর বিল্ডিং আছে। কিন্তু দুর্ভাগ্য যেখানে সেটা হলো, চিকিৎসকের উপস্থিতি নেই। এ জন্য চিন্তা করতে হবে কেন চিকিৎসক নেই?’
জাফরুল্লাহ বলেন, ‘একটা ইউনিয়ন সেন্টারে পাঁচজন ডাক্তার, ১০ জন নার্স অন্যান্য বাড়িঘর তৈরি করতে খরচ হবে প্রায় সাড়ে পাঁচ কোটি টাকা। সেখানে যে যন্ত্রপাতি থাকবে, তা নিয়ে ৫০ রকমের পরীক্ষা করা যাবে। এই টাকা আমাদের বাজেটে এই হেরফেরই করা যায় সম্ভব।’
বাজেট নিয়ে মূল্যায়নে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের আলোচনায় বক্তারা
স্বাস্থ্য খাতে এই পরিবর্তনটা না এলে ঢাকার শাসন আর ইসলামাবাদের শাসনের খুব বেশি পার্থক্য নেই বলেও মনে করেন তিনি।
সরকার স্বাস্থ্য খাতের চেয়ে জনপ্রশাসনকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন জাফরুল্লাহ।
তিনি বলেন, ‘আমলারা বিনা ভোটের সরকারকে ক্ষমতায় এনেছে বলে তাদের তো খুশি রাখতে হয়। সচেতন নাগরিক হিসেবে আমি মনে করি যে এটা কমিয়ে আনা উচিত।’
একই সঙ্গে প্রতিরক্ষা বাজেট জিডিপির ৬ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৩ শতাংশ করে বাড়তি টাকা সামাজিক নিরাপত্তা খাতে ব্যয় করার তাগিদ দেন তিনি।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা হোসেন জিল্লুর রহমান, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল বাসদের খালেকুজ্জামান, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়দ সাকি, ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নূরও এ সময় বক্তব্য রাখেন।